• প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result
No Result
View All Result
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result

অধীনস্থদের সাথে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর অনুপম আচরণ

এডভোকেট আতিকুর রহমান

skalyanad by skalyanad
জুলাই ১৫, ২০২৩
in আর্কাইভ, গ্যালারি, ছবি, প্রবন্ধ/নিবন্ধ
0
অধীনস্থদের সাথে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর অনুপম আচরণ
0
SHARES
0
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

বৈচিত্র্যময় এ পৃথিবীতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সকল মানুষকে সমান আর্থিক সামর্থ্য দিয়ে সৃষ্টি করেননি। কাউকে সম্পদশালী বানিয়েছেন আবার কাউকে করেছেন একদম নিঃস্ব। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ধনী-গরিবের বিভেদ এজন্য করেননি যে, ধনীরা তার সম্পদের অহংকার প্রদর্শন করবে আর দরিদ্ররা এজন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি অভিযোগের আঙ্গুল উঠাবে। মূলত এটি হচ্ছে ধনীদের জন্য আল্লাহর নির্দেশ পালন ও মানুষের অধিকার আদায়ের পরীক্ষা আর গরিবের জন্য ধৈর্য ও সহ্য-সহিষ্ণুতার পরীক্ষা। মহান আল্লাহ বলেন, “আর চোখ তুলেও তাকাবে না দুনিয়াবী জীবনের শান-শওকতের দিকে, যা আমি এদের মধ্য থেকে বিভিন্ন ধরনের লোকদেরকে দিয়ে রেখেছি। এসব তো আমি এদেরকে পরীক্ষার মুখোমুখি করার জন্য দিয়েছি এবং তোমার রবের দেওয়া হালাল রিযিকই উত্তম ও স্থায়ী।” (সুরা ত্বাহা: ১৩১) আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরও বলেন, “তোমার রবের রহমত কি এরা বণ্টন করে? দুনিয়ার জীবনে এদের মধ্যে জীবন-যাপনের উপায়-উপকরণ আমি বণ্টন করেছি এবং এদের মধ্যে কিছু লোককে অপর কিছু লোকের ওপর অনেক বেশি মর্যাদা দিয়েছি, যাতে এরা একে অপরের সেবা গ্রহণ করতে পারে।” (সুরা যুখরুফ: ৩১)

দুনিয়ার জীবনের সামগ্রিক কার্যক্রম সুন্দরভাবে সম্পাদন করতে হলে সব শ্রেণি পেশার মানুষের প্রয়োজন রয়েছে। পৃথিবীতে কোনো মানুষ এ দাবি করতে পারে না আমি সব দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ফলে প্রত্যেক মানুষকেই অন্যের মুখাপেক্ষী থাকতে হয়। যার ফলে মালিক ও শ্রমিক শ্রেণির সৃষ্টি। শ্রমিককে যেমন তার আর্থিক অস্বচ্ছলতা দূর করার জন্য অন্যের অধীনে কাজ করতে হয় তেমনি সামর্থ্যবান মানুষদের নানামুখী প্রয়োজন ও কার্য সম্পাদনে শ্রমিকের মুখোমুখি হতে হয়।

ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে অধীনস্থ শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকের সম্পর্ক, আচার-আচরণ কি রকম হবে সে সম্পর্কে সুন্দর নীতিমালা পেশ করেছে। ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিক ও মালিকের পারস্পরিক সম্পর্ক ভৃত্য-মনিবের সম্পর্ক নয়। ইসলামে শ্রমিক ও মালিকের সম্পর্ক ভ্রাতৃত্বের ও সাহায্যকারীর। নিজের পরম আত্মীয়ের মতোই অধীনস্থ শ্রমিক, চাকর-চাকরানীর সাথে আন্তরিকতাপূর্ণ আচরণ করা, পরিবারের সদস্যদের মতই তাদের আপ্যায়ন করা, শ্রমিকের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার প্রতিটি মুহূর্তের প্রতি মালিকের খেয়াল রাখা এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা বিবেচনা করাকে ইসলাম মালিকের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে শামিল করেছে।

