বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, দেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ শ্রমিক। অতীতে কোন সরকার শ্রমিকদের সমর্থন ছাড়া রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসতে পারেনি। আগামী দিনেও শ্রমিকরা যাদের পক্ষে অবস্থান নিবে তারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে। শ্রমিকরাই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিবে।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলানায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তরের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মহানগরী সভাপতি মোঃ মহিব্বুল্লাহ-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের মহানগরীর উপদেষ্টা ড. রেজাউল করিম, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মো: তসলিম, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, ইতিহাসের পাতা খুললে দেখা যায় শ্রমিকরাই যুগে যুগে বিপ্লবের প্রধান হাতিয়ার ছিল। কোরআন হাদিসে অসংখ্য জায়গায় বলা আছে পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ নবী-রাসুলগণ শ্রমিক ছিলেন। শুধু তাই নয় তাদের আন্দোলনের কেন্দ্রে ছিল শ্রমিকরা। মুসা (আ.) শ্রমিকদের সাথে স্বৈরাচারী ফেরাউনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। এবং সে লড়াইয়ে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) নিজে শ্রমিক ছিলেন। তিনি শ্রমিকদের ভালোবাসতেন। তাদের জখম হওয়া হাতে চুমু খেতেন। আল্লাহর রাসুল শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে ছিলেন সোচ্চার। তিনি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য যে নির্দেশনা দিয়েছেন ইতিহাসে এর চেয়ে ভালো কোন নির্দেশনা আজ পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি এবং কোন দিন পারবে না।
তিনি বলেন, আজকে শ্রমিকরা যে পদে পদে অবহেলিত। নির্যাতিত-নিপীড়িত। তাদের পাশে কাউকে পাওয়া যায় না। এর একমাত্র কারণ আল্লাহর রাসুল (সা.) অনুসৃত শ্রমনীতি সমাজে বাস্তবায়িত না হওয়ার ফল। আজকে যদি আল্লাহর রাসুল (সা.) দেখানো শ্রমনীতি বাস্তবায়িত থাকতো থাকলে কোন মালিক কিংবা সরকার শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন চালাতে পারতো না। বরং তারা শ্রমিকদের জীবন সুষ্ঠুভাবে চলছে কি না এই চিন্তায় বিভোর থাকতো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের যেকোন মূল্যে আল্লাহর রাসুল (সা.) দেখানো অনুপম শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর জন্য শ্রমজীবী মানুষের কাছে সর্বপ্রথম ইসলামী শ্রমনীতি দাওয়াত পৌঁছাতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. রেজাউল করিম বলেন, শ্রম অঙ্গনের কাক্সিক্ষত পরিবর্তনের জন্য সৎ নেতৃত্বে বিকল্প নেই। আজকে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা যদি নিরলসভাবে কাজ করে যেতে পারে অল্প সময়ের মধ্যে এই অঙ্গনের পরিবর্তন সাধিত হবে। নতুন নেতৃত্বকে শ্রমিকদের ঘরে ঘরে ইসলামী শ্রমনীতির দাওয়াত পৌঁছে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। শ্রমিকদের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। নেতৃবৃন্দ যদি এই কাজটি যত সহজে করতে পারবেন তত দ্রুত ইসলামী শ্রমনীতির প্রসার ঘটবে।
সম্মেলনে কাউন্সিলদের ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে মোঃ মুহিব্বুল্লাহ ও এইচ এম আতিকুর রহমান পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।