• প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result
No Result
View All Result
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result

বছর জুড়ে আন্দোলনে শ্রমিকরা

সামছুল আরেফীন

skalyanad by skalyanad
আগস্ট ১৭, ২০২৩
in আর্কাইভ, গ্যালারি, ছবি, প্রবন্ধ/নিবন্ধ
0
বছর জুড়ে আন্দোলনে শ্রমিকরা
0
SHARES
0
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

২০২২ সালে জুড়েই দাবি আদায়ে রাজপথে থাকতে হয়েছে মেহনতি শ্রমজীবীদের। পালন করতে হয়েছে কর্মবিরতি, ধর্মঘটসহ নানা কর্মসূচি। কিছু কিছু বিষয়ে সরকারের শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তিদেরও হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসনের মারমুখি আচরণের মুখোমুখি হতে হয়েছে শ্রমিকদের। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বেই প্রতিবাদ মুখর হয়েছে শ্রমজীবীরা। করোনা পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতি যখন ঘুরে দাড়াতে চেষ্টা করছিল, ঠিক তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অনেক দেশের জন্য সংকটের কারন হয়ে দাড়িয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলেন, মজুরি হার নির্ধারণ নিছক অর্থনৈতিক বিষয় নয়, রাজনৈতিকও বটে। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে দেখা গেছে, শ্রমিকেরা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই মজুরি বৃদ্ধির দাবি বাস্তবায়ন করেছেন। এ ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়নের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক অবরোধ: বছরের শেষ দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক পরিবহন নেতাকে লাঞ্ছনার প্রতিবাদে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পরিবহন শ্রমিকেরা। ২০ ডিসেম্বর রাতে পরিবহন শ্রমিকেরা শহরের ভাদুঘর আন্তজেলা বাস টার্মিনালের সামনে সড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। পরিবহন শ্রমিকদের দাবি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আ. কুদ্দূস আন্তজেলা বাস-মালিক সমিতির লাইন পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনকে থাপ্পড় মেরেছেন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে পরিবহন ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসন এবং পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বৈঠকে দুঃখ প্রকাশ করেন পৌরসভার সিইও।

নারায়ণগঞ্জে পোশাক শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি: বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার এস এস ক্রিয়েটিভ স্টিজ পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। ১৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশের নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর প্রধান কার্যালয়ের সামনে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। বক্তারা বলেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে শ্রমিকেরা আজ দিশেহারা। চরম সংকটে তাঁরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বর্তমান বাজারে শ্রমিকেরা যে টাকা মজুরি পান, সেই টাকা দিয়ে মাসের ১৫ দিনও চলতে পারেন না। আধা পেট খেয়ে না খেয়ে কোনোরকমে বেঁচে আছেন। এ পরিস্থিতির মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জের এস এস ক্রিয়েটিভ স্টিজ কারখানার মালিক শ্রমিকদের তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে কারখানায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। এতে কারখানার দেড় শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীর না খেয়ে মরার অবস্থা তৈরি হয়েছে।

