• প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result
No Result
View All Result
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result

রমাদান মাস পরবর্তী ভাবনা

মুহাম্মাদ আব্দুল কাইয়ূম

skalyanad by skalyanad
জুলাই ১৫, ২০২৩
in আর্কাইভ, গ্যালারি, ছবি, প্রবন্ধ/নিবন্ধ
0
রমাদান মাস পরবর্তী ভাবনা
0
SHARES
0
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

মহিমান্বিত মাসটির জন্য আমরা প্রতীক্ষায় ছিলাম। প্রতীক্ষায় ছিলো সারা জাহানের মুসলিম। দিবা-রাত্রির কুদরাতি চক্রে সে মাসটি আমাদের মাঝে আর নেই। বলছি কুরআন নাজিলের মাস মাহে রমাদানের কথা। একই সময়ে সারা দুনিয়ার মানুষ মহান খালিকের একটি আদেশ মানার জন্য জেগে উঠে সাহরি গ্রহণ করে। আবার একই সময় অনুসারে সে আদেশ মেনে একটি সমাপ্তি ঘটিয়ে ইফতার খায়। একটি মাস টানা এমন মহা আয়োজন চলতে থাকে। এক রবের আদেশ মেনে সারা দুনিয়ার দুশো কোটি মুসলিমের এমন ঐকতান সে রবেরই একত্বের প্রমাণ। এমনক্ষণ, এমন পবিত্র পরিবেশ চাইলেই কি ফিরিয়ে আনা যায়? না, যায় না। কারণ সৃষ্টির স্বাভাবিকতায় বার্ষিক গতি চক্রে রমাদান একবারই আসে। আবার চলে যায়। চলে যাওয়া রমাদান আমাদের কী বার্তা দিয়ে গেলো তা নিয়েই কিছু কথা। বোদ্ধা পাঠকের সমীপে মৌলিকভাবে চারটি বার্তা পেশ করতে চাই।

ক. আমিও চলে যাবো: নির্দিষ্ট দিনের কাঠামোবদ্ধ মাসটি ঊনত্রিশ বা ত্রিশে পূর্ণ হয়। এরপর আরেকটি মাস আসে। গতিময় এ দুনিয়া বারো মাসের এমন চক্রে আবর্তিত হয় সৃষ্টির সূচনা থেকে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর কাছে গণনায় মাস বারোটি’ (তাওবাহ: ৩৬)। দিবা-রাত্রির পরিবর্তনের মাঝে বয়ে চলা এমন আয়োজনে জ্ঞানবানদের জন্য শিক্ষা রয়েছে। এ সম্পর্কে আসমান-জমিনের মালিক বলেন, ‘আর আল্লাহ রাত ও দিনের আবর্তন ঘটান, নিশ্চয় এতে শিক্ষা রয়েছে অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্নদের জন্য’ (নূর: ৪৪)। মাসসূহের এমন নিশ্চিত আগমন ও প্রস্থানের মাঝে আমাদের জন্য বার্তা হলো, আমিও চলে যাবো। চলে যাবে প্রতিটি প্রাণ। প্রস্থান যেমন ঘটেছে রমাদানের, আমারও প্রস্থান ঘটবে। এটি ঘটবে সবার বেলায়। প্রতিটি প্রাণের ‘আজাল মুসাম্মা’-নির্ধারিত সময় হয়ে গেলে কেউই আর থাকবে পারবে না। কুরআনের ইরশাদ, ‘আর প্রতিটি জাতির জন্য এক নির্দিষ্ট সময় আছে। অতঃপর যখন তাদের সময় আসবে তখন তারা মুহূর্তকাল দেরি করতে পারবে না এবং এগিয়েও আনতে পারবে না’ (আরাফ: ৩৪)।