ইসলাম শ্রমিকদের ব্যাপারে মালিক ও নিয়োগকর্তাদের অত্যন্ত ন্যায়ভিত্তিক, সহানুভূতিপূর্ণ এবং সৌভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ক বজায় রাখার তাগিদ দিয়েছে বার বার। শ্রমিক নির্যাতন নৈতিক, ধর্মীয় এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। ইসলাম এ ব্যাপারে মানুষকে বারবার অত্যন্ত কঠোরভাবে সতর্ক করে দিয়েছে যেন প্রত্যেকে নিজ নিজ অধীনস্থদের সাথে ভালো ব্যবহার করে এবং তাদের উপর কোন প্রকার যুলুম-নির্যাতন না করে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুমিনদের নির্দেশ দিয়েছেন, “তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, তাঁর সাথে আর কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করো না, পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার করো, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, দরিদ্র, নিকট প্রতিবেশী, দূরের প্রতিবেশী, ভ্রমনের সহযাত্রী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাসদাসীর সাথে সদয় আচরণ করো। নিশ্চয় আল্লাহ দাম্ভিক, গর্বিত ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না।” (সুরা নিসা: ৩৬)। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার প্রিয় নবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “তোমার অনুসারী বিশ্বাসীদের প্রতি তুমি সদয় হও।” (সুরা শুআরা: ২১৫)। “মুমিনদের জন্য তুমি তোমার বাহুকে অবনমিত রাখ।” (সুরা হিজর: ৮৮)। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, “নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয়-স্বজনকে দানের নির্দেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসৎকাজ ও সীমালঙ্ঘন করা হতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন; যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।” (সুরা নাহল: ৯০)।

রাসুল (সা.) ছিলেন উত্তম চরিত্রের সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত। রাসুল (সা.) প্রেরিত হয়েছিলেন হেদায়াতের আলোকবর্তিকা নিয়ে। এসেছিলেন একটি সুন্দর পৃথিবী গড়তে। ইসলামের এমন কোনো বিধি-বিধান নেই যা তিনি আমাদেরকে শিক্ষা দেননি। ছোট-বড়ো সব বিষয়ে পরম যত্ন ও ভালোবাসা দিয়ে শিক্ষা দিয়ে গেছেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) যা বলেছেন, তিনি নিজে ছিলেন তার সবচেয়ে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি নামাযের কথা বলেছেন আর তার নামায ছিল সবচেয়ে সুন্দর ও আকর্ষণীয়। তিনি রোযার কথা বলেছেন আর তার রোযা ছিল সবচেয়ে সুন্দর ও আমলে পরিপূর্ণ। তিনি হজের কথা বলেছেন তার হজই ছিল সবচেয়ে সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ। তিনি দান সদকার কথা বলেছেন আর দান সাদাকার ক্ষেত্রে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে অগ্রগামী। তিনি সুন্দর আচরণের কথা বলেছেন, তার আচরণই ছিল সবচেয়ে সুন্দর ও অনুকরণীয়। রাসুল (সা.) এর জীবনের এ সকল বৈশিষ্ট্যের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় মহান আল্লাহর সাক্ষ্য এবং তাদের সাক্ষ্য যারা রাসুল (সা.) এর একান্ত নিকটজন ছিলেন এবং রাসুল (সা.) এর ভেতর বাহির যাদের সামনে স্পষ্ট ছিল। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার প্রিয় রাসুল (সা.) সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলেন, “নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।” (সুরা আল-কলম: ০৪)।

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) কে জিজ্ঞাসা করা হল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্বভাব-চরিত্র কেমন ছিল? তিনি বললেন, “তার চরিত্র ছিল কুরআন।” তিনি ছিলেন কুরআনের বাস্তব রূপ। হযরত আনাস (রা.) কে তার মা রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে এই বলে রেখে গিয়েছিলেন যে, এই আমার ছেলে। সে আপনার কাছে থাকুক। আপনার কাছে থেকে সে দ্বীন শিখবে। আর ছোটখাট কাজ করে দেবে। হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, “আল্লাহর রাসুল (সা.) ছিলেন সবচেয়ে সুন্দর আখলাকের অধিকারী। আমি ১০ বছর নবী (সা.) এর খিদমত করেছি। কিন্তু তিনি কখনো আমার প্রতি উহ্! শব্দটি করেননি। এ কথা জিজ্ঞেস করেননি, তুমি এ কাজ কেন করলে এবং কেন করলে না?” (সহিহ বুখারি: ৬০৩৮)

