• প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result
No Result
View All Result
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result

পোশাক শিল্পে অস্থিরতা ন্যায্য মজুরি সমাধান

আশীষ মাহমুদ

skalyanad by skalyanad
জানুয়ারি ৩১, ২০২৪
in আর্কাইভ, গ্যালারি, ছবি, প্রবন্ধ/নিবন্ধ
0
পোশাক শিল্পে অস্থিরতা ন্যায্য মজুরি সমাধান
0
SHARES
0
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

(ন্যায্য মজুরির দাবি করতে গিয়ে নিহত গার্মেন্টস শ্রমিক, রাসেল, আঞ্জুয়ারা ও জালাল উদ্দিন-এর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।)

১
সায়েলা খাতুন। স্বামী ২ সন্তানসহ থাকেন রাজধানীর মিরপুরে। স্বামী পেশায় ভ্যান চালক। সন্তানরা স্থানীয় কওমী মাদরাসায় নুরানি বিভাগে পড়াশোনা করছে। সায়েলা মিরপুরের একটি গার্মেন্টেসে অপারেটর পদে কর্মরত। করোনার সময় গ্রামের বাড়ি চলে গেলেও টিকতে না পেরে আবার ফিরে এসে পুরানো গার্মেন্টেসে চাকরি নিয়েছেন। তার বেতন-ভাতা সর্বসাকুল্যে ১৩ হাজার টাকা।

আবু কাওসার। একটি গার্মেন্টেসের কাটিং মাস্টার। ঢাকায় স্ত্রী ও ৩ ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। সন্তানরা প্রত্যেকে স্কুলে পড়াশোনা করছে। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। তার বেতন সর্বসাকুল্যে ১৯ হাজার টাকা।

উভয়ের কাছে একটি মাত্র প্রশ্ন ছিল! জীবন কীভাবে চলছে? উভয়ে উত্তর এড়িয়ে গেলেন। বুঝতে কষ্ট হলো না কখন মানুষ কিছু প্রশ্ন শুনে থমকে যায়। কখনো মানুষের অন্তর ফেঁটে কান্না আসে কিন্তু সেই কান্নার কোনো রং থাকে না। কোনো শব্দ থাকে না।

২
৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ কথা জোর দিয়ে বলা যাবে না। আবার যা সম্পদ আছে তার ব্যবহার আজও আমরা করতে পারিনি। আদোও করতে পারবো; এমন কোনো সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি না। রাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে জোর গলায় নিত্য নতুন শব্দের মোড়কে অনেক কথা বলতে পারলেও এখন পর্যন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলন এবং ব্যবহার করার উপযোগী জনশক্তি তৈরি করতে দেশ যে ব্যর্থ হয়েছে; তা দিবালোকের মত স্পষ্ট।

দেশের এই দুর্দিনে রাষ্ট্রযন্ত্র সচল রাখার জন্য যে কয়টি শিল্প খাত সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে, ‘তৈরি পোশাক শিল্প’ তার সবার শীর্ষে। যদিও শুরুর দিকে পোশাক শিল্পের যাত্রা হয়েছিল অপ্রচলিত রপ্তানি খাত হিসাবে। স্বল্প পরিসর থেকে শুরু হওয়া পোশাক শিল্প থেকে দেশের রপ্তানি আয় এখন ৮৪ শতাংশ। অথচ মাত্র ৪৫ লাখ জনশক্তি এ খাতে নিয়োজিত। অর্থনীতিকে মজবুত ভিত্তি দেওয়া এই শিল্প দেশের মুদ্রাভাণ্ডারকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করে যাচ্ছে।