একটি সুনিশ্চিত বিষয় আছে। রমাদান আগামী বছরও ফিরে আসবে। এ ফিরে আসা দুটি বিষয়ে খবর দেয়। এক. প্রস্থান করা মানে নিঃশেষ হওয়া নয়। তাই আমার এ দুনিয়া থেকে প্রস্থান আমার নিঃশেষ হওয়ার বার্তা দেয় না; বরং আরেকটি প্রত্যাবর্তনের খবর দেয়। এ প্রত্যাবর্তন মহান রবের দিকে। ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। দুই. দুনিয়ার কেয়ামত আগামী বছর (২০২৪) ঘটবে না। আমি কুরআনে উল্লিখিত আস সাআহ’ বা বড়ো কেয়ামাতের কথা বলছি। উলামায়ে কিরাম মানুষের মৃত্যুকে ছোট কেয়ামত বলে অভিহিত করেছেন। এ কেয়ামত একজন ব্যক্তির আখিরাতের জিন্দেগীর দ্বারকে উন্মুক্ত করে দেয়। কিন্তু আমার এ কেয়ামত আগামীর রমাদান ফিরে আসার আগেই ঘটতে পারে। আফসোস! বহু মানুষ দুনিয়ার কেয়ামত নিয়ে মহাব্যস্ত হলেও নিজের জীবনের কেয়ামত নিয়ে একেবারেই নির্লিপ্ত!

আরেকটি ব্যাপার আছে। এ দুনিয়া একটি মুসাফিরখানা। মুসাফিরখানায় মানুষ স্থায়ী হয় না। ক্ষণিকের সামান নিয়ে আসে; আবার কিছু সামান নিয়ে বেরিয়ে যায়। দুনিয়ায় জীবন যাপনে এমন মেজাজ নিয়ে চলার কথাই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশনায় এসেছে। সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনু উমার বলেন, ‘নবীজী আমার দু’কাঁধ ধরে বলেন, তুমি দুনিয়াতে এমনভাবে থাকো, যেনো তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথচারী’ (বুখারি: ৬৪১৬)। হায়! দুনিয়ায় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে দু’চার দিনের সফরের জন্য আমরা কতো কী সামান জোগাড় করি, কতো গাঁটুরি যে আমরা বাঁধি! কিন্তু আখেরাতের অনন্ত সফরের জন্য সামান জোগাড়ে আমরা খুব কমই মনোনিবেশ করি।

খ. খোলস যেনো না বদলাই: প্রথমে খোলস বদলানোর গল্পটাই জানি। আল-কুরআনে সুরা আরাফের ১৭৫ আয়াতে আল্লাহ এক ব্যক্তির গল্প তুলে ধরেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর তাদেরকে ঐ ব্যক্তির খবর পড়ে শুনান যাকে আমি আমার নিদর্শনসমূহ দিয়েছিলাম, তারপর তা হতে সে নিজেকে আলাদা করে ফেলে, অতঃপর শয়তান তার অনুগামী হয়, ফলে সে বিপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়।’ আয়াতে ‘ইনসিলাখ’ শব্দটি বিভিন্ন প্রাণীর রূপ বা চামড়া বদলানোর অর্থে ব্যবহৃত হয়। এখানে বিভিন্ন মুফাসসির বিভিন্নজনের নাম উল্লেখ করলেও বনী ইসরাঈলের একজনের ঘটনা বেশ প্রসিদ্ধ। লোকটির নাম বালআম ইবনু বাউরা। মুসা আলাইহিস সালামের সমকালীন মানুষ। এ আলেম লোকটি হাত তুললে দুআ কবুল হতো। মূসা আলাইহিস সালাম শক্তিশালী অত্যাচারী লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামলে তারা এ লোকের দ্বারস্থ হয়। নবীর বিরুদ্ধে দুআ করতে বলে। প্রথমে রাজী না হলে পরে দুনিয়ার স্বার্থের কাছে হেরে যায়। শেষ পর্যন্ত খোলস পাল্টে নবীর বিরুদ্ধে দুআ করলো। কিন্তু তার দুআ কবুলের যোগ্যতা কেড়ে নেওয়া হলো। তার দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ই বিনষ্ট হলো। দ্বীনের লেবাস বদলে দুনিয়াকে স্বাগত জানানোর শাস্তি সে নগদে পেলো। দুনিয়াবাসীর সামনে কেয়ামত পর্যন্ত উদাহরণ হলো। উদাহরণ হলো তাদের জন্য, যারা আল্লাহর আয়াত পেয়ে, জীবনে তা ধারণ করে আবার তা ছুঁড়ে ফেলে দেয়।