রাসুল (সা.) কে প্রেরণ করা হয়েছে মহান চরিত্র দিয়ে। কারও প্রতি তিনি কোনো বিদ্বেষ রাখতেন না। ভুল হলে পরম যত্নের সঙ্গে বুঝিয়ে দিতেন প্রিয় সাহাবিকে। এক হাদিসে এসেছে তিনি তার প্রিয় সাহাবি হযরত আনাস বিন মালিককে (রা.) বলেছেন, “হে আমার বৎস! তোমার পক্ষে যদি সম্ভব হয় তুমি সকাল-সন্ধ্যা এমন অবস্থায় অতিবাহিত করবে যে, তোমার অন্তরে কারও প্রতি বিদ্বেষ নেই, তাহলে তাই কর। কারণ এটি আমার সুন্নাহ। আর যে আমার সুন্নাহকে উজ্জীবিত করে সেই মূলত আমাকে ভালোবাসে। আর যে আমাকে ভালোবাসে সে আমার সঙ্গে জান্নাতে থাকবে।” (সহিহ তিরমিজি: ২৬৭৮)।

অধীনস্থদের ব্যাপারে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট প্রত্যেক মানুষকেই জিজ্ঞাসিত হতে হবে। এ প্রসঙ্গে হযরত ইবন উমর (রা.) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা প্রত্যেকেই রাখাল বা রক্ষণাবেক্ষণকারী স্বরূপ এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে। শাসক তার লোকজনের রাখাল স্বরূপ, তাকে তার শাসিতদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। গৃহকর্তা তার গৃহবাসীর রাখাল স্বরূপ, তাকে তার গৃহবাসীদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে। দাস তার মনিবের সম্পদাদির রাখাল স্বরূপ, তাকে তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। মনে রাখবে, তোমাদের প্রত্যেকেই (কোন না কোনভাবে) রাখাল স্বরূপ এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” (সহিহ বুখারি: ২৫৫৮)। রাসুলুল্লাহ (সা.) অধীনস্থদের নিজেদের ভাই হিসেবে উল্লেখ করে তাদের অধিকারের ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তাদের উপর অতিরিক্ত কাজের বোঝা চাপিয়ে দিতেও নিষেধ করেছেন।

অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, মারূর ইবনু সুওয়াদা (রহ) বলেন, একবার আমি আবুজর গিফারি (রা.)-এর দেখা পেলাম। তার গায়ে তখন এক জোড়া কাপড় আর তার ক্রীতদাসের গায়েও (অনুরূপ) এক জোড়া কাপড় ছিল। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, একবার এক ব্যক্তিকে আমি গালি দিয়েছিলাম। সে নবী (সা.) এর কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করল। তখন নবীজি (সা.) আমাকে বললেন, তুমি তার মার প্রতি কটাক্ষ করে লজ্জা দিলে? তারপর তিনি বললেন তোমাদের গোলামেরা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করেছেন, কাজেই কারও ভাই যদি তার অধীনে থাকে তবে সে যা খায়, তা হতে যেন তাকে খেতে দেয় এবং সে যা পরিধান করে, তা হতে যেন পরিধান করায় এবং তাদের সাধ্যাতীত কোনো কাজে বাধ্য না করে। তোমরা যদি তাদের শক্তির ঊর্ধ্বে কোনো কাজ তাদের দাও তবে তাদের সহযোগিতা কর। (সহিহ বুখারি: ৬০৫০)।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, “যে চায় তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করা হোক এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হোক তার মৃত্যু যেন এমন অবস্থায় আসে যে, সে আল্লাহর প্রতি এবং শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে। আর মানুষের সঙ্গে তেমন আচরণ করে যেমন আচরণ পেতে সে পছন্দ করে।” (সহিহ মুসলিম: ১৮৪৪)।

