প্রিয় শ্রমজীবী ভাই ও বোনেরা
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
১মে মহান ‘মে দিবস’ বা “আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস”। বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের কাছে এ দিনটি যেমন খুবই তাৎপর্যময় তেমনি অনেক বেশী আবেগ ও প্রেরণার। আজ থেকে ১৩৫ বছর আগে ১৮৮৬ সালের ৪মে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের সামনে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সূচিত হয় শ্রমজীবী মানুষের বিজয়ের ধারা। সেই ধারাবাহিকতায় শ্রমজীবী মানুষ তাদের কাজের প্রাথমিক স্বীকৃতি পেয়েছে। ১মে এক দিনের আন্দোলনের ফসল নয় বরং দীর্ঘ সময় ধরে দাবী আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামে কিছুটা প্রাপ্তি এবং স্বীকৃতি অর্জিত হয়েছে। শ্রমিকদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে শেষ পর্যন্ত দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ করার দাবী অফিসিয়াল স্বীকৃতি পায়। ১৮৮৯ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শ্রমিক নেতাদের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ১মে “আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস” হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলনের এ গৌরবময় অধ্যায়কে স্মরণ করে ১৮৯০ সাল থেকে প্রতি বছর ১মে বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে আসছে ‘মে দিবস’ বা “আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস”। তাই ঐতিহাসিক ‘মে দিবস’ বা “আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস” শ্রমিকের মর্যাদা রক্ষার দিন। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নয়নশীল দেশ এবং আইএলও কর্তৃক প্রণীত নীতিমালায় স্বাক্ষরকারী দেশ। এ দেশে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত কোটি। শ্রমিক দিবসের প্রেরণা থেকে বাংলাদেশ মোটেও পিছিয়ে নেই। রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে দিবসটি উদযাপন করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন “আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস ২০২১” যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে সপ্তাহ ব্যাপী (১-৭ মে) বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে।
অধিকার হারা শ্রমজীবী ভাই ও বোনেরা
প্রতি বছর ‘মে দিবস’ উদযাপনের মধ্য দিয়ে শ্রমিকরা একদিকে যেমন তাদের অধিকার আদায়ের রক্তাক্ত ইতিহাসকে স্মরণ করে তেমনি ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে তাদের অধিকার আদায়ের প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করে। আত্মত্যাগকারী শ্রমিকদের স্বপ্ন ছিল শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে এবং সামাজিক মর্যাদা ও অত্মসম্মানের সাথে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকবে। কিন্তু আজও শ্রমিকদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। বাংলাদেশের শ্রমিকদের দিকে তাকালে আমরা আজও দেখতে পাই মালিক শ্রেণীর শোষণ, বঞ্চনা ও নির্যাতন-নিষ্পেষণের বলি হয়ে অসহায়-মেহনতি শ্রমিকদেরকে প্রাণ দিতে হচ্ছে। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় বার শতাধিক নিরীহ শ্রমিকের করুণ মৃত্যু, হাজার হাজার শ্রমিক আহত ও পঙ্গুত্ব বরণের লোমহর্ষক দৃশ্য পুরো বিশ্ববাসীকে শোকাহত করে। ২০১২ সালে আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেডের গার্মেন্টস কারখানায় আগুন লেগে ১১১ জন শ্রমিকের পুড়ে মরা এবং শত শত শ্রমিক আহত হওয়া, ২০১০ সালে হামিম গার্মেন্টসসহ তিনটি গার্মেন্টস কারখানায় শ্রমিকের প্রাণ হারানোরমত অসংখ্য দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হচ্ছে মালিক শ্রেণীর গাফলতি। এসব দুর্ঘটনায় যেসব শ্রমিক মারা যায় বা পঙ্গুত্ব বরণ করে তাদের পরিবারের রুটি-রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদেরকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়। আজকের এই উচ্চ দ্রব্যমূল্যের বাজারে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না। যেখানে শ্রমিক আন্দোলন হয়েছিল ৮ ঘন্টা কর্ম দিবসের জন্য। সেখানে বাংলাদেশের মিল-কারখানা ও গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোতে এখনও ৮ ঘন্টার পরিবর্তে ১২ ঘন্টা কাজ করানো হচ্ছে। আজকে শ্রমিকদের কোনো নিরাপত্তা নেই। শ্রমিকেরা মৃত্যুর ঝুঁকি মাথায় নিয়ে পেটের দায়ে কাজ করে যাচ্ছে। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রেখে উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে চায় বিধায় মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় দ্বন্ধ-সংঘাত দেখা যায়। আমাদের দেশে শ্রমিকদের বড় একটি অংশ নারী ও শিশু। নারী শ্রমিকদের প্রসূতিকালীন ছুটি ও শিশু যত্নাগারসহ নানা সুবিধার কথা শ্রম আইনে থাকলেও অধিকাংশ মালিক তা দিতে চায় না। ফলে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাজ করেও তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। আবার অনেকের জীবন ঝুঁকির মধ্যেও পড়ে যাচ্ছে। মারাও যাচ্ছে অনেক শ্রমিক। বাংলাদেশের শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার কারণে শারীরিক ও মানসিকভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না। শিক্ষাসহ বিভিন্ন সামাজিক সুযোগ-সুবিধা থেকে তারা হচ্ছে বঞ্চিত। এসব শিশু স্নেহ-ভালোবাসার অভাবে এক সময় অপরাধ জগতে পা বাড়ায়।
সংগ্রামী শ্রমজীবী ভাই ও বোনেরা
একজন মানুষের জীবনধারণের জন্য মৌলিক প্রয়োজন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা। এসব একজন শ্রমিকের প্রাপ্য অধিকার। আর এটাই হচ্ছে শ্রমিকের প্রকৃত মর্যাদা। একুশ শতকে এসে শ্রমিকরা কতটুকু মর্যাদা বা অধিকার ভোগ করছে? বর্তমান রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে অবশ্যই ভাবতে হবে। কারণ শ্রমিকরা এ দেশের সম্পদ। তারাই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। শ্রমিকদেরকে অবহেলার চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তাদের সামাজিক মর্যাদা ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মহান মে দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনুধাবন করতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হচ্ছে আমরা শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকারের কথা বলি কিন্তু বাস্তবে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে শাসক ও মালিক পক্ষ আদৌ আন্তরিক হতে পারেনি। যদিও যান্ত্রিক বিপ্লবের কারণে শ্রমজীবী মানুষের কাজের পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু পরিবর্তন আসেনি শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে। তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার অধিকার অধ্যবধি অধরাই থেকে গেল। শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠার রক্তাক্ত ইতিহাসের মধ্য দিয়ে শ্রমিকরা তাদের কিছু অধিকার অর্জন করলেও সকল দিক থকে শ্রমিকরা তাদের অধিকার পুরোপুরি অর্জন করতে পারেনি। মে দিবস ঘটা করে পালন হলেও শ্রমিকরা আজও অবহেলা-অবজ্ঞা, নির্যাতন, নিপীড়ন ও বঞ্চনার শিকার।
সম্মানিত শ্রমজীবী ভাই ও বোনেরা
আধুনিক বিশ্বের পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা ও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা শ্রমিকের প্রকৃত অধিকার ও মর্যাদা বুঝিয়ে দিতে পারেনি। তথাকথিত শ্রমিকনেতারা মুখেমুখে শ্রমিক অধিকারের কথা বললেও বাস্তবে শ্রমিকদের পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল ও ব্যক্তিগত অর্থ বৈভবের মালিক হয়েছে। ফলশ্রুতিতে মেহনতি শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত নিষ্পেষিত হচ্ছে। ভ্রান্ত এই শ্রমনীতি মালিক ও শ্রমিককে শত্রুতে পরিণত করেছে। শ্রমিকের অধিকার, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ, সঠিক কর্মঘন্টা ও সর্বোপরি ন্যায্য পারিশ্রমিক প্রদানের দাবী আজও বাস্তবায়িত হয়নি। অন্যদিকে ইসলামী শ্রমনীতিতে শ্রমজীবী মানুষের সঠিক মর্যাদা ও অধিকার সু-স্পষ্টভাবে দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) তার জীবদ্দশায় দুনিয়াবাসীর সামনে এক চির শাশ^ত অনুপম শ্রমনীতি উপস্থাপন ও বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। আজ থেকে দেড় হাজার বছর পূর্বে শ্রমিকের অধিকার সম্পর্কে প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, “শ্রমিকের শরীরের ঘাম শুকানোর পূর্বে তাদের প্রাপ্য মজুরী দিয়ে দাও।” তিনি অন্যত্র বলেছেন, “শ্রমিককে তার সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ দিবেনা, দিলে তাকে সে কাজে সহযোগিতা করো।” শ্রমিক ও মালিক দু‘জনেই সমান মর্যাদার অধিকারী। তাই তিনি আরো বলেছেন, “আল্লাহ তায়ালা যে ভাইকে তোমার অধীন করে দিয়েছেন তাকে তা-ই খেতে দাও, যা তুমি খাও। তাকে তা-ই পরিধান করতে দাও, যা তুমি পরিধান করো।” শ্রমজীবী মানুষের প্রতি এই ইনসাফপূর্ণ নীতি শুধু সেই সময়ের জন্য নয় বরং কেয়ামত পর্যন্ত এক অনুকরণীয় আদর্শ। যে অধিকারের জন্য শ্রমিকেরা শিকাগোর রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল সেই অধিকার থেকে আজও তারা বঞ্চিত। ইসলামী শ্রমনীতি কেবল এই অসহায় মেহেনতি মানুষের মুক্তি দিতে পারে। পৃথিবীর সভ্যতা সচল রাখতে শ্রম অবধারিত। ঠিক তেমনিভাবে এই শ্রমের প্রকৃত মূল্যায়ন কেবল ইসলাম প্রদত্ত শ্রমনীতিতে রয়েছে। সুতরাং মালিক শ্রমিক সম্পর্ক সেদিনই সু-সম্পর্কে রূপ নিবে যখন ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন হবে। আর এই সু-সম্পর্কের বদৌলতে আমাদের দেশের উৎপাদনশীলতা যেমনি বৃদ্ধি পাবে ঠিক তেমনি প্রত্যেক শ্রমিক তার ন্যায্য অধিকার ফিরে পাওয়ার সাথে সাথে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও অনাবিল জীবনের নিশ্চয়তা পাবে। তাই ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের নিমিত্তে রাষ্ট্রক্ষমতায় সৎ, যোগ্য ও ন্যায়পরায়ণ লোকদের আনয়নের আন্দোলনে আমাদের জোর প্রচেষ্টা চালানো সময়ের দাবী।