নিকৃষ্ট দুটি উপমা আছে। এ উপমা দ্বীনের রং ধারণ করে যারা তা ফেলে দিয়ে দুনিয়াকে স্বাগত জানায় তাদের। সুরা আরাফের ১৭৬ আয়াতে এ শ্রেণির মানুষকে নিকৃষ্ট কুকুরের সাথে তুলনা করা হয়েছে। আর সুরা জুমুআর ৫ নম্বর আয়াতে যারা আল্লাহর কিতাব পেলো কিন্তু সে অনুযায়ী আমল করলো না তাদেরকে গাধার সাথে তুলনা করা হয়েছে। কারণ গাধা কিতাব বয়ে বেড়োালেও জানেনা কিতাবের পরিচয় ও মর্যাদা; মানা তো আরো দূরের কথা।

বর্ণিত গল্প আর উপমা দুটি যেনো এখনকার বহু মুসলিমের সাথে মিলে যায়; মিলে যায় আলিম শ্রেণি ও সাধারণ মুসলিমের সাথে। অধিকাংশ মুসলিম আজ দুনিয়ার কাছে নিজেদের দ্বীনকে বিক্রি করে দিচ্ছে। বড়ো অবাক করা বিষয় হলো, রমাদান মাসে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তাকওয়া তথা আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহর বিধান মেনে চলার অনুশীলন করেন। কিন্তু রমাদান মাস পার না হতেই সিয়ামপালনকারী তাকওয়ার লেবাসটা খুলে ফেলে দেন। বাহ্যিক বিচারে আমরা দেখি, এমন অনেক মুসলিম আছেন, যারা রমাদান মাস উপলক্ষ্যে পাঞ্জাবী-টুপি কেনেন। এরপর তা ছেড়ে দেন। নির্দিষ্ট পোশাকের আবশ্যিকতার কথা আমি বলছি না। বলছি মানসিকতার কথা। এমন অনেক আছেন, যারা রমাদান মাস আসলে আমলী জিন্দেগীতে কিছু পরিবর্তন আনেন এই চিন্তায়, রমাদানের পর তা করবেন না। তাকওয়ার যে লেবাস তিনি পরিধান করেন, তা ছুঁড়ে ফেলেন ইচ্ছা করেই।

একটি দিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রমাদার মাসে সিয়ামপালনকারী সিয়ামের আনুষ্ঠানিকতা তথা সাহরি আর ইফতারিতে যতটা গুরুত্ব দেন, যতটা সতর্ক থাকেন শুধুমাত্র পেটটা খালি রাখার জন্য ততটা গুরুত্ব দেন না তাকওয়া অর্জনের কিতাব আল-কুরআনের দিকে। মুসলিম উম্মাহর অধিকাংশ সদস্যের এ হাল, মুত্তাকি হতে চান, কিন্তু তাকওয়ার গাইডবুক আল-কুরআনের শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব নেই। এ কিতাবের যে হকগুলো আছে তার প্রতি ভ্রæক্ষেপ নেই। বিশুদ্ধ পাঠ, অনুধাবন, বাস্তব আমল আর এ কিতাবের প্রতি দাওয়াত এর কাজের মাধ্যমে কুরআনের হক আদায়ের দিকে আমরা অধিকাংশ মুসলিম এখনো মনোনিবেশ করতে পারিনি। এ রমাদানে পুরো কুরআনের বিধি-বিধান অবহিত হয়ে সারা বছরে তা প্র্যাকটিস করার মানসিকতা ও পরিবেশ অনুপস্থিত।