প্রিয় নবী (সা.) এর অন্য এক বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, হযরত জায়েদ (রা.) সারা জীবন রাসুল (সা.) কাছে এমনভাবে ছিলেন মনে হতো যেন সে প্রিয় নবীর পুত্র। জায়েদ প্রিয় নবীর পুত্রের মতো আদর যত্নে বড় হয়েছেন। প্রাণঢালা স্নেহ পেয়েছেন প্রিয় নবীর কাছ থেকে। বড়ো হলে রাসুল (সা.) জায়েদ কে আপন চাচাতো বোন জয়নবের সাথে বিয়ে দিলেন। পরিবারের একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় করে নিলেন জায়েদকে। জায়েদ ক্রীতদাস হিসেবে এসেছিলেন প্রিয় নবী (সা.) এর সংসারে। কিন্তু একবারও মনে করলেন না সে কথা। প্রিয় নবী (সা.) জায়েদের ছেলে উসামাকে খুব আদর করতেন। মনে হতো নাতি ইমাম হাসান ও হোসাইনের মতোই আপন।

আমাদের সমাজের অনেক মানুষদের দেখা যায় তারা তাদের অধীনস্থ চাকর-চাকরানীদের সাথে খারাপ ব্যবহার তো করেই সাথে সাথে তাদের বিভিন্নভাবে প্রহার করে, যা আদিম যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়ে দেয়। নুন থেকে চুন খসলেই সেবক ও অধীনস্থদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে, গায়ে হাত তুলে বসে। রাসুল (সা.) কখনো অধীনস্তদের সাথে এ ধরনের আচরণ করেননি। রাসুল (সা.) এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা.) বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো কোনো সেবককে এবং কোনো নারীকে মারধর করেননি।” (আবু দাউদ: ৪৭৮৬)। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, “রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে স্বীয় চাকর-চাকরানীকে প্রহার করবে, কেয়ামত দিন তাকে তার পরিণাম দেওয়া হবে।” (বায়হাকি, শোয়াবুল ঈমান)। হযরত কাব ইবনে উজরা (রা.) বলেন, নবী (সা.) ইরশাদ করেন “তোমাদের থালা-বাটি তোমাদের চাকর-চাকরানীর হাতে ভেঙে গেলে তাদের মারধর করবে না। কেননা তোমাদের আয়ুষ্কাল যেমন নির্ধারিত থালা-বাটিরও তদ্রুপ।” (দায়লামি)। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, “রাসুল (সা.) বলেছেন, কেউ তার অধীনস্তকে অন্যায়ভাবে এক দোররা মারলেও কেয়ামতের বিচারের দিন তার থেকে বদলা নেওয়া হবে।” (তাবরানী)। হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা.) বলেন, “যে কেউ তার গোলামকে প্রহার করবে নির্যাতকরূপে তাকে কেয়ামত দিন শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হবে।” (আল-আদাবুল মুফরাদ: ১৮১)।

হযরত জাবের (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যার মাধ্যে তিনটি গুণের সমাবেশ হবে, আল্লাহ তার মৃত্যু সহজ করে দেবেন এবং তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন। গুণ তিনটি হচ্ছে ১ দুর্বলের সাথে বিনয় ব্যবহার ২ মা-বাবার সাথে ভালোবাসা ও ৩ স্বীয় চাকর-চাকরানীর সাথে সদাচরণ।” রাসুল (সা.) ইন্তেকালের পূর্ব মুহূর্তেও অসুস্থ অবস্থায় নামায এবং অধীনস্থ কর্মচারীদের সাথে সদয় আচরণের জন্য তাগিদ দিয়েছেন। হযরত আলী (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) এর অন্তিম কথা ছিল, নামাজ। নামাজ। তোমাদের মালিকানাধীন দাসদাসীদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় করবে। (আল-আদাবুল মুফরাদ: ১৫৮)
অপর এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, “অধীনস্থদের সাথে সদয় আচরণ কল্যাণকর অদৃষ্টের উৎপত্তিস্থল আর তাদের সাথে দুর্ব্যবহার দুর্ভাগ্যের উৎপত্তিস্থল।” মালিকপক্ষের অভদ্র আচরণকে ঘৃণা করে প্রিয়নবী (সা.) আরও বলেন, “চাকর, দাস-দাসী ও অধীনদের সঙ্গে অসদাচরণকারী বেহেশতে যেতে পারবে না।” (তিরমিজি: ২৩৯৮)।