পোশাক শিল্পকে কেন্দ্র করে দেশের ব্যাংক-বীমা, হোটেল-পর্যটন, শিপিং, আবাসন, প্রসাধনীসহ নানা ব্যবসার বিকাশ ঘটেছে। দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড এই খাত বিশ্ব বাজারে সুনামের সাথে জয় করেছে ক্রেতাদের মন। সময়ের সাথে সাথে ক্রেতাদের চাহিদা বেড়েছে। আজ বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্প বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ (একক দেশ হিসাবে)। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) এর ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্ট্যাটিস্টিক্যাল রিভিউ ২০২৩’ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতের আরেক শীর্ষ দেশ ভিয়েতনাম থেকে ভালো করেছে। ভিয়েতনামের কাছে কিছুদিন আগে দ্বিতীয় স্থান হারিয়ে ফেললেও ২০২২ এ আবার পুনরুদ্ধার করেছে। প্রতিবেদন মতে বাংলাদেশ ২০২২ সালে ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। যা বৈশ্বিক রপ্তানির ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০২১ সালে যা ছিল ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০২২ সালে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ। অপর দিকে ভিয়েতনাম রপ্তানি করেছে ৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। বৈশ্বিক রপ্তানির যা ৬ দশমিক ১ শতাংশ। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে যথারীতি শীর্ষে অবস্থান করছে চীন।

৩
কুপির নিচে যেমন অন্ধকার। ঠিক তেমনিভাবে তৈরি পোশাক শিল্পের দ্বারা বাংলাদেশের অর্থনীতির উজ্জ্বল আলো জ্বললেও অন্ধকারে রয়েছে গেছে এই পেশার মূল কারিগর তথা শ্রমিকরা। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অর্ডারও যাদের জীবনে স্বস্তি বয়ে আনতে পারেনি। নিশ্চিত করতে পারেনি স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। প্রতিনিয়ত জীবন যুদ্ধে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা পরাজয় মেনে নিয়ে ঘরে ফিরছে। তাদের হাহাকার শোনার জন্য কেউ নেই। রাষ্ট্র তো দুর্লভ অতিথি পাখি। ফলে কোনো মতে জীবন ধারণ করার জন্য তারা মালিকদের অত্যাচার নিপীড়ন-নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করে যাচ্ছে। আজ বিশ্বের নামী-দামী মার্কেটের হ্যাঙারে ঝুলানো টিশার্ট-ডেনিম ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগ দেখে মন যতটা উল্লাসিত হয় ততটাই গলির অন্ধকারে হারিয়ে যায়।

ইতোমধ্যে উল্লেখ করেছি তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ একক দেশ হিসাবে বিশ্বের দ্বিতীয় রপ্তানিকারক দেশ। দুঃখজনক হলেও সত্য দ্বিতীয় রপ্তানিকারক দেশ শ্রমিকদের পারিশ্রমিক প্রদানের ক্ষেত্রে শীর্ষ দশে নেই! পোশাক রপ্তানির শীর্ষ দেশ চীন। চীনে পোশাক শ্রমিকের ন্যূনতম বেতন-ভাতা বাংলাদেশী টাকায় ২৪ হাজার ৮৯০। ভিয়েতনামে ১৫ হাজার ৬৬০ টাকা, তুরস্কে ২৯ হাজার ১৬৫ টাকা, মালয়েশিয়ায় ২৫ হাজার ৯৩৫ টাকা, কম্বোডিয়ায় ২৪ হাজার ২৮১ টাকা এবং ফিলিপাইনে ২৩ হাজার ১৮০ টাকা। তৈরি পোশাক খাতের দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ হিসাবে যতটা গর্ব করতে ইচ্ছে করে ততটাই যেন হারিয়ে, যখন দেখি যাদের রক্তঘামের পরিশ্রমের বদৌলতে পোশাক শিল্প আজ মহিরুহ; সেই শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন সর্বসাকুল্যে মাত্র ৮ হাজার টাকা! যা অন্যান্য দেশের তুলনায় যৎ সামান্য।

তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের সর্বশেষ মজুরি ঘোষণা করা হয়েছিল ২০১৮ সালে। তখন এক বিভীষিকাময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। শ্রমিকদের দাবি ছিল ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা। শ্রমিকরা দাবির স্বপক্ষে রাজধানীসহ শিল্পাঞ্চল এলাকায় জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। মালিকরা বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের দিয়ে আন্দোলন থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করেছিল। তারা শ্রমিক নেতাদের বাসায় বাসায় নানা ধরনের উপঢৌকন পাঠিয়েছিল। কিন্তু শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে মালিকদের এই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। তখন শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে মালিকরা মাত্র ১ হাজার ৬০ টাকা বাড়িয়ে ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব করেছিল। শ্রমিকরা যখন এই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিল তখন মালিক ও রাষ্ট্রযন্ত্র এক হয়ে রাতের আঁধারে শ্রমিক ও শ্রমিক নেতাদের গণগ্রেফতারে নেমে আন্দোলন স্তমিত করে দেয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের মন জয় করার জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী আরও ১ হাজার টাকা বৃদ্ধি করে সর্বসাকুল্যে মজুরি ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেন।

