• প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result
No Result
View All Result
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result

শ্রমজীবী নারীর বিড়ম্বনা

এডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী

skalyanad by skalyanad
আগস্ট ১৭, ২০২