হযরত জাবের (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যার মাধ্যে তিনটি গুণের সমাবেশ হবে, আল্লাহ তার মৃত্যু সহজ করে দেবেন এবং তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন। গুণ তিনটি হচ্ছে ১ দুর্বলের সাথে বিনয় ব্যবহার ২ মা-বাবার সাথে ভালোবাসা ও ৩ স্বীয় চাকর-চাকরানীর সাথে সদাচরণ।” রাসুল (সা.) ইন্তেকালের পূর্ব মুহূর্তেও অসুস্থ অবস্থায় নামায এবং অধীনস্থ কর্মচারীদের সাথে সদয় আচরণের জন্য তাগিদ দিয়েছেন। হযরত আলী (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) এর অন্তিম কথা ছিল, নামাজ। নামাজ। তোমাদের মালিকানাধীন দাসদাসীদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় করবে। (আল-আদাবুল মুফরাদ: ১৫৮)

রাসুল (সা.) বলেছেন, “ঐ ব্যক্তি প্রকৃত মুসলিম যার রসনা ও হাত থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে। রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, “কোন ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে নিজের জন্যে যা চাইবে তা তার ভাইয়ের জন্যেও চাইবে।” হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, “প্রত্যেকটি সৎ কাজই সাদকা।” হযরত আবু মুসা আশআরী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “প্রত্যেক মুসলমানেরই সাদকা করা অবশ্য কর্তব্য। উপস্থিত লোকজন বলল, যদি সে সাদকা করার মত কিছু না পায়? তিনি বললেন, সে যেন কারো সাথে খারাপ ব্যবহার না করে।” হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, “ভাল কথা ও সাদকা করা উত্তম কাজ।” নবী করিম (সা.) আরও বলেন, “তোমরা দোযখের আগুন থেকে বেঁচে থাক, একটি খেঁজুর দিয়ে হলেও। যদি তা না পাও তাহলে মধুর ভাষার বিনিময়ে।” চাকর-চাকরানীকে ভরণপোষণের ব্যবস্থা করাকে রাসুল (সা.) সাদাকা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। হযরত মিকদাম (রা.) বলেন, তিনি নবী করীম (সা.) কে বলতে শুনেছেন, “তুমি তোমার নিজেকে যাহা খাওয়াও তাহা সাদাকা বিশেষ, তুমি তোমার স্ত্রী-পুত্র এবং ভৃত্যকে যাহা খাওয়াও, তাহা সাদাকা বিশেষ।” (আল-আদাবুল মুফরাদ: ১৯৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) অধীনস্থ শ্রমিক কর্মচারীদের আপনজনের সাথে তুলনা করে বলেছেন, “তোমরা তোমাদের আপনজন ও আত্মীয়স্বজনদের সাথে যেমন ব্যবহার কর, তাদের সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করবে।” একই কথা মহানবী (সা.) আরেক হাদিসে উল্লেখ করেছেন এভাবে, “তোমরা অধীনস্থদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে এবং তাদেরকে কোন রকমের কষ্ট দেবে না। তোমরা কি জান না, তাদেরও তোমাদের মতো একটি হৃদয় আছে। ব্যথা দানে তারা দুঃখিত হয় এবং কষ্টবোধ করে। আরাম ও শান্তি প্রদান করলে সন্তুষ্ট হয়। তোমাদের কী হয়েছে যে, তোমরা তাদের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শন কর না।” (সহিহ বুখারি)।