৪
সর্বশেষ মজুরি ঘোষণার সময় ডলার রেট ছিল প্রায় ৮৫ টাকা। সেই হিসাবে শ্রমিকরা ৯৪ ডলার বেতন ভাতা পেয়েছিল। ২০২৩ সালে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে ১২ হাজার ৫০০ টাকা। মালিকদের দাবি বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে ৫৬ শতাংশ। মালিকদের দাবি পুরোটাই ধোঁকাবাজি। প্রথমত এখন ডলার রেট প্রায় ১১২ টাকা। সেই হিসাবে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হয়েছে মাত্র ১৮ ডলার। অন্যদিকে ২০১৮ সালে মজুরি ঘোষণার পর প্রতি বছর মূলবেতনের ৫ শতাংশ বৃদ্ধির পাওয়ার কথা। সেই হিসাবে গ্রেডভেদে শ্রমিকদের বাস্তব বেতন বেড়েছে ২৫-২৮.৮৮ শতাংশ। বেতন বৃদ্ধির এই চিত্র ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সাথে সংস্থাটি বেতন কাঠামো পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।

দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিক এবং প্রায় সকল শ্রমিক সংগঠন; এমনকি সরকার সমর্থক শ্রমিক সংগঠনগুলো মনে করছে শ্রমিকদের বেতন কোনোভাবেই ২৩ হাজার টাকা নিচে হওয়া বাঞ্চনীয় নয়। করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বের কিছু দেশ কৃত্রিম দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। যার প্রভাব পড়েছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে। এসব দেশের মানুষরা সীমাহীন কষ্ট ভোগ করছে। বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম নয়। এমন অবস্থায় দেশের প্রতিটি খাতের শ্রমিকরা বেতন-ভাতা বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছে। শ্রমিকদের দাবি কোনো খাতেই আমলে নেওয়া হয়নি। দেশের বৃহৎ খাত তথা পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্য শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার বাধ্যবাধকতা ৫ বছর পরপর। সেই আইনের খাতিরে সরকার এ বছর ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠন করেছে। যে বোর্ডের অধিকাংশ সদস্যই আবার সরকার ঘনিষ্ঠ।

সুতরাং শ্রমিকরা আগেই জানতো, এই বোর্ড অতীতের মতো তাদের ঠকিয়ে দিবে। তাই শ্রমিকরা ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য আগে থেকেই মাঠে ছিল। শ্রমিকদের অনুমান মিথ্যা হয়নি। শ্রমিকদের আন্দোলনের তেজ দেখে মালিকরা পাঁচ তারকা হোটেলে বিশাল মিটিং আয়োজন করে অপারগতা ও সামর্থ্যহীনতার গাল গল্প শুনিয়েছে। কেউ কেউ আগ বাড়িয়ে হুংকার দিয়েছে, শ্রমিকরা কাজে না ফিরলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার। সেদিন মালিকদের শীর্ষ সংগঠনের এক নেতা বলেছেন, ‘আপনারা (সরকারি কর্মচারীরা) কালকে ঘুস বন্ধ করেন, আমরা পোশাক শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়ে দেবো’ (আজকের পত্রিকা, ২ নভেম্বর ২০২৩)। এই মালিক প্রকাশ্যে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুললেও তার কথার প্রত্যুত্তরে রাষ্ট্র কিংবা দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গরা একটি কথা বলেননি। আমি এতে আশ্চর্য না হয়ে পারি না। অবশ্য মালিকের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ নেই। কারণ আজ ব্যবসায়ী-মালিকদের হাতে তো রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের হর্তাকর্তারা বন্দি। আজ তারাই সর্বেসর্বা। তাইতো রাষ্ট্র শক্তিশালী মালিকদের নিকট করুণভাবে আত্মসমর্পণ করে আবারও দায়সারাভাবে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করেছে ১২ হাজার ৫০০ টাকা। আর মজুরি ঘোষণার জন্য এমন সময় বেছে নেওয়া হয়েছে, যখন দেশের মানুষের পুরো দৃষ্টি থাকবে জাতীয় নির্বাচনের মত গুরুত¦পূর্ণ ইস্যুতে। শ্রমিকদের দিকে নজর দেওয়ার সময় কেউ পাবে না।