‘রমাদান এসেছে, তাই একটু নামাজ পড়ি’ এমন দুর্বল নিয়তের অধিকারীকে কীভাবে সালাত কায়েমকারী বলা যাবে? তাকে কি প্রকৃত মুত্তাকি বলা যাবে? বরং ‘মুত্তাকি’ একটি গুণবাচক শব্দ হওয়ায় এর দাবি হলো, আল্লাহ তাআলার সকল বিধানের প্রতি সন্তুষ্টচিত্তে মাথা নত করে এর সকল আবশ্যিক বিধান পালন করে চলা।

তাই প্রথম প্রয়োজন মানসিকতা বদলের। প্রয়োজন একটি সিদ্ধান্তের, আমি রমাদানে আল্লাহকে ভয় করার যে অনুশীলন করেছি তা পরিত্যাগ করবো না। নেক আমলের যে আমি বুনেছি তা আমি নিজ হাতে কেটে ফেলবো না। এ আহŸানই আল্লাহ তাআলা করেছেন, ‘আর তোমরা সে নারীর মতো হয়ে না. যে তার সুতা মজবুত করে পাকানোর পর সেটার ডাক খুলে নষ্ট করে দেয়’ (নাহল: ৯২)। তাফসীরকারক মুজাহিদ, কাতাদাহ ও ইবনু যায়েদ বলেন, এটা ঐ সমস্ত লোকদের উপমা, যারা কোনো পাকাপাকি শপথ করার পর তা ভঙ্গ করে। (ইবনু কাসীর)

গ. আমল কবুল হয় মুত্তাকিদের: নেক আমল সম্পাদনকারী একজন মুমিনের আমল সমাপন শেষে পেরেশানী থাকে কবুল হবে কি হবে নাÑতা নিয়ে। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আল্লাহ নিশ্চয় মুত্তাকিদের নিকট থেকে কবুল করেন।’ (মায়েদা: ২৭) একজন মুসলিম রমাদানে সিয়াম, কিয়াম, সাদাকাহ, যাকাত, খতমে কুরআন, যিকর, ইফতার কারানোসহ বহু আমল করে থাকেন। এ সব আমল কবুল হবে তো? তার জন্যও একই জবাব, মুত্তাকিদের আমল আল্লাহ কবুল করেন।

এক্ষণে ‘মুত্তাকি’ শব্দের বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। এটি একটি গুণবাচক শব্দ। একটি গুণবাচক শব্দ কারো জন্য প্রয়োগ করা যায়, যখন তার মধ্যে গুণটি থাকে। রোজা পালনরত থাকলেই কাউকে ‘সাইম’ বা রোজাদার বলা যায়। দাঁড়ানোর বৈশিষ্ট্য কারো মাঝে বিদ্যমান থাকলে তাকে ‘দণ্ডায়মান’ বলা যায়। এ কাজটি ছেড়ে বসে গেলে তাকে ‘দণ্ডায়মান’ না বলে বড়োজোর দাঁড়ানো ছিলেন বলা যায়। রমাদানে একজন মুসলিম সিদ্ধান্ত নিয়ে সালাতে মনোনিবেশ করে তাকওয়ার প্রধান গুণ ধারণ করায়, আরো অনেক শরয়ী নির্দেশনা পালনে মনোযোগী হওয়ায় তাকে মুত্তাকি বলা যায়। কিন্তু এ লোকটি সিদ্ধান্ত নিয়েই যখন তাকওয়ার আমলগুলো পরিহার করে তাকে কী বলা যায়? মুত্তাকি? না, বড়োজোর বলা যায়, তিনি রমাদানে মুত্তাকি ছিলেন। আল্লাহ তো কবুল করেন মুত্তাকির কাছ থেকে। যিনি মুত্তাকি থাকার আবশ্যিক ও নিয়মিত গুণগুলো ক্ষণে গ্রহণ করে আবার বর্জন করে চলেন তাকে মুত্তাকি বলা যাবে তো? এমন মুত্তাকির আমলগুলো আল্লাহ কীভাবে কবুল করবেন-তিনিই ভালো জানেন!