কালিয়াকৈরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ: বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। ১৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার মৌচাক এলাকার নিউ লাইন ক্লোথিংস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা কারখানার সামনের মহাসড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভের একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও লাঠিপেটা করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত তিন মাস ধরে নিউ লাইন ক্লোথিংস লিমিটেডের শ্রমিকদের বেতন বকেয়া আছে। এ ছাড়া কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পাঁচ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। কারখানা মালিক কর্তৃপক্ষ একাধিকবার বেতনের আশ্বাস দিলেও পরে নানা টালবাহানা করে বেতন বকেয়া রেখেছে। বেতন না দিয়ে মাঝেমধ্যে কারখানাও বন্ধ করে রাখছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে সকালে শ্রমিকেরা কারখানায় গেলে জানতে পারেন, কারখানা আবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বেতন পরিশোধ না করে কারখানা বন্ধ দেওয়ার কারণে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কারখানার সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট: মালবাহী ও যাত্রীবাহী সব ধরনের নৌযানশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণসহ ১০ দফা দাবিতে নভেম্বর মাসে সারা দেশে কয়েকদিন কর্মবিরতি পালন করে নৌযানশ্রমিকেরা। এ সময় দেশের সব কটি নৌবন্দরে যাত্রী পরিবহন, পণ্য খালাস ও ওঠা-নামা বন্ধ ছিল। এমন পরিস্থিতিতে নৌযান মালিকদের সংগঠনের একজন নেতা বলেন, লঞ্চ ব্যবসার মন্দার এই সময়ে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করা তাঁদের পক্ষে ‘অসম্ভব’।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের বরিশাল বিভাগীয় সভাপতি আবুল হাসেম বলেন, সরকার ও নৌযান মালিকেরা ২০১৬ সালে সর্বশেষ এ খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পুনর্র্নিধারণ করেছিল। এরপর কয়েক দফা বেড়েছে দ্রব্যমূল্য ও ভাড়া। কিন্তু শ্রমিকদের উন্নতি হয়নি। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা পুনর্র্নিধারণের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। কিন্তু সরকার ও মালিকপক্ষ এতে কর্ণপাত না করায় এখন বড় আন্দোলনের দিকে যেতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির মধ্যে ২৬২৮টি ছোট-বড় জাহাজে আটকা পড়ে ১৭ লাখ টন পণ্য।

ট্রেন শ্রমিকদের কর্মবিরতি : মধ্য সেপ্টেম্বরে চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে রেল শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে। এ কারনে চট্টগ্রাম থেকে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ছিল। এর আগেন চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকেরা।

চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে (সিজিপিওয়াই) ৪০ জন অস্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন। চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আন্দোলন করছেন তাঁরা। আন্দোলনরত শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রেন ছেড়ে যায়নি। এদিন চট্টগ্রাম থেকে ছয়টি পণ্যবাহী ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল। এর মধ্যে তিনটি ট্রেন কনটেইনারবাহী ছিল। আর দুটি ট্রেনে জ্বালানি তেল ও একটিতে গম পরিবহণের কথা ছিল।
কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া পয়েন্টসম্যান মোহাম্মদ রুমান বলেন, তিন মাস ধরে তাঁদের বেতন বন্ধ। বেতন পরিশোধের বিষয়েও কোনো আশ্বাস দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা কর্মবিরতি পালন করেছেন।

জুট মিল শ্রমিকদের আন্দোলন: সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে খুলনার শিরোমণি শিল্প এলাকায় বন্ধ থাকা বেসরকারি পাটকল মহসেন জুট মিলের শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা এককালীন পরিশোধের দাবিতে মিলমালিকের বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকেরা। বেসরকারি পাট সুতা বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মিছিল নিয়ে নগরের শেরেবাংলা রোড এলাকায় মিলের মালিক তাওহিদুল ইসলামের বাড়ি ঘেরাও করা হয়। এ সময় সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে বক্তারা শ্রমিক-কর্মচারীদের গ্র্যাচুয়িটি, পিএফসহ চূড়ান্ত পাওনাদি দ্রæত এককালীন পরিশোধের দাবি জানান। সমাবেশে শ্রমিকেরা বলেন, খুলনার শিরোমণি শিল্প এলাকার মহসেন জুট মিল ৯ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ২০১৩ সালে কৃত্রিম অর্থসংকট দেখিয়ে শ্রম আইনকে তোয়াক্কা না করে মালিকপক্ষ মিল বন্ধ করে দেয়, তবে শ্রমিকদের বকেয়া টাকা পরিশোধ করেনি।

বক্তারা বলেন, মিল বন্ধ হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৮২ জন শ্রমিক মৃত্যুবরণ করলেও তাঁদের পরিবার কোনো টাকা পায়নি। আরও বেশ কিছু শ্রমিক রয়েছেন, যাঁরা অসুস্থ ও অসহায় অবস্থায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিন যাপন করছেন। মিলের কাছে ৪ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীর প্রায় ১১ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।

