দেশের রফতানি আয়ের প্রধান উৎস পোশাক শিল্পের উৎপাদনের চাকা সচল রাখতে গার্মেন্টস শ্রমিকরা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে গার্মেন্টস মালিকগণ গার্মেন্টস শ্রমিকদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট না দিতে যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা অমানবিক। পোশাকশিল্পের অগ্রগতি এবং দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার স্বার্থেই শ্রমিকদের ইনক্রিমেন্ট প্রদান নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম।
গতকাল বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে অঞ্চল পরিচালকদের এক বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমানের পরিচালনায় এসময় অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, গোলাম রাব্বানী, লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, মাষ্টার শফিকুল আলম, কবির আহমদ ও মজিবুর রহমান ভূঁইয়াসহ সকল অঞ্চল পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, বিকেএমইএ এবং বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ আগামী দুই বছর শ্রমিকদের ৫% ইনক্রিমেন্ট দিতে পারবে না বলে সরকারকে জানিয়েছে। অথচ করোনা কালীন সময়ে শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করার জন্য গার্মেন্টস মলিকগন সরকার থেকে ৯ হাজার কোটি টাকার অধিক প্রণোদনা নিয়েছে। প্রণোদনা নিয়েও মালিকরা গার্মেন্টসে হাজার হাজার শ্রমিক ছাঁটাই করেছে এবং শ্রমিকদের মজুরি থেকে ৪০% কেটে নেয়া হয়েছে। অথচ করোনা মহামারীর মধ্যে শ্রমিকরা মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে গার্মেন্টস শিল্পের উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। তাদের এই অবদানের জন্য মালিক ও সরকারের পক্ষ থেকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের পুরস্কৃত করা প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু তা-না করে সরকারের কাছে বিকেএমইএ ও বিজিএমইএ শ্রমিক কর্মচারীদের বাৎসরিক মজুরি বৃদ্ধি না করার আবেদন করেছে তাদের এ আচরণ অত্যন্ত অমানবিক ও দুঃখজনক।
আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, আমরা জানি পোশাকশিল্পে অবশ্যই সংকট রয়েছে। গার্মেন্টস মালিকরা বর্তমানে ক্রেতা সংকট দেখাচ্ছেন। কিন্তু সংকট থেকে উত্তোরনের উপায়ও ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। বড় বড় ক্রেতারা আবার ফিরে আসছেন। করোনা সংকট মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার উদ্যোগ নিয়ে যে প্রণোদনা ঘোষনা করা হয়েছে তা সবার আগে পোশাকশিল্প মালিকরা পেয়েছেন। যার মধ্য দিয়ে অনেকখানি সংকট দূর হয়েছে বলে আমরা মনে করি। ফলে শ্রমিকদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট দেয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা দেখছি না। তিনি শ্রমিকদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট থেকে বঞ্চিত না করে মালিক ও সরকার সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে চলমান সংকট মোকাবেলা করে শ্রমিকদের প্রাপ্য অধিকার দেয়ার জন্য গার্মেন্টস মালিকদের প্রতি আহবান জানান।