হযরত সালাম ইবন (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, “তারা (শ্রমিক বা অধিনস্থ বা ক্রীতদাস) হচ্ছে তোমাদের ভাই, সুতরাং তাদের সাথে সদয় ব্যবহার কর। তোমাদের একার পক্ষে যে কাজ করা অসম্ভব, তাতে তাদের সাহায্য গ্রহণ কর; আবার তাদের একার পক্ষে যে কাজ করা অসম্ভব, তাতে তোমরাও তাদেরকে সাহায্য কর।” (মুসনাদ আহমাদ : ১৯০)। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, “কর্মচারীকে তাহার কর্মসম্পাদনের সাহায্য করবে। কেননা, আল্লাহর কর্মচারী ব্যর্থকাম হয় না।” (আল-আদাবুল মুফরাদ: ১৯১)। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে আমার এ ঘরে বলতে শুনেছি, “হে আল্লাহ! যে আমার উম্মতের কোন কাজের কিছু দায়িত্ব নিয়ে তাদেরকে কষ্টে ফেলবে, তুমি তাকে কষ্টে ফেলো। আর যে আমার উম্মতের কোন কিছুর দায়িত্ব নিয়ে তাদের সাথে নম্ররতা করবে, তুমি তার সাথে নম্রতা করো।” (সহিহ মুসলিম: ১৮২৮)।

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, “মমলুককে (তথা দাসদাসী কিংবা চাকর-চাকরানী) ঠিকমত খাদ্য ও পোশাক দিতে হবে। তার দ্বারা এমন কোন কাজ নেওয়া হবে না, যা ক্ষমতাবহির্ভূত (অর্থ্যাৎ তার সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ সে করবে, সাধ্যাতীত কাজ দেওয়া বৈধ নহে)।” (মুয়াত্তা ইমাম মালিক (র.) ২য় খÐ বদনজর অধ্যায়)। মুয়াত্তা ইমাম মালিকে আরও উল্লেখ আছে, উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) প্রতি শনিবারে মদিনার পার্শ্ববর্তী গ্রামসমূহে গমন করতেন। যদি কোন গোলামকে এমন কাজ করতে দেখতেন যা তার শক্তির বাহিরে হতো, তবে তিনি তা কম করিয়ে দিতেন। (অর্থ্যাৎ কাজ কমিয়ে গোলামের বোঝা হালকা করে দিতেন)। অধীনস্থ শ্রমিক-কর্মচারীদের সাথে সদয় আচরণ করা ও তাদের থেকে বোঝা হালকা করা শুধু তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা নয়; বরং এটা একটি পুণ্য কাজও বটে। এ প্রসঙ্গে প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, “তোমরা তোমাদের অধীনস্থ কর্মচারীদের থেকে যতটা হালকা কাজ নেবে, তোমাদের আমলনামায় ততটা পুণ্য লিপিবদ্ধ করা হবে।” (শুয়াবুল ঈমান: ৮৩৪৩)। হযরত নাফি ইবন আসিম (রা.) বলেন, তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আমর (রা.) কে বলতে শুনেছেন, “যখন কোন ব্যক্তি তাহার স্বগৃহে তাহার মজুর বা কর্মচারীদের সাথে কাজ করে তখন সে হয় আল্লাহ তায়ালার একজন কর্মচারী।” (আল-আদাবুল মুফরাদ: ৪৫০)

মালিক-শ্রমিকের সুসম্পর্ক স্থাপনের জন্য এবং সদাচরণের নিমিত্তে রাসুল (সা.) আহারের সময় অধীনস্থ খাদেমকেও সঙ্গে নিয়ে বসার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, “যখন তোমাদের মধ্যকার কারও খাদেম তার আহার্য নিয়া আসে, তখন তাকেও সাথে বসিয়ে নেওয়া উচিত। সে যদি তাতে সম্মত না হয়, তবে তাকে তা হতে কিছু দিয়ে দেওয়া উচিত।” (আল-আদাবুল মুফরাদ: ২০০) অন্য হাদিসে এসেছে, “তোমাদের কারোর খাদেম যখন তার জন্যে খাবার নিয়ে আসবে, তখন তাকে সঙ্গে বসিয়ে না খাওয়ালেও তাকে অবশ্যই এক মুঠি বা দুই মুঠি খাবার দেবে। কেননা সে-ই তার ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বশীল।” (সহিহ বুখারি: ৪১৮)। রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, “তোমাদের খাদেম যদি তোমাদের খাদ্য প্রস্তুত করে এবং তা নিয়ে যদি তোমাদের কাছে আসে যা রান্না করার সময় আগুনের তাপ দেয় ও ধোঁয়া তাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে তখন তাকে খাওয়াবে। খানাপিনা অল্প হলেও তার হাতেও এক মুঠো দুমুঠো তুলে দিবে।” (সহিহ মুসলিম: ১৫৬৭)। রাসুল (সা.) মালিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, তারা যেন কর্মচারী, শ্রমিক ও অধীনস্তদের সাথে সন্তান-সন্ততির ন্যায় আচরণ করে এবং তাদের ইজ্জত-সম্মানের কথা স্মরণ রাখে। হাদিসে এসেছে রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমরা তাদেরকে এমনভাবে স্নেহ করবে যেভাবে নিজের সন্তানদের করো এবং তাদেরকে সে খাবার দিবে যা তোমরা নিজেরা খাও।” (ইবনে মাজাহ: ৩৬৯১)।

