• প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result
No Result
View All Result
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result

চামড়া শিল্প: সংকটে আবর্তিত সম্ভাবনা

আশীষ মাহমুদ

skalyanad by skalyanad
জুলাই ২৭, ২০২২
in আর্কাইভ, প্রবন্ধ/নিবন্ধ
0
চামড়া শিল্প: সংকটে আবর্তিত সম্ভাবনা
0
SHARES
0
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

১
অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের মূল শক্তি বিপুল পরিমাণ শ্রমশক্তি। যারা দেশে পোশাক শিল্পে এবং প্রবাসে শ্রমশক্তি হিসেবে নিয়োজিত থেকে অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক কিংবা খনিজ সম্পদে ভরপুর নয়। আবার যতটুকু ছোটখাটো সম্ভাবনা রয়েছে সেই সম্ভাবনা কারিগরি ও প্রযুক্তিগত দুর্বলতার কারণে মাঠেই মারা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশকে যে সব খাত সামনের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পোশাক শিল্প। পোশাক শিল্পের পরপরই ছিল চামড়া শিল্প। কিন্তু গত ২০১৩ সালের পর থেকে চামড়া শিল্প প্রতিনিয়ত সংকটে আবর্তিত হচ্ছে। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বেই দিন দিন চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বেড়ে চলছে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের চামড়া শিল্প সংকটে আবর্তিত হতে পারে এটি কল্পনার অতীত। কেননা বিশ্ব বিখ্যাত ফরাসিদের ‘ফেঞ্চ কাফের’ চামড়ার পর মানের দিক থেকে বাংলাদেশের চামড়ার অবস্থান। পোশাক শিল্প এখন যেমন একটু গুছানো পরিকল্পনা নেওয়ার কারণে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্রান্ডে পরিণত হয়েছে। ঠিক তেমনি চামড়া শিল্প নিয়ে সুষ্ঠু ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করা গেলে এই শিল্প আগামী দিনে পোশাক শিল্পকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপিতে চামড়া খাতের অবদান অপরিসীম। এই শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৯ লাখ মানুষ জড়িত। দেশে প্রায় ২৩০ টি ট্যানারি রয়েছে।১ চামড়া শিল্পে প্রচুর শ্রমশক্তির প্রয়োজন পড়ে। বাংলাদেশে শ্রমশক্তির সংকট নেই। এটি আশার দিক। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দেশের বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী গুরুত্বপূর্ণ খাত। দেশের মোট রফতানির মধ্যে চামড়া খাতের অবদান ৪%। যা দেশের মোট জিডিপির ০.৫%। বিশ্বব্যাপী চামড়া, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা খাত খুব দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। ২০১০ সালে সারাবিশ্বে পাদুকার উৎপাদন ছিল ১৭.৯ বিলিয়ন যা ২০১৬ সালে ২১ বিলিয়নে পৌঁছায়। ২০১৭ সালে এ খাতের মোট বৈশ্বিক বাজারের আকার ছিল ১৩৯.৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।২ ২০১৬ সালে পাদুকা উৎপাদনে ছিল অষ্টম। বাংলাদেশের ট্যানারি থেকে প্রক্রিয়াজাত চামড়ার ৭৬% রফতানি করা হয়। এই রফতানি আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

