বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন: শ্রমিকের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় অধীনস্থ একটি সরকারি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে এ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের ইতিহাস:
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ২৫ নং আইন) প্রণয়ন করা হয়। আইনটি ১ অক্টোবর ২০০৬ সাল থেকে কার্যকর করা হয়েছে। এ আইনটি ১৯৬৮ সালে প্রণীত কোম্পানী মুনাফা (শ্রমিকদের অংশগ্রহণ) আইনের আধুনিক সংস্করণ। আইনটি প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি ও বাধ্যবাধকতার অভাবে যথাযথভাবে কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়াও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ত্রয়োদশ বৈঠকে এ আইনটি সংশোধনের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আইনটি সংশোধন পূর্বক ‘বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন (সংশোধন) আইন, ২০১৩ গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখ বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। ১৮ অক্টোবর ২০১০ তারিখে আইনটির একটি বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়।

ভিশন ও মিশন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন নির্দিষ্ট ভিশন ও মিশন রয়েছে। তা হলো:-
ভিশন : বাংলাদেশের সকল অঞ্চল ও স্তরের প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক ও শ্রমিকের পরিবারের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন।
মিশন : সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিলে লভ্যাংশ প্রদান নিশ্চিত করে সকল অঞ্চল ও স্তরের প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক ও শ্রমিকের পরিবারকে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সেবার আওতায় আনা।

কর্মপরিধি :
শিল্পায়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, বহির্বিশ্বে দেশের সুনাম, মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক (এরূপ সরকারি ও বেসরকারি খাতে যেখানে কর্মরত শ্রমিকের কাজের বা চাকরির শর্ত ইত্যাদি বিদ্যমান শ্রম আইন ও তদাধীন প্রণীত বিধি-বিধানের আওতায় নির্ধারিত কিংবা নিয়ন্ত্রিত) ও অপ্রাতিষ্ঠানিক (এরূপ বেসরকারি খাত যেখানে কর্মরত শ্রমিকের বা চাকরির শর্ত ইত্যাদি বিদ্যমান শ্রম আইন ও তদাধীন প্রণীত বিধি-বিধানের আওতায় নির্ধারিত কিংবা নিয়ন্ত্রিত নয় এবং যেখানে কর্মরত শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার সুযোগ অত্যন্ত সীমিত) খাতে নিয়োজিত শ্রমিক ও শ্রমিকদের পরিবারের কল্যাণ সাধনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

ফাউন্ডেশনের কার্যাবলী :
• শ্রমিক ও তাঁর পরিবারের কল্যাণ সাধন;
• শ্রমিক ও তাঁর পরিবারের কল্যাণার্থে, বিভিন্ন প্রকার প্রকল্প গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন;
• শ্রমিকদের বিশেষতঃ অক্ষম বা অসমর্থ শ্রমিকদের আর্থিক সাহায্য প্রদান;
• অসুস্থ শ্রমিকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা বা আর্থিক সাহায্য প্রদান;
• দুর্ঘটনায় কোন শ্রমিকের মৃত্যু ঘটলে তাঁর পরিবারবর্গকে সাহায্য প্রদান;
• শ্রমিকের পরিবারের মেধাবী সদস্যকে শিক্ষার জন্য বৃত্তি কিংবা স্টাইপেন্ড প্রদান;
• শ্রমিকদের জীবন বীমাকরণের জন্য যৌথ বীমা ব্যবস্থার প্রবর্তন করা এবং এই লক্ষ্যে তহবিল হইতে সংশ্লিষ্ট বীমা প্রতিষ্ঠানকে প্রিমিয়াম পরিশোধ করা;
• তহবিল পরিচালনা ও প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে অন্যান্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা; এবং উপরিউক্ত কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য যে কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে অন্য যে কোন কার্য সম্পাদন।

ফাউন্ডেশনের তহবিল :
এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ফাউন্ডেশনের একটি তহবিল থাকবে
নিম্নবর্ণিত উৎসসমূহ হতে প্রাপ্ত অর্থ তহবিলে জমা হইবে, যথাঃ-
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(খ) মালিক কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
“শ্রম আইনের ধারা ২৩৪ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর অধীন স্থাপিত শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে প্রতি বৎসর জমাকৃত অর্থের শতকরা ৫০ (পঞ্চাশ) ভাগ অর্থ;]”
(গ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে সুদবিহীন বা রেয়াতিহারে গৃহীত ঋণ;
(ঘ) ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা থেকে প্রাপ্ত আয়;
(ঙ) কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দানকৃত অর্থ;
(চ) ফাউন্ডেশনের তহবিল বিনিয়োগ হইতে প্রাপ্ত মুনাফা; এবং
(ছ) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত অন্য কোন উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।