আসুন ২০২১ সালের আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করি এবং বর্জ্রকন্ঠে আওয়াজ তুলি-
১. ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে দেশের শ্রমনীতি ঢেলে সাজাতে হবে।
২. সকল বন্ধ কল-কারখানা চালু করতে হবে।
৩. বন্ধকৃত পাটকল সমূহ অবিলম্বে চালু করতে হবে।
৪. শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।
৫. জাতীয়ভাবে ন্যূনতম মজুরি কাঠামো নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬. গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা চালু করতে হবে।
৭. ছাটাইকৃত গার্মেন্টস শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণসহ পূনঃ নিয়োগ দিতে হবে।
৮. শ্রমজীবী মানুষের জন্য বাসস্থান, রেশনিং, চিকিৎসা ও তাদের সন্তানদের বিনামূল্যে শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৯. কল-কারখানায় ঝুঁকিমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
১০. নারী শ্রমিকদের প্রসূতিকালীন ছুটি ও ভাতা প্রদানসহ সন্তানদের জন্য শিশু যত্নাগার স্থাপন করতে হবে।
১১. নারী ও পুরুষের বেতন-ভাতার সমতা বিধান করার পাশাপাশি কল-কারখানায় নারী শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
১২. কর্মস্থলে আহত ও নিহত শ্রমিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরন নিশ্চিত করতে হবে।
১৩. পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি বন্ধসহ পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র প্রদান এবং সরকারিভাবে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৪. সার, বীজ, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের মূল্য কমানো এবং উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে।
১৫. শ্রমিকদের ন্যায় বিচার ত্বরান্বিত করার স্বার্থে শ্রমঘন এলাকায় শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
১৬. শ্রমিকদের পেশাগত ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৭. শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মুনাফায় শ্রমিকদের অংশ প্রদান করতে হবে।
১৮. শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে।
১৯. হকারদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে হলি-ডে মার্কেট চালু করতে হবে।
২০. আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ এর পূর্ণ বাস্তবায়ন করে সকল পেশায় অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
২১. ঢাকাসহ বিভাগীয় শহর সমূহে রিক্শা চলাচলের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করতে হবে।
সম্মানিত শ্রমিক ভাই ও বোনেরা
ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ১৯৬৮ সালের ২৩ মে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। যার রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ‘বা.জা.ফে-০৮’। এই ফেডারেশন অর্ধ শতাব্দীর বেশী সময় ধরে এ দেশে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করছে। বহু চড়াই উতরাই পেরিয়ে ফেডারেশন আজও হাটি-হাটি পা-পা করে ইসলামী শ্রমনীতির পতাকা বুকে ধারণ করে এগিয়ে যাচ্ছে। মূলত শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন শ্রমিক ময়দানে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায় যেখানে শ্রমিক মালিক সবার অধিকার সংরক্ষিত থাকবে এবং চাওয়ার আগে প্রত্যেকের অধিকার আদায় করে দিতে সবাই সচেষ্ট থাকবে। এতে উভয়ের মধ্যে সু-সম্পর্ক বিরাজ করবে। কাজেই শ্রমিক-মালিক উভয় পক্ষ যদি ইসলাম প্রদর্শিত নীতিমালা অনুসরণ করে; তাহলে একদিকে শ্রমিকদেরকে দাবী আদায়ের জন্য আন্দোলন করতে হবে না অন্যদিকে মালিকরা শ্রমিকদের শোষণ করার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসবে। এজন্য শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সম্মিলিতভাবে ইসলামী শ্রমনীতি অনুসরণের বিকল্প নেই।
আসুন, শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে আমরা ইসলামী শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শামিল হই এবং মেহনতি মানুষের আর্তনাদ ও আর্তচিৎকার বন্ধ করে তাদের মুখে হাসি ফোটাই। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।