২
বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের সংকট শুরু ২০১৩ সালে। এই সময় থেকে চামড়া শিল্প ক্রমান্বয়ে অবনতির দিকে যাচ্ছে। যেখানে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে আয় ছিল ১২৫৮.৮২ মিলিয়ন ডলার সেখানে ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করে বার্ষিক আয়। ২০১৮-১৯ এ খাতের আয় ছিল ১০১৯.৭৮ মিলিয়ন ডলার এবং ২০১৯-২০ অর্থ বছরে তা আরও কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৭৯৭.৬১ মিলিয়ন ডলারে। মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে ট্যানারি কারখানা ঢাকার হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে রাজধানীর সাভারের সন্নিকটে হেমায়েতপুরে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে নতুন কারখানা নির্মাণ শুরু করতে যথেষ্ঠ কালক্ষেপণ করা হয়। ফলে নতুন জায়গায় এই সম্ভাবনাময় শিল্পটি পুনরায় উঠে দাঁড়াতে একটি দীর্ঘ সময় নিয়ে ফেলে। এই সময়ের মধ্যে বিশ্ব বাজারের ক্রেতার চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হয় এই দেশের ট্যানারি গুলো। নিজেদের ব্যবসা চলমান রাখতে বিদেশি ক্রেতারা নতুন নতুন মার্কেট খুঁজে নেয়। ফলে হাতছাড়া এই দেশের বহুসংখ্যক বিদেশি ক্রেতা। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারার জন্য ২০১৭ সাল থেকে দেশের চামড়া ব্যবসায়ীদের নিয়মিত লোকসান গুনতে হচ্ছে। যে গরুর চামড়া ২০১৩ সালে ছিল প্রতি বর্গফুট ৮৫-৯০ টাকা। সে চামড়ার দর পতন হতে হতে গিয়ে ২০২১ সালে গিয়ে ঠেকেছে প্রতি বর্গফুট ৩০-৩৫ টাকায়। বাংলাদেশে কাচা চামড়ার বৃহৎ যোগান আসে ঈদুল আজহা তথা কুরবানির ঈদ থেকে। গত বছর সরকার প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম ৪৫ টাকা বেঁধে দিলেও ক্রেতার সন্ধান পাওয়া যায়নি। দেশের অনেক জায়গায় সাধারণ মানুষ এই মূল্যবান চামড়াটি মাটিতে পুঁতে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন।

বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের সংকট শুরু ২০১৩ সালে। এই সময় থেকে চামড়া শিল্প ক্রমান্বয়ে অবনতির দিকে যাচ্ছে। যেখানে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে আয় ছিল ১২৫৮.৮২ মিলিয়ন ডলার সেখানে ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করে বার্ষিক আয়। ২০১৮-১৯ এ খাতের আয় ছিল ১০১৯.৭৮ মিলিয়ন ডলার এবং ২০১৯-২০ অর্থ বছরে তা আরও কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৭৯৭.৬১ মিলিয়ন ডলারে। মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে ট্যানারি কারখানা ঢাকার হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে রাজধানীর সাভারের সন্নিকটে হেমায়েতপুরে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে নতুন কারখানা নির্মাণ শুরু করতে যথেষ্ঠ কালক্ষেপণ করা হয়। ফলে নতুন জায়গায় এই সম্ভাবনাময় শিল্পটি পুনরায় উঠে দাঁড়াতে একটি দীর্ঘ সময় নিয়ে ফেলে। এই সময়ের মধ্যে বিশ্ব বাজারের ক্রেতার চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হয় এই দেশের ট্যানারি গুলো। নিজেদের ব্যবসা চলমান রাখতে বিদেশি ক্রেতারা নতুন নতুন মার্কেট খুঁজে নেয়। ফলে হাতছাড়া এই দেশের বহুসংখ্যক বিদেশি ক্রেতা।

বাংলাদেশ শিল্প সংকট মোকাবিলায় পারদর্শী না। নিকট অতীতে এই দেশ থেকে এক সময়ের সোনালী আশ পাট শিল্প নিঃস্ব হয়ে গেছে। ২০২০ সালে সরকার লোকসানের অজুহাতে ২৬টি রাষ্ট্রীয় পাটকল ও একই বছরে ৬টি চিনি কল বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ দেশে ও বিদেশে পাট শিল্পের প্রসার বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিনিয়ত আমাদেরকে চিনি আমদানি করতে হচ্ছে। একটু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও কাঙ্ক্ষিত পরিকল্পনাই পারতো এই দুটি শিল্পকে রক্ষা করতে। আজকে যদি চামড়া শিল্পের ক্ষেত্রে সরকার একই দুর্বলতার পরিচয় দেয় তাহলে আরও একটি সম্ভাবনাময় শিল্পের মৃত্য ঘটবে।