৫
দেশে আজকে চরম মুদ্রাস্ফীতি চলছে। সরকারি সংস্থার হিসাব মতে যা ৮.৩৭ শতাংশ এবং খাদ্যের দিকে যা ৭.৫৬ শতাংশ। যদিও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর মতে মুদ্রাস্ফীতি ১২-১৫ শতাংশ। অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি বাণিজ্য সংস্থা টিসিবির দাম পর্যালোচনা করে দেখিয়েছেন, ‘চালের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ, ডাল ১২০ শতাংশ, আটা ৮৮ শতাংশ, আলু ৮০ শতাংশ, খোলা সয়াবিন ৯৫ শতাংশ, লবণ ৬৮ শতাংশ, ডিম ৬৭ শতাংশ, দুধ ১০০ শতাংশ, চিনি ১৮০ শতাংশ, ব্রয়লার মুরগি ৪৮ শতাংশ এবং মাছ ১০০ শতাংশ। এই অবস্থায় ন্যূনতম মজুরির আয়ের একটি পরিবারের মাসিক ২০০ ক্যালরির জন্য ব্যয় করতে হয় ২৩ হাজার টাকা’ (প্রথম আলো, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩)।

আরেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর ডায়ালগ’ (সিপিডি)-এর এক গবেষণায় উঠে এসেছে, ‘ঢাকায় বসবাসরত ৪ সদস্যের একটি পরিবারের জন্য মাসিক খাদ্য ব্যয় ২২ হাজার ৬৬৪ টাকা’ (প্রথম আলো, ২৭ মার্চ ২০২৩)। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)-এর মতে এই খরচ ১৪ হাজার টাকা। তবে সব গবেষণায় দাবি করা হয়েছে অন্যান্য খরচ মিলিয়ে একটি ৪ সদস্যের পরিবারের মাসিক ন্যূনতম ব্যয় ৪০ হাজার টাকার বেশি।

এই দুর্দিনে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন কোনোভাবেই ১২ হাজার ৫০০ টাকা হতে পারে না। অথচ কম গুরুত্বপূর্ণ খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন পোশাক শ্রমিকদের তুলনায় দ্বিগুণ। রাষ্ট্রের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন ১৬ হাজার ৯৫০ টাকা। ব্যাংকের পরিচ্ছন্নাকর্মী-পিয়নসহ নিম্নপদের কর্মচারীদের বেতন ২৪ হাজার টাকা। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের স’মিলের শ্রমিকরা গড়ে ১৮ হাজার টাকা পান। জাহাজভাঙা খাতের শ্রমিকরা ১৬ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। কিন্তু পোশাক শ্রমিকদের আটকে রাখা হয়েছে চিরচেনা বৃত্তে।

৬
শ্রমিকরা কি মালিক হতে চায়? নাকি মালিকদের মত বিলাসী জীবন চায়? দুটি প্রশ্নের উত্তর ‘না’। শ্রমিকরা কোনো দিন স্বপ্ন পর্যন্ত দেখে না তারা মালিক হবে কিংবা মালিকদের মত করে বিলাসী জীবন অতিবাহিত করবে। তারা চায় পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু ভালো থাকতে। শহরের ঝুপড়ি ঘরে না থেকে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে থাকতে চায়। অনাহারে অর্ধাহারে না থেকে পরিশ্রমের বিনিময়ে পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিতে চায়। রোগে আক্রান্ত হলে নিজ খরচে চিকিৎসা করতে চায়। সন্তানরা রাষ্ট্রের জন্য যেনো বোঝা না হয় সে জন্য সন্তানদের মানসম্মত শিক্ষায় দিক্ষিত করতে চায়। তারা চায় না তাদের মৃত্যুর পর কাফনের কাপড়ের জন্য পরিবার অন্য মানুষের কাছে হাত পাতুক।