“উপ-ধারা (২) এর দফা (খখ) তে উল্লিখিত অর্থ, শ্রম আইনের ধারা ২৪৩ এর উপ-ধারা (২) এর উদ্দেশ্যেপূরণকল্পে, উক্ত শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে জমা হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত তহবিলে জমা প্রদান করিতে হইবেÑতবে শর্ত থাকে যে, শ্রম আইন দ্বারা বিলুপ্ত Companies Profits (Workers Participation) Act, 1968 (Act No. XII of 1968) এর আওতাধীন প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত তহবিল এবং শ্রম আইনের অধীন স্থাপিত শ্রমিক কল্যাণ তহবিল হইতে ইতোমধ্যে জমাকৃত অর্থ উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত তহবিলে এমনভাবে জমা থাকিবে যেন উহা এই উপ-ধারার অধীন জমা হইয়াছে।]”
(৪) তহবিলের অর্থ বা তার অংশবিশেষ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত খাতে বিনিয়োগ করা যাবে।
(৫) তহবিলের অর্থ, বোর্ডের অনুমোদনক্রমে, ফাউন্ডেশনের নামে কোন তফসিলী ব্যাংকে জমা রাখতে হবে।
(৬) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তহবিল রক্ষণ ও তার অর্থ ব্যয় করা যাবে।

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন নিম্নোক্ত খাতসমূহে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে :
• মৃত শ্রমিক অনুদান
• ছাত্র বৃত্তি/শিক্ষা বৃত্তি (মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষি ও বিশ^বিদ্যালয়)
• জরুরি চিকিৎসা সহায়তা অন্যান্য

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের প্রতিশ্রুত সেবাসমূহ :
ভিশন : বাংলাদেশের সকল অঞ্চল ও স্তরের প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক ও শ্রমিক পরিবারের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন।
মিশন : সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিলে লভ্যাংশ প্রদান নিশ্চিত করত সকল অঞ্চল ও স্তরের প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক ও শ্রমিকের পরিবারকে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন এর সেবার আওতায় আনা।
২. প্রতিশ্রুত সেবাসমূহ
২.১ নাগরিক সেবা (চার্ট দেখতে ক্লিক করুন)
২.২ দাপ্তরিক সেবা ও ২.৩ অভ্যন্তরীণ সেবা (চার্ট দেখতে ক্লিক করুন)

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের নাগরিক সেবাসমূহের সময় সীমা:
• তথ্য অধিকার আইনের আওতায় নাগরিককে তথ্য প্রদান (বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন) বিনামূল্যে সেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৫ দিন
• কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনা সকল শ্রমিক দৈহিক বা মানসিক স্থায়ী অক্ষম বা অসমর্থ হলে শ্রমিক আর্থিক অনুদান প্রদান (প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের ক্ষেত্রে) বিনামূল্যে সেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৮০ দিন
• কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনা সকল শ্রমিক দৈহিক বা মানসিক স্থায়ী অক্ষম বা অসমর্থ হলে শ্রমিক আর্থিক অনুদান প্রদান (অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের ক্ষেত্রে) বিনামূল্যেসেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৮০ দিন
• দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য আর্থিক অনুদান (প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের ক্ষেত্রে বিনামূল্যেসেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৮০ দিন
• দুরারোগ্য ব্যধির চিকিৎসার জন্য আর্থিক অনুদান (অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের ক্ষেত্রে) বিনামূল্যেসেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৮০ দিন
• শ্রমিকদের মেধাবী সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় আর্থিক অনুদান প্রদান বিনামূল্যেসেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৮০ দিন
• কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনাজনিত কারণে কোন শ্রমিকের জরুরী চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান (প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের ক্ষেত্রে) বিনামূল্যেসেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৮০ দিন
• কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনাজনিত কারণে কোন শ্রমিকের জরুরী চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান (অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের ক্ষেত্রে) বিনামূল্যেসেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৮০ দিন
• শ্রমিকের মৃতদেহ পরিবহন ও সৎকারের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান বিনামূল্যেসেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৮০ দিন
• অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত মহিলা শ্রমিকের মাতৃত্ব কল্যাণে আর্থিক অনুদান প্রদান বিনামূল্যেসেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৮০ দিন
• দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু ঘটলে পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান (প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের ক্ষেত্রে) বিনামূল্যেসেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৮০ দিন
• দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু ঘটলে পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান (অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের ক্ষেত্রে) বিনামূল্যেসেবা প্রদানের সময়সীমা: ১৮০ দিন