মোটা দাগে চামড়া শিল্পের ক্রমাবনতির ছয়টি কারণ বিশেষজ্ঞরা চিহ্নিত করেছেন;
১.২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল হাজারীবাগ সথেকে ট্যানারি শিল্প অবকাঠামোগতভাবে অপ্রস্তুত সাভারের ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে স্থানান্তর শুরু হলে স্থানান্তরিত শিল্প-কারখানাগুলো পুনরায় পুরোদমে উৎপাদনে যেতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এই উৎপাদন দীর্ঘসূত্রতায় অনেক বিদেশি ক্রেতা হারানোর পাশাপাশি দেশীয় চাহিদা পূরণে আমদানি নির্ভরতাও বেড়ে যায়।
২.চামড়ার মান রক্ষা না করা, ঠিক পদ্ধতিতে চামড়া না ছাড়ানো, অনুপযুক্ত উপায়ে পরিবহন ও সংরক্ষণ এবং সরবরাহ শৃঙ্খলের বিভিন্ন ধাপে সমস্যা থাকায় দেশীয় চামড়া রফতানিযোগ্য মান অর্জন করতে পারছে না।
৩.ঈদুল আজহায় এক শ্রেণির ব্যবসায়ী চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করে নিজেদের কাছে অতিরিক্ত সময় রাখার ফলে চামড়ার গুণগত মান নষ্ট করে ফেলে ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি মান হ্রাস পায়।
৪.চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত কেমিক্যালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চামড়ার প্রক্রিয়াজাতকরণ খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার মূল্য হ্রাস এবং দেশীয় চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের খরচ তুলনামূলক বেশি হওয়ায় বিশ্ববাজারে চামড়া শিল্পের রফতানি আয় হ্রাস পাচ্ছে।
৫.বাংলাদেশের প্রক্রিয়াজাত করা চামড়ার অন্যতম আমদানিকারক দেশ চীন। লেদার পণ্যের পাশাপাশি সিনথেটিক এবং ফেব্রিক পণ্য উৎপাদনে বিশে^র একক বৃহত্তম দেশ চীন বর্তমানে আগের মতো বাংলাদেশ থেকে চামড়া আমদানি করছে না। পাশাপাশি তুলনামূলক কম দামে ও সুরুচিসম্মত হওয়ায় সিনথেটিক এবং ফেব্রিক দ্বারা উৎপাদিত জুতা, ব্যাগ, মানিব্যাগ, বেল্ট, জ্যাকেট ইত্যাদি পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে চামড়াজাত ওই পণ্যের চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে।
৬.দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী গুরুত্বপূর্ণ খাত হওয়া সত্ত্বেও চামড়া শিল্প পোশাক শিল্পের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ায় এই খাত থেকে কাক্সিক্ষত রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না।৩

৩
চামড়া শিল্প এই দেশে অবহেলিত। অথচ সম্ভাবনাময় এই শিল্পটি অধিক গুরুত্বের দাবিদার। দেশে পোশাক শিল্পকে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় ঠিক একই ভাবে চামড়া শিল্পকে গুরুত্ব দিলে পোশাক শিল্পের থেকে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হতো। তবে এই মুহূর্তে সংকটে থাকা চামড়া শিল্প বাঁচাতে ও এর সম্ভাবনা বিকাশের জন্য সরকারি হস্তক্ষেপ যেমন জরুরি ঠিক অনুরূপভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠিত শিল্প মালিকদের এগিয়ে আসতে হবে। চামড়া শিল্পকে এগিয়ে নিতে শুধুমাত্র ঈদুল আজহার আগে পরে কথা বললে হবে না। সরকার এই শিল্পকে বিকাশের জন্য ‘চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন নীতিমালা ২০১৯’ প্রণয়ন করেছে। চামড়া শিল্প ছড়িয়ে দিতে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে চামড়া শিল্পনগরী স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। শুধু উদ্যোগ নিলে হবে না। উদ্যোগ দ্রুত কার্যকর করতে হবে। চামড়া শিল্পের বিকাশের জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। বিশেষত ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহযোগিতা, চামড়া শিল্পনগরীর অবকাঠামোর দ্রুত আধুনিকায়ন, প্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরির জন্য আরও লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউট স্থাপনসহ দেশে চামড়া শিল্পের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