পোশাক শ্রমিকদের বেতন ২৫ হাজার টাকা করার দাবি: জ্বালানি তেলের বাড়তি দাম প্রত্যাহার ও মজুরি বোর্ড গঠন করে পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গার্মেন্টস শ্রমিকরা। সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। তারা বলছেন, শ্রমিকেরা স্বল্প বেতনে কোনোরকমে দিন পার করেন। আবার কিছুদিন পরপর বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া শ্রমিকদের বসবাস করা এলাকায় সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে, কিন্তু শ্রমিকদের বেতন বাড়েনি। শ্রমিকরা অবিলম্বে পোশাকশ্রমিকদের বেতন ২৫ হাজার টাকা করার পাশাপাশি মহার্ঘ ভাতা ও পূর্ণাঙ্গ রেশনিংয়ের দাবি জানান।

নৌ শ্রমিকদের অবরোধ: সিলেটের জৈন্তাপুরে সারী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে নদীতে শতাধিক নৌকা আড়াআড়িভাবে রেখে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকেরা। শ্রমিকদের অভিযোগ, সারী নদী থেকে অবৈধ ও নিয়মবহির্ভূতভাবে খননযন্ত্র দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন করা হয়। আগষ্টের শেষ দিকে ১০টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত সারী নদীর ইন্দারজু এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকেরা। শ্রমিকেরা এসব বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধ, বাল্কহেড দিয়ে বালু–পাথর পরিবহন বন্ধ, নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সরকারি রয়্যালটি (বালু ও পাথরবোঝাই নৌকার টোল) আদায়ের দাবি জানান।

সারী নদী নৌকা শ্রমিকের সভাপতি আমির আলী বলেন, সম্প্রতি সারী নদীর তৃতীয় অংশের মামলাভুক্ত এলাকাগুলো ছাড়া বাকি এলাকাগুলো ইজারা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইজারা দেওয়া অংশগুলোতে বালু–পাথর না থাকায় মামলাভুক্ত এলাকা থেকে অবৈধভাবে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় অবৈধভাবে খননযন্ত্র দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন করছেন। এ ছাড়া বাল্কহেড দিয়ে বালু পরিবহন করা হচ্ছে এবং স্থানীয় নৌকাশ্রমিকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে শ্রমিকেরা নদীপথ অবরোধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের পেটাল পুলিশ: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায় মুনলাক্স অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় বিক্ষোভ করেন কারখানাটির শ্রমিকেরা। মধ্য আগষ্ট কারখানাটির সামনে বকেয়া বেতন ও কারখানা চালুর দাবিতে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করলে তাঁরা নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

কারখানার শ্রমিকেরা বলেন, কারখানাটিতে তিন শতাধিক শ্রমিক কাজ করতেন। জুলাই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা আন্দোলন করে আসছিলেন। আজ সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পান তাঁরা। এ সময় কারখানার সামনে বিক্ষোভ করলে পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করেন।

চা শ্রমিকদের আন্দোলন: ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে পুরো আগস্টে জুড়ে আন্দোলন করে চা-বাগানের শ্রমিকেরা। তবে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর শ্রমিকদের ১৭০ টাকা মজুরি দিতে রাজি হন বাগানমালিকেরা। এরপর চা-বাগানগুলোয় চলমান ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যাওয়ার ঘোষণা দেন চা-শ্রমিকেরা। তবে শ্রমিক সংগঠনগুলো বলছে, ১৭০ টাকা মজুরি বর্তমান বাজারদরের তুলনায় যথেষ্ট নয়।

নারী চা-শ্রমিক শ্যামলী ভুমিজ বলেন, আমরা এত দিন পেটের দায়ে আন্দোলন করেছিলাম। বাজারে সবকিছুর দাম বেড়েছে। ১২০ টাকা দিয়ে সংসার চালানো খুব কষ্ট হতো। আমাদের মজুরি মাত্র ১৪ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বাগানমালিকেরা। আমরা সেটা মানিনি, আন্দোলন করেছি।