ইসলাম অধীনস্থদের প্রতি সহনশীল হতে শিক্ষা দেয় এবং অধীনস্থ শ্রমিক-কর্মচারীদের দোষত্রুটি ক্ষমা করে দিতে উৎসাহিত করে। শ্রমিকের প্রতি মালিক যাতে সহনশীল থাকে এবং তার ভুলক্রটি ক্ষমার মতো মহৎ মনের অধিকারী হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়ে রাসুল (সা.) এক হাদিসে বলেছেন, “মজুর চাকরদের অপরাধ অসংখ্যবার ক্ষমা করা মহত্তে¡র লক্ষণ। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেছেন, এক ব্যক্তি নবী করীম (সা.) এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.) চাকর-বাকরের অপরাধ আমি কতবার ক্ষমা করব? রাসুল (সা.) চুপ রইলেন। সে পুনরায় তাঁকে প্রশ্ন করলে এবারও তিনি চুপ রইলেন। সে পুনরায় তাঁকে প্রশ্ন করলে এবারও তিনি চুপ রইলেন। চতুর্থবার বলার পর বললেন, “প্রত্যেক দিন সত্তরবার তাকে ক্ষমা করবে।” (আবু দাউদ)। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.) অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে শ্রমিকের হাতে চুমু খেতেন। তিনি আনসারির হাতে চুমু খেয়ে বললেন, “এই হাতে কখনো জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না।” (সহিহ মুসলিম: ১৫৬৭)। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) আরও বলেন, “তোমরা মুমিনদেরকে পরস্পরের প্রতি অনুগ্রহ, মায়া-মহব্বত ও সৌহার্দ্য প্রদর্শন করার ক্ষেত্রে এক শরীরের ন্যায় দেখবে। তার কোন অংশে কষ্ট অনুভূত হলে পুরো শরীরে কষ্ট অনুভূত হয়।” (সহিহ বুখারি)।

রাসুল (সা.) এর অনুকরণে তার সাহাবায়ে কেরামও তাদের অধীনস্থদের সঙ্গে উত্তম ব্যবহারের অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। একদা হযরত ওমর (রা.) আপস চুক্তি সম্পাদনের জন্য যখন বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে রওনা হলেন তখন তিনি এবং তার ভৃত্য পালাক্রমে উটের ওপর সওয়ার হয়ে মদিনা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত দীর্ঘপথ অতিক্রম করেছিলেন। এমনকি বায়তুল মুকাদ্দাসে পৌঁছার পর সেখানকার লোকেরা বুঝতে পারেনি এ দুয়ের মধ্যে কে আমীরুল মুমিনীন! কবির ভাষায়, “ভৃত্য চড়িল উটের পৃষ্ঠে উমর ধরিল রশি/ মানুষে স্বর্গে তুলিয়া ধরিয়া ধুলায় নামিল শশী।” (কাজী নজরুল ইসলাম)।

আজকের সমাজে ক্রীতদাস প্রথা নেই সত্য তবে অধীনস্থদের প্রতি জুলুম-অত্যাচার অহরহ চালু আছে। ইসলামে সকল দায়িত্বশীল ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রতি নির্দেশ রয়েছে যেন প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থদের সাথে সদ্ব্যবহার করে এবং তাদের ওপর কোনো প্রকার জুলুম-অত্যাচার না করে।” পৃথিবীতে যত আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা সুন্দর কথা দিয়েই হয়েছে। অসুন্দর কথা ও খারাপ ভাষা প্রয়োগ করে কোন আদর্শ পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ভাল কথা দিয়ে সহজেই মানুষের মন জয় করা যায়। একটি সুন্দর কথা ভালো গাছের মতো, মাটিতে যার শিকড় বদ্ধমূল, আকাশে যার শাখা বিস্তৃত, যে গাছ অফুরন্ত ফল দান করে।