চামড়া শিল্পের প্রধান ও একমাত্র মৌসুম হচ্ছে ঈদুল আজহার সময়। এই সময়ে তৃণমূল পর্যায় হতে চামড়া সংগ্রহের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিনা সুদে ঋণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি। যেন প্রতিটি চামড়া ব্যবসায়ী পর্যাপ্ত মূলধন হাতে নিয়ে সহজে চামড়া সংগ্রহ করতে পারে। চামড়া সংগ্রহের পর প্রধান কাজ হচ্ছে সুষ্ঠুভাবে কাচা চামড়া সংরক্ষণ করা। এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত লবণের যোগান নিশ্চিত করা হবে। চামড়া শিল্পের কেমিক্যালের মূল্য স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখতে হবে। দেশের উপজেলা পর্যায়ে কাচা চামড়া সংরক্ষণের জন্য মিনি সংরক্ষণাগার তৈরি করতে হবে। এই দেশের চামড়া যেন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পাচার হতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

বিশ^বাজারে নতুন নতুন ক্রেতা তৈরির জন্য বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তার আগে দেশের উৎপাদিত চামড়ার মান বিশ্বমানের করার জন্য সরকার, ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে। ট্যানারি কারখানাগুলো যেন গ্রাহক দেশ সমূহের পরিবেশ নীতিমালা মেনে কারখানা পরিচালনা করে এই ব্যাপারে জোর দিতে হবে। চামড়ার মান নিশ্চিত করা গেলে হারানো গ্রাহক ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে। অন্যান্য রফতানি শিল্পের আরেকটি বড়ো সমস্যা হচ্ছে রফতানির বিপরীতে পাওনা টাকা অনেক সময় পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে সরকারকে উদ্যোগী হয়ে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

চামড়া শিল্প এই দেশে অবহেলিত। অথচ সম্ভাবনাময় এই শিল্পটি অধিক গুরুত্বের দাবিদার। দেশে পোশাক শিল্পকে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় ঠিক একই ভাবে চামড়া শিল্পকে গুরুত্ব দিলে পোশাক শিল্পের থেকে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হতো। তবে এই মুহূর্তে সংকটে থাকা চামড়া শিল্প বাঁচাতে ও এর সম্ভাবনা বিকাশের জন্য সরকারি হস্তক্ষেপ যেমন জরুরি ঠিক অনুরূপভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠিত শিল্প মালিকদের এগিয়ে আসতে হবে। চামড়া শিল্পকে এগিয়ে নিতে শুধুমাত্র ঈদুল আজহার আগে পরে কথা বললে হবে না। সরকার এই শিল্পকে বিকাশের জন্য ‘চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন নীতিমালা ২০১৯’ প্রণয়ন করেছে। চামড়া শিল্প ছড়িয়ে দিতে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে চামড়া শিল্পনগরী স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। শুধু উদ্যোগ নিলে হবে না। উদ্যোগ দ্রুত কার্যকর করতে হবে। চামড়া শিল্পের বিকাশের জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। বিশেষত ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহযোগিতা, চামড়া শিল্পনগরীর অবকাঠামোর দ্রুত আধুনিকায়ন, প্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরির জন্য আরও লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউট স্থাপনসহ দেশে চামড়া শিল্পের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

শুধু চামড়া রফতানি করে কাক্সিক্ষত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব না। তাই দেশীয় বড়ো বড়ো চামড়া শিল্পের মালিকদের চামড়াজাত পণ্য তৈরির দিকে মনোযোগ দিতে হবে। চামড়াজাত পণ্যের বাজার সৃষ্টির জন্য ইউরোপসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী চামড়ার ব্রান্ড ইমেজ তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে পরিকল্পিত মাকের্টিং এর বিকল্প নেই।

দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার বিকাশে প্রতিটি শিল্প সমান গুরুত্বের দাবিদার। তবে যেখানে আমাদের দেশে শিল্প খাত অত্যন্ত সীমিত সেখানে এই প্রত্যেকটি খাতকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকার, ব্যবসায়ী ও শিল্পের সাথে জড়িত অংশীজনদের সম্পৃক্ত রাখা জরুরি। আরও মনে রাখা জরুরি বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে রকেটের গতিতে আমাদের এখন আর মান্দাতার আমলের চিন্তা নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না। এগিয়ে যেতে হবে বুদ্ধিভিত্তিক চিন্তা ও কর্ম নিয়ে।

৪
সম্ভাবনাময় চামড়া খাতের উন্নয়নে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ তুলে ধরা হলো:
১.সাভারের হেমায়েতপুরে স্থাপিত বিসিক ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ককে বিসিকের অধীনে না রেখে এটিকে আন্তর্জাতিক মানের ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিবিড় অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা এবং একটি পৃথক কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালনা করা।
২.চামড়ার মান রক্ষা করতে চামড়া ছাড়ানো, সংগ্রহ ও সংরক্ষণের উপর নির্মিত তথ্যবহুল বিজ্ঞাপন গণমাধ্যমে প্রচার করে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
৩.ঈদুল আজহার সময় যথাযথভাবে চামড়া সংরক্ষণের জন্য উপজেলা পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা করা।
৪.চামড়া জাতীয় পণ্যের বিকল্প পণ্যগুলোর আমদানি সীমিত করতে বাড়তি শুল্ক আরোপ করা।
৫.চামড়া শিল্পে ব্যবহৃত কেমিক্যালের (ক্রোমিয়াম, লেড) ব্যবহার হ্রাস করার জন্য বিকল্প পরিবেশবান্ধব উপায় বের করা এবং এই শিল্পে ব্যবহৃত কেমিকেল আমদানি না করে দেশীয় কারখানায় উৎপাদনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৬.রফতানিমুখী চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী কারখানাগুলোকে প্রক্রিয়াজাতকৃত চামড়া সংগ্রহের ক্ষেত্রে দেশীয় ট্যানারি থেকে সংগ্রহের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা।
৭.বিদেশি ক্রেতা ফিরিয়ে আনতে বাড়তি সুবিধা ঘোষণা করা এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা।
৮.হাজারীবাগের মতো সাভারে ট্যানারির সলিড ওয়েস্ট ব্যবহার করে উপজাত পণ্য উপযোগী ছোট ছোট শিল্প স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি করা।
৯.ঈদুল আজহার সময় চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন ও তাদেরকে নতুনভাবে ঋণ সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
১০.বহির্বিশ্বে চামড়ার নতুন নতুন বাজার সৃষ্টিতে পররাষ্ট্র, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও সম্বনয় সাধন করা।
১১.ঈদুল আজহার সময় চামড়া পাচার রোধ করা, চামড়া সংগ্রহে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের বাধা এবং চামড়া নিয়ে সকল গুজব প্রতিহত করা।৪

তথ্যসূত্র
১.‘চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য নীতিমালা ২০১৯’, শিল্প মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গেজেট।
২.‘ছয় কারণে চামড়া শিল্প সংকটে’, জোনায়েদ মানসুর, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ, ২৬ জুলাই ২০২১।
৩.‘সংকটে চামড়া শিল্প’, সাঈদ শিপন, জেষ্ঠ প্রতিবেদক, জাগো নিউজ, ২০ জুলাই ২০২১
৪.বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও অংশীজনদের সাক্ষাৎকার এবং বিভিন্ন দেশীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিষ্ট

Previous Post

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে : শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

Next Post

ইসলামে শ্রমিকের প্রতি আচরণ ও অধিকার

Next Post
ইসলামে শ্রমিকের প্রতি আচরণ ও অধিকার

ইসলামে শ্রমিকের প্রতি আচরণ ও অধিকার

সর্বশেষ সংযোজন

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

by skalyanad
এপ্রিল ১৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমজীবী ভাইবোনদের মাঝে ইসলামের সুমহান আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে। আসন্ন...

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

by skalyanad
এপ্রিল ৮, ২০২৪
0

দেশে ও প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ, দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।...

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

by skalyanad
মার্চ ২৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষরা সর্বক্ষেত্রে অধিকার বঞ্চিত। তাদের অধিকার আদায়ের...

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৭, ২০২৪
0

আসন্ন ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধে যে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে তা নিরসনের জন্য রাষ্ট্র ও মালিকদের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করার...

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৬, ২০২৪
0

এদেশের শ্রমজীবী মানুষের সস্ত্রশ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনেছে। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ শ্রমজীবী মানুষরা পায়নি। রাজনৈতিক বিভেদ স্বাধীনতাকে...

  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
  • সাংগঠনিক কাঠামো
  • শাখা সংগঠন
  • ট্রেড ইউনিয়ন
  • সংবাদ
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
  • প্রকাশনা
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
  • যোগাযোগ

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.

Design and Developed by Bijoylab IT| Contact:+01818 650864
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.