শ্রমিকদের চাওয়া খুব সামান্য। আর তাদের সামান্য চাওয়ার মধ্যে কোনো অন্যায় আবদার নেই। মালিকরা বিনিয়োগ করেছে বলে শ্রমিকরা কাজ পেয়েছে একথা যেমন ধ্রুব সত্য। ঠিক একইভাবে সত্য শ্রমিকরা নিষ্ঠার সাথে আপন দায়িত্ব পালন করছে বলে আজকে মালিকরা দ্রুত উন্নতি করতে পেরেছে। এখন মালিক যদি শ্রমিককে ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেয়, তাহলে পোশাক শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে না। বরং শ্রমিকরা খুশি মনে মালিকের আয় বৃদ্ধিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। তারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মালিকের ব্যবসা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।

আর শ্রমিকরা অসন্তুষ্ট হলে বারংবার এ খাতে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। শ্রমিকরা কারখানা ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসবে। মালিকদের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশের গুলি-টিয়ারশেলের আঘাতে অতীতের ন্যায় আরও আঞ্জুয়ারা, রাসেল ও জালালরা অকালে ঝড়ে পড়বে। অসংখ্য শ্রমিক পুলিশের নির্বিচার লাঠিচার্জে পঙ্গুত্ববরণ করবে। মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে অনেকের ঠাই হবে কারাগারে। এতে হয়ত সাময়িক আন্দোলন দমে যাবে কিন্তু যে বিষ বৃক্ষের সূচনা হবে তা একদিন মালিকদের ঘায়েল করবে।

সেদিন দেখতে না হলে, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিন। তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করুন। তাদেরকে আপন স্বজনের ন্যায় দেখুন। আশা করা যায় মালিক-শ্রমিক সম্প্রীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে। সকল শোষণ-বঞ্চনার অবসান হবে। নির্যাতন-নিপীড়ন ও কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই নামক শব্দগুলো অভিধান থেকে হারিয়ে যাবে।

সেদিন সায়েলা, কাওসারদের চোখে-মুখে কান্না নয়, প্রশান্তির হাসি ফুটে উঠবে। এজন্য শুধু চাই মালিকদের একটু আন্তরিকতা ও পরম ভালোবাসা। শ্রমিকরা মালিকদের ভালোবাসার মূল্য ঠিকই দিবে। মালিক-শ্রমিক মিলে গড়ে উঠবে সত্যিকার বাংলাদেশ।

এটাই হবে স্বাধীনতার সার্থকতা। সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ। এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
ইমেইল : mahmudashis@yahoo.com

Previous Post

শ্রমিক বার্তা | সপ্তম বর্ষ | সংখ্যা ২৮

Next Post

শ্রমিক অসন্তোষ: রাজনৈতিক দলগুলোর দুঃখজনক নিষ্ক্রিয়তা

Next Post
শ্রমিক অসন্তোষ: রাজনৈতিক দলগুলোর দুঃখজনক নিষ্ক্রিয়তা

শ্রমিক অসন্তোষ: রাজনৈতিক দলগুলোর দুঃখজনক নিষ্ক্রিয়তা

সর্বশেষ সংযোজন

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

by skalyanad
এপ্রিল ১৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমজীবী ভাইবোনদের মাঝে ইসলামের সুমহান আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে। আসন্ন...

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

by skalyanad
এপ্রিল ৮, ২০২৪
0

দেশে ও প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ, দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।...

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

by skalyanad
মার্চ ২৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষরা সর্বক্ষেত্রে অধিকার বঞ্চিত। তাদের অধিকার আদায়ের...

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৭, ২০২৪
0

আসন্ন ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধে যে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে তা নিরসনের জন্য রাষ্ট্র ও মালিকদের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করার...

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৬, ২০২৪
0

এদেশের শ্রমজীবী মানুষের সস্ত্রশ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনেছে। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ শ্রমজীবী মানুষরা পায়নি। রাজনৈতিক বিভেদ স্বাধীনতাকে...

  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
  • সাংগঠনিক কাঠামো
  • শাখা সংগঠন
  • ট্রেড ইউনিয়ন
  • সংবাদ
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
  • প্রকাশনা
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
  • যোগাযোগ

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.

Design and Developed by Bijoylab IT| Contact:+01818 650864
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.