এখানে একটি সুক্ষ্ম দিকে নজর দিতে হয়। তা হলো বান্দার নিয়ত। কারণ, বান্দার নিয়তের উপর তার আমলের ফলাফল নির্ভর করে। ‘রমাদান এসেছে, তাই একটু নামাজ পড়ি’ এমন দুর্বল নিয়তের অধিকারীকে কীভাবে সালাত কায়েমকারী বলা যাবে? তাকে কি প্রকৃত মুত্তাকি বলা যাবে? বরং ‘মুত্তাকি’ একটি গুণবাচক শব্দ হওয়ায় এর দাবি হলো, আল্লাহ তাআলার সকল বিধানের প্রতি সন্তুষ্টচিত্তে মাথা নত করে এর সকল আবশ্যিক বিধান পালন করে চলা। কোনো ফরজ ও ওয়াজিব আমলের প্রতি শৈথিল্য প্রদর্শন না করা, সুন্নাত ও মুস্তাহাব আমলের প্রতি যথাসম্ভব গুরুত্বারোপ করে ফরজ বিধানের ঘাটতি পূরণ ও সৌন্দর্য্য বাড়ানোর চেষ্টা করা। এমন প্রচেষ্টায় যিনি নিজেকে আত্মনিয়োগ করবেন, অলসতা করবেন না, আবশ্যিক আমলে কোনেরূপ বিরতি টানবেন না তাঁকেই প্রকৃত মুত্তাকি হিসাবে অভিহিত করা যায়। এমন মুত্তাকির আমল আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে আশা করা যায়।

ঘ. ইবাদত চলবে মৃত্যু পর্যন্ত: আল্লাহর ইবাদতের জন্যই আমাদের সৃষ্টি। কারণ আমরা তাঁর আবদ বা দাস। এ দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে কোনো মানুষ কখনো মুক্ত হতে পারে না। আল্লাহর দাসত্ব যে অস্বীকার করে সে সাময়িকভাবে প্রলেপ দিতে পারে, ঢেকে রাখতে পারে, কিন্তু আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ থেকে, তাঁর রাজত্ব থেকে নিজেকে কখনো মুক্ত করতে পারে না। সে কাফির-সত্যকে আড়ালকারী; সত্যকে মোচনকারী নয়। দুনিয়ার জিন্দেগীর বিচারে মৃত্যু অবধি মানুষ আল্লাহ তাআলার নিয়ন্ত্রণে। তার জন্ম-মৃত্যু আল্লাহর সিদ্ধান্তেই। এটা দাসত্বের গোড়ার কথা। যে এ সত্যের কাছে মাথা নত করে স্রষ্টার বিধান মেনে চলে সে বাধ্য; অন্যথা অবাধ্য। মৃত্যু অবধি তাঁর ইবাদত তথা তাঁর আদেশ-নিষেধে মাথানত করে চলার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আর তুমি তোমার রবের ইবাদত করতে থাকো তোমার নিকট নিশ্চিত বিষয়টি-মৃত্যু আসা পর্যন্ত।’ (হিজর: ৯৯)

আল্লাহর সৃষ্ট জমিনে আমি নগন্য সৃষ্টি। কেউ তাঁর ইবাদত করুক আর না করুক নেয়ামত ভোগ করে তাঁর। তাঁর সৃষ্ট অক্সিজেন গ্রহণ করেই একজন কাফিরও বেঁচে থাকে। আমৃত্যু অবাধ্য বান্দাটিও অনেক নেয়ামত ভোগ করে। তাই জীবনের মালিক মৃত্যুর মাধ্যমে জীবনের সমাপ্তি ঘটিয়ে সে জীবনের হিসাব নিবেন-মৃত্যু অবধি প্রাপ্ত জীবনে ইবাদত করেছে কার?

তাই বিষয়টি খুবই পরিষ্কার, আমি যেহেতু মালিকের সার্বক্ষণিক গোলাম, তাই এমন গোলামিতে কোনোরূপ বিরতি চলবে না। প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে কেবল তাঁরই গোলামি করে বাধ্য বান্দার কাজ। এখানে সাময়িক হওয়ার সুযোগ নেই। যারা রমাদানে বন্দেগীতে সাড়া দিয়ে আবার ভুলে যান, বিরতি দেন-তারা ইবাদতের হাকিকত বোঝেননি। যারা ইবাদতে জীবনের এরিয়াকে বিভাজিত করেন তাদের কাছেও ইবাদতের মানে পরিষ্কার নয়। মানব জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাটে এক মালিকের জমিনে। তাই কৃতজ্ঞ বান্দা জীবনের কোনো অধ্যায়কে তাঁর ইবাদতের আওতামুক্ত ভাবতে পারে না।

রমাদানে কিছু বন্দেগী করে যারা ক্ষান্ত দেন তারা এখনো আসল মালিকের পূর্ণ ইবাদতে সাড়া দিতে পারেননি। একমাস কিছু বন্দেগী করে যারা তৃপ্তিতে ভোগেন তারা হাকিকতে আল্লাহর বান্দা হতে পারেননি। এখানে আত্ম-তৃপ্তির সুযোগ নেই। আমার প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসের মালিক যিনি, শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তার ইবাদত করাই বিবেকের দাবি। তাই রামাদানি মুসলিম নয়, প্রয়োজন রাব্বানী মুসলিমের- যিনি রমাদানের পরেও নিজেকে সে মালিকের গোলাম ভেবে নিরন্তর এক রবের ইবাদত করে যাবেন।

বস্তুত প্রতি বছরই মুসলিম জন-জীবনে রমাদান আসে। মাসব্যাপী সিয়াম পালনের উৎসবও হয়। কিন্তু মুসলিমের জীবনে কাক্সিক্ষত পরিবর্তন দেখা যায় না। এর কারণ হলো, আমরা অধিকাংশ মুসলিম এর আনুষ্ঠানিকতায় নজর দিয়েছি; এর হাকিকত আর এর আবেদনের দিকে নজর দিইনি। রমাদান আবেদন জানায় তাকওয়া পালনের, তাকওয়া লালনের। রমাদান আবেদন জানায় বন্দেগী পালনের, সে বন্দেগী জীবনভর লালনের। আল্লাহ তাআলা আমাদের সে আবেদনে রমাদান পরবর্তী মুহূর্তগুলোতে সাড়া দেওয়ার তাওফিক দিন। আমিন।

লেখক: শিক্ষক, খতীব, গবেষক ও আলোচক।

Previous Post

শ্রমিকের অধিকার আদায়ের জন্য সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রয়োজন : হামিদুর রহমান আজাদ

Next Post

শ্রমিকদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দিতে হবে : অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান

Next Post
শ্রমিকদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দিতে হবে : অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান

শ্রমিকদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দিতে হবে : অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান

সর্বশেষ সংযোজন

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

by skalyanad
এপ্রিল ১৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমজীবী ভাইবোনদের মাঝে ইসলামের সুমহান আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে। আসন্ন...

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

by skalyanad
এপ্রিল ৮, ২০২৪
0

দেশে ও প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ, দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।...

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

by skalyanad
মার্চ ২৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষরা সর্বক্ষেত্রে অধিকার বঞ্চিত। তাদের অধিকার আদায়ের...

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৭, ২০২৪
0

আসন্ন ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধে যে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে তা নিরসনের জন্য রাষ্ট্র ও মালিকদের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করার...

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৬, ২০২৪
0

এদেশের শ্রমজীবী মানুষের সস্ত্রশ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনেছে। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ শ্রমজীবী মানুষরা পায়নি। রাজনৈতিক বিভেদ স্বাধীনতাকে...

  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
  • সাংগঠনিক কাঠামো
  • শাখা সংগঠন
  • ট্রেড ইউনিয়ন
  • সংবাদ
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
  • প্রকাশনা
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
  • যোগাযোগ

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.

Design and Developed by Bijoylab IT| Contact:+01818 650864
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.