বৈঠক শেষে জানানো হয়, চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মজুরি নির্ধারণের পাশাপাশি বার্ষিক ছুটি, বেতনসহ উৎসব ছুটি আনুপাতিক হারে বাড়বে। অসুস্থতাজনিত ছুটি বাড়ানো হবে। চিকিৎসা ব্যয়ের চাঁদা মালিকপক্ষ বহন করবে। ভবিষ্য তহবিলে নিয়োগকর্তার চাঁদা আনুপাতিক হারে বাড়বে। এ ছাড়া ভর্তুকি মূল্যে রেশন–সুবিধা বাড়ানো হবে। চিকিৎসাসুবিধা, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পেনশন, চা-শ্রমিকদের পোষ্যদের শিক্ষা বাবদ ব্যয়, রক্ষণাবেক্ষণ, গোচারণভূমি বাবদ ব্যয়, বিনা মূল্যে বসতবাড়ি ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ শ্রমিককল্যাণ কর্মসূচি এবং বাসাবাড়িতে উৎপাদন বাড়বে।

অনেকেই বলে থাকেন, চা–শ্রমিকেরা অন্যান্য অনেক সুবিধা পায় যে এত কম টাকার মজুরি পুষিয়ে যায়। তো কী কী সেই সুবিধা? প্রথমেই আসে বাসস্থান, বিদ্যুৎ, পানি, স্যানিটেশন, রেশন, শিক্ষা, বোনাস ইত্যাদি। একটু গভীরে গেলেই দেখা যায়, এ সব কটিই একরকম ভ্রান্ত ধারণা।

প্রতিদিন ১২০ টাকা হারে মজুরি শর্ত সাপেক্ষ। এক দিনে ২৩ কেজি পাতা তুললে ১২০ টাকা মজুরি, ১ কেজি বেশি তুললে ৪ টাকা ২৫ পয়সা বেশি পাওয়া যাবে, আর এক কেজি কম তুললে ৫ টাকা ২০ পয়সা কাটা যাবে। এবার আসা যাক রেশনে। রেশনের ক্ষেত্রে পরিবারের স্বামী কাজ করলে ৩ কেজি ২০০ গ্রাম আটা বা চাল পাবে, সে ক্ষেত্রে স্ত্রী পাবে ২ কেজি ৮০০ গ্রাম, ১২ বছরের নিচে দুজন শিশু ২ কেজি ৪০০ গ্রাম করে রেশন পাবে। কিন্তু স্ত্রীর নামে কাজ থাকলে স্বামী রেশন পাবে না। আর ১২ বছরের উপরে শিশুদের জন্য কোনো রেশন নেই। তাহলে কি দাঁড়াল? যে পরিবারে ধরুন স্ত্রীর নামে কাজ আর কোনো ছোট শিশু নেই, তারা মূলত রেশন পাচ্ছে ৩ কেজি ২০০ গ্রাম। তাদের বৃদ্ধ বাবা–মা এবং আরও ছেলেমেয়ে থাকতে পারে, যারা মূলত ওই ৩ কেজি ২০০ গ্রাম রেশনের ওপর নির্ভরশীল। যে শিশুকে মা ২০০৭ সালে শুধু একটা ডিম কিনে দিত (কারণ তখনো তার মুরগি কেনার সামর্থ্য ছিল না) সে এখন ১২০ টাকা থেকে ১৫ টাকা দিয়ে কি একটি ডিম কিনে দিতে পারছে?

বন্ধ টেক্সটাইল মিল চালুর দাবি: বন্ধ করা পাট, সুতা, বস্ত্রকল অটো মেশিনসহ উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতির মাধ্যমে আধুনিকায়ন করে চালু করে চাকরিচ্যুতদের মধ্যে কর্মক্ষম শ্রমিকদের কাজে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান শ্রমিক নেতারা। সরকারি অধিগ্রহণ করা, হস্তান্তরিত ও ব্যক্তি মালিকানাধীন পাট, সুতা ও বস্ত্রশিল্প শ্রমিকদের আইনসম্মত বকেয়া পাওনা পরিশোধ করারও দাবি ওঠে আলোচনা সভায়। অপর দিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন পাট, সুতা ও বস্ত্রশিল্পশ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের রোয়েদাদ প্রকাশ করে দ্রুত বাস্তবায়ন, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং প্রথা চালু এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের জীবনমানের উন্নতি নিশ্চিত করার দাবি জানান শ্রমিক নেতারা।

সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মছিউদদৌল্লা বলেন, টেক্সটাইল মিল লাভজনক ছিল। অথচ লোকসানের অজুহাতে মিলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিরাষ্ট্রীকরণের সুফলের কথা বলা হলেও তা হয়নি। সব সময় শ্রমিক নেতাদের দোষ দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত কোনো শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে কোনো সরকারই কিছু প্রমাণ করতে পারেনি। মছিউদদৌল্লা বলেন, বিভিন্ন বন্ধ কলে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। এ শিল্পকে চালু করার জন্য আবার রাজপথে আন্দোলনে নামতে হবে।

ট্রাকচালক শ্রমিকদের আন্দোলন: জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানা থেকে জুনে দুই দিন দেশের ২০ জেলায় ট্রাকে সার পরিবহন বন্ধ ছিল। বিআরটিসির ট্রাকে সার পরিবহনের প্রতিবাদে তারাকান্দি ট্রাকচালক শ্রমিক ইউনিয়ন ধর্মঘটের ডাক দেওয়ায় সার পরিবহন বন্ধ হয়।

জানা গেছে, যমুনা সার কারখানা থেকে প্রায় ৩০ বছর ধরে দেশের ২০ জেলায় স্থানীয় ট্রাকে পরিবেশকদের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে সার পরিবহন করা হয়। তবে যমুনা সার কারখানার কতিপয় কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প করপোরেশনের (বিসিআইসি) কর্মকর্তাদের যোগসাজশে স্থানীয় ট্রাকে সার পৌঁছানোর কার্যক্রম ব্যাহত করতে বি আরটিসির সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে।

গাজীপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ: মে মাসের শেষ দিকে বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। এ সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এক ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এপ্রিল মাসের বেতন ও পবিত্র ঈদুল ফিতরের বোনাস না দিয়েই কারখানা কর্তৃপক্ষ ঈদের আগে কারখানা বন্ধ করে দেয়। এখন পর্যন্ত উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়নি। ঈদের পর প্রতিদিনই শ্রমিকেরা কারখানার প্রধান ফটকে এসে ফিরে যাচ্ছেন। সকালে সাড়ে আটটায় শতাধিক শ্রমিক কারখানার গেটের সামনে অবস্থান নেন। সকাল নয়টার দিকে তাঁরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। পুলিশ সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ও লাঠিপেটা করে।

বন্ধ পাট ও চিনিকল চালুর দাবি: বন্ধ পাটকল ও চিনিকল পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, প্লাস্টিক ও পলিথিন পণ্যের সম্পূর্ণ বিকল্প হিসেবে পাটপণ্য ব্যবহার করা সম্ভব। আর বেসরকারি রিফাইনারি ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যও চিনিকলগুলো চালু রাখা প্রয়োজন। ফলে এসব কারখানা চালুর জন্য আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে অর্থ বরাদ্দেরও দাবি জানান তাঁরা। মে মাসে আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, লোকসানের অজুহাতে সরকারি পাটকল বন্ধ করে দেওয়া হলেও বেসরকারি পাটকলের সংখ্যা প্রতিবছর বাড়ছে। ২০২০ সালে ২৬টি সরকারি পাটকল বন্ধ করে দেওয়া হলেও দেশে বেসরকারি পাটকলের সংখ্যা বেড়েএখন ২৮১টি। আর একই বছরের শেষের দিকে ছয়টি রাষ্ট্রীয় চিনিকল বন্ধ করে দেয় সরকার।

পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট: এপ্রিলে টানা তিন দিন রংপুর-ঢাকা রুটে বাস চলাচল আংশিক বন্ধ ছিল। বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে ঢাকাগামী বাসের চালকসহ রংপুরে কয়েকটি পরিবহনের শ্রমিকদের কর্মবিরতি পালন করে। শ্রমিকদের কর্মবিরতি জেনেও অনেক যাত্রী বাসস্ট্যান্ডে এসে বাস ছাড়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। যে যাত্রীদের ঢাকা যাওয়া খুব প্রয়োজন, তাঁরা বিকল্প উপায়ে বা ভেঙে ভেঙে ঢাকায় যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

নারায়ণগঞ্জে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ: মার্চের শেষ দিকে বকেয়া বেতনের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। সদর উপজেলার ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকায় রূপসী গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। সড়ক অবরোধের কারণে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে আছে। এতে ওই সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

রূপসী গার্মেন্টসে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তবে কারখানাটি শ্রমিকদের ফেব্রæয়ারি ও মার্চ মাসের বেতন বকেয়া রেখেছে। মাস শেষে বেতন পরিশোধ না করায় শ্রমিকেরা কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা কারখানা থেকে বের হয়ে রাস্তায় নেমে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়ক অবরোধ করেন।

টঙ্গীতে পোশাক শ্রমিকদের লাঠিপেটা: ১ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের টঙ্গীতে কাজে এসে কারখানা বন্ধ পেয়ে বিক্ষোভ করেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। টঙ্গীর বিসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভে বাধা দিলে কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শ্রমিক পুলিশ মিলে অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভকারী শ্রমিকেরা জানান, তাঁরা বিসিকের ত্রিভলী অ্যাপারেলস কারখানায় কাজ করেন। তাঁদের প্রায় ২ হাজার ১০০ জন শ্রমিক রয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৯ জানুয়ারি কারখানার এক নারী শ্রমিককে মারধর করেন এক কর্মকর্তা। এ নিয়ে ওই কর্মকর্তার বিচারসহ ১২টি দাবি উত্থাপন করেন শ্রমিকেরা। পরবর্তী সময় ওই কর্মকর্তাকে কারখানা থেকে বের দিলেও দাবিগুলো মেনে নিচ্ছেন না তাঁরা। সকালে হঠাৎ কাজে এসে দেখেন কারখানা বন্ধ। এরপর শ্রমিকেরা এক হয়ে কারখানা খোলার দাবিতে রাস্তায় নামলে পুলিশ লাঠিপেটাসহ গুলি ছুড়তে থাকে। এতে তাঁদের অনেকেই আহত হন। পরবর্তী সময় তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

মিরপুরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ: জুনে কয়েক দফা রাজধানীর মিরপুরে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনরত শ্রমিকরা ইট-পাটকেল ছুড়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সকাল থেকে মিরপুর-১৪ ও কচুক্ষেত এলাকায় রাস্তায় নামে পাঁচটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। শ্রমিকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। যদিও পরে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে মিরপুর-১৪ ও কচুক্ষেত এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শ্রম ভবনে মিরপুরে গার্মেন্টসে শ্রম অসন্তোষ নিরসনে ত্রিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মজুরী বোর্ড গঠনের আশ্বাস দেয়া হয়। তৈরি পোশাক খাতে সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর ন্যূনতম মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন করা শুরু হয়। সেই কাঠামোতে ন্যূনতম মজুরি ছিল আট হাজার টাকা। প্রতিবছর ৫ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির পর তা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৮৪ টাকা।

দেশে দেশে মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন: করোনার অভিঘাতে বিশ্বজুড়ে সরবরাহব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। এই খাতের কর্মীদেরও ব্যাপক চাপ নিতে হয়েছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মূল্যস্ফীতি। তবে এত চাপ তাঁরা আর সহ্য করতে রাজি নন। এখন তাঁরা দেশে দেশে মজুরি বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে ধর্মঘট ডাকছেন।

অস্ট্রেলিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের শ্রমিক থেকে শুরু করে পেরুর ট্রাক ড্রাইভার এমন অনেক শ্রমিক এখন মজুরি বৃদ্ধির দাবি করছেন। ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ইউরোপের বিমান পরিবহন কোম্পানি রায়ানেয়ারের কর্মীরা। আবার সেই সঙ্গে প্যারিস ও লন্ডন বিমানবন্দরের কর্মীরাও ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। তাঁদের কাজ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা কাজ বন্ধ করলে থমকে যেতে পারে বিশ্ব অর্থনীতি। বলা হচ্ছে, এখনকার মূল্যস্ফীতি ঠিক চাহিদা বৃদ্ধিজনিত নয়, সরবরাহজনিত। সে কারণে তাঁরা ধর্মঘট করলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে। আলোচনার টেবিলে এই শ্রমিকেরা তাই বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন। ইকোনমিক টাইমস সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে। নরওয়ের প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের শ্রমিকেরা ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছিলেন। সেই খবরে ইউরোপের বাজারে রীতিমতো ভীতির সঞ্চার হয়েছিল।

আইএলওর তথ্যানুসারে, গত দুই বছরে বিশ্বের প্রায় সবখানেই শ্রমিকদের আয় কমেছে। ২০২০ সালে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর শ্রম আয় কমেছে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ আর ২০২১ সালে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০২০ ও ২০২১ সালে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে শ্রমিকদের মজুরি কমেছে ৭ দশমিক ৪ ও ২ দশমিক ৭ শতাংশ। উচ্চমধ্যম আয়ের দেশের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৭ দশমিক ১ ও ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০২০ সালে উচ্চ আয়ের দেশের মানুষের আয় কমেছে ২ দশমিক ৫, তবে ২০২১ সালে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি। ফলে এসব মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশে শ্রমিক আন্দোলন পুনর্গঠিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বড় বড় করপোরেশন, যেমন স্টারবাকস ও অ্যামাজন ডটকমের মতো প্রতিষ্ঠানে শ্রম ইউনিয়ন শক্তিশালী হচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশটির রেলওয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে সরকারের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। এতে দেশটির পরিবহন খাতে স্থবির হয়ে পড়তে পারে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই সংকট নিরসনে একটি প্যানেল গঠন করেছেন। এই প্যানেল সংকট নিরসনের লক্ষ্যে আগামী আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে শ্রমিকদের জন্য নতুন চুক্তির খসড়া পেশ করবে।

ব্রিটেনের অবস্থাও যুক্তরাষ্ট্রের মতো। ট্রেনচালকেরা বলেছেন, ৩০ জুলাই তাঁরা ধর্মঘট করবেন এবং পরিবহনশ্রমিকেরাও আগামী সপ্তাহে ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি করবেন। এতে শুধু যাত্রীদের কষ্ট হবে, তা নয়; বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কনটেইনার জাহাজ কোম্পানি মেয়ার্সক বলেছে, এতে পণ্য পরিবহন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার জাহাজশ্রমিকেরাও কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করছেন। তাঁরা ৩০ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি এবং কাজের চাপ হ্রাসের দাবি করেছেন।

  লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

Previous Post

ব্যারিস্টার কোরবান আলী: প্রেরণায় ভাস্বর এক কিংবদন্তি

Next Post

আধুনিক শিল্প উন্নতির যুগে শ্রমিক সমস্যা ও ইসলামী সমাধান (১ম পর্ব)

Next Post
আধুনিক শিল্প উন্নতির যুগে শ্রমিক সমস্যা ও ইসলামী সমাধান (১ম পর্ব)

আধুনিক শিল্প উন্নতির যুগে শ্রমিক সমস্যা ও ইসলামী সমাধান (১ম পর্ব)

সর্বশেষ সংযোজন

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

by skalyanad
এপ্রিল ১৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমজীবী ভাইবোনদের মাঝে ইসলামের সুমহান আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে। আসন্ন...

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

by skalyanad
এপ্রিল ৮, ২০২৪
0

দেশে ও প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ, দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।...

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

by skalyanad
মার্চ ২৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষরা সর্বক্ষেত্রে অধিকার বঞ্চিত। তাদের অধিকার আদায়ের...

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৭, ২০২৪
0

আসন্ন ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধে যে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে তা নিরসনের জন্য রাষ্ট্র ও মালিকদের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করার...

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৬, ২০২৪
0

এদেশের শ্রমজীবী মানুষের সস্ত্রশ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনেছে। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ শ্রমজীবী মানুষরা পায়নি। রাজনৈতিক বিভেদ স্বাধীনতাকে...

  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
  • সাংগঠনিক কাঠামো
  • শাখা সংগঠন
  • ট্রেড ইউনিয়ন
  • সংবাদ
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
  • প্রকাশনা
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
  • যোগাযোগ

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.

Design and Developed by Bijoylab IT| Contact:+01818 650864
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.