বর্তমানে লক্ষ্য করা যায়, অনেক অফিস-আদালতে কর্তাব্যক্তিরা ছোটখাট কোন কারণে অধীনস্থদের হুমকি-ধমকি দিয়ে দমিয়ে রাখতে পছন্দ করে। ফলে অধীনস্তদের মনে সবসময় একটি অজানা ভীতি তাড়া করে ফিরে। কোন দোষ নেই, অপরাধ নেই তথাপিও অধীনস্থরা তাদের বড়ো সাহেবের ভয়ে সর্বদা তটস্থ হয়ে থাকে। এতে কর্তাব্যক্তির ভুলের সংশোধন হওয়ার সুযোগ থাকে না। তাই প্রতিষ্ঠানও তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হয় না। অথচ প্রতিষ্ঠান প্রধান যদি তার অধঃস্তনের সাথে উত্তম ব্যবহার করতেন তাহলে অধীনস্থরা প্রাণ খুলে আল্লাহর কাছে তাঁর জন্য দোআ করত। সবাই মিলেমিশে প্রতিষ্ঠানের উন্নতির জন্য কাজ করতে পারত। প্রতিষ্ঠান তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হতো। রাফি ইবনু মাকীস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, “তিনি হুদায়বিয়ার সন্ধিতে রাসুল (সা.) এর সঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের অন্যতম ছিলেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, (দাস-দাসী বা চাকর-চাকরানীর সাথে) উত্তম ব্যবহার প্রাচুর্য বয়ে আসে এবং মন্দ আচরণ দুর্ভাগ্য টেনে আনে।” (আহমদ)।

আসুন আমরা অধীনস্থদের সাথে আচরণে রাসুল (সা.) দেখানো সুন্নাহকে অনুসরণ করার চেষ্টা করি। রাসুল (সা.) এর সুন্নাহকে সমাজ জীবনে প্রস্ফুটিত করে তুলি। নিজেদের আচার-আচরণে দাম্ভিকতা ও অহংবোধ পরিহার করে বিনয়ী হওয়ার চেষ্টা করি। আল্লাহর বান্দাদের সঠিক মর্যাদা প্রদানের পদক্ষেপ গ্রহণ করি। সমাজ ও রাষ্ট্রে ইনসাফকে প্রতিষ্ঠার জন্য ভূমিকা পালন করি। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের তৌফিক দান করুন। আমিন।

Previous Post

শ্রমিকের সমস্যা সমাধানে ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে এগিয়ে আসতে হবে: অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান

Next Post

২০২২ সালের ৩ পাতার ক্যালেন্ডার

Next Post
২০২২ সালের ৩ পাতার ক্যালেন্ডার

২০২২ সালের ৩ পাতার ক্যালেন্ডার

সর্বশেষ সংযোজন

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

by skalyanad
এপ্রিল ১৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমজীবী ভাইবোনদের মাঝে ইসলামের সুমহান আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে। আসন্ন...

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

by skalyanad
এপ্রিল ৮, ২০২৪
0

দেশে ও প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ, দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।...

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

by skalyanad
মার্চ ২৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষরা সর্বক্ষেত্রে অধিকার বঞ্চিত। তাদের অধিকার আদায়ের...

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৭, ২০২৪
0

আসন্ন ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধে যে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে তা নিরসনের জন্য রাষ্ট্র ও মালিকদের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করার...

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৬, ২০২৪
0

এদেশের শ্রমজীবী মানুষের সস্ত্রশ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনেছে। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ শ্রমজীবী মানুষরা পায়নি। রাজনৈতিক বিভেদ স্বাধীনতাকে...

  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
  • সাংগঠনিক কাঠামো
  • শাখা সংগঠন
  • ট্রেড ইউনিয়ন
  • সংবাদ
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
  • প্রকাশনা
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
  • যোগাযোগ

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.

Design and Developed by Bijoylab IT| Contact:+01818 650864
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.