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে আবেদন করার নিয়ম:
• বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে আবেদন করতে হলে তাকে অবশ্যই বাংলাদেশের শ্রম বিভাগের বৈধ রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত ফেডারেশন, ক্রাফট ফেডারেশন, ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য হতে হবে। তবে কোন শ্রম বিভাগের কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকতে হবে।
• তিনি যদি কোন ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য না হন তাহলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রত্যায়ন পত্র বা সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
• যথাযথ কর্তৃপক্ষ বলতে কোন শ্রম বিভাগের কর্মকর্তা, অত্র এলাকার কোন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার পত্যায়ন পত্র থাকতে হবে যে তিনি একজন শ্রমিক।
• বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। (১) ফরম-‘ক’ (২) ফরম-‘কক’
• আপনি যে ফেডারেশন, ক্রাফট ফেডারেশন, ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য তার আইডিসহ যাবতীয় সাপোটিং পেপারস যুক্ত করতে হবে।
• যদি কোন ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য না হন তাহলে কোন শ্রম বিভাগের কর্মকর্তা, অত্র এলাকার কোন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার প্রত্যায়নপত্র বা সার্টিফিকেটসহ যাবতীয় সাপোটিং পেপারস যুক্ত করতে হবে।

ফর্ম ‘ক’ ( দেখতে ক্লিক করুন)

ফর্ম ‘কক’ ( দেখতে ক্লিক করুন)

যোগাযোগ বা আবেদন পাঠানোর ঠিকানা:
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন
শ্রম কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
ভবন নং ৬, ২১তলা
বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা
ফোনঃ ৯৫৪৫৪৯৫

শ্রমিকের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি
শ্রমিকদের কল্যাণ সাধনে দেশে সক্রিয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন কর্মকান্ডের মাধ্যমে অর্জিত মুনাফা থেকে যে অর্থ সংগ্রহ হয় তাই হচ্ছে ফাউন্ডেশনের মূলধন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দুটি তহবিল। একটি মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় তহবিল অপরটি বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিল। এ পর্যন্ত তহবিল দুটিতে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ৭০০ কোটি টাকারও বেশি। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কবলে পড়লে বা পেশাগত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে বা পেশাগত কারণে কাজ করতে অক্ষম হয়ে গেলে এই তহবিল দুটি থেকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এছাড়া অসুস্থ শ্রমিকদের চিকিৎসায়, পরিবারের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষার জন্য বৃত্তি দিতেও এ তহবিলের অর্থ ব্যবহার করা হয়।

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন, ২০০৬ অনুযায়ী এ তহবিল থেকে শিক্ষাবৃত্তি, যৌথ বীমার প্রিমিয়াম পরিশোধ, চিকিৎসায় সহায়তা, কোনো শ্রমিক মারা গেলে দাফন বা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য সহায়তা, অক্ষম শ্রমিককে সহায়তা, দুর্ঘটনায় মৃত শ্রমিকের পরিবারকে সাহায্য করা ও মাতৃত্ব কল্যাণ খাতে সহায়তা করা হয়। কেন্দ্রীয় তহবিলের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কবলে পড়লে বা পেশাগত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে বা পেশাগত কারণে কাজ করতে অক্ষম হয়ে গেলে সুবিধাভোগী কল্যাণ তহবিল থেকে তার পরিবারকে ২ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়। একই পরিমাণ অর্থ পান কেউ চাকরিরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে বা দুর্ঘটনায় মারা গেলে বা অক্ষম হলে। এছাড়া অসুস্থ শ্রমিকদের চিকিৎসায়, পরিবারের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষার জন্য বৃত্তি দিতেও এ তহবিলের অর্থ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। ফাউন্ডেশনে সহযোগিতা চেয়ে দরখাস্ত করে মাসের পর মাসের ঘুরেও কোন সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সাহায্যপ্রার্থীরা। তবে শ্রমজীবী মানুষের প্রত্যাশা শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন শ্রমিকদের পাশে দাড়াবে এবং প্রয়োজনের সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে।

লেখক: কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন সম্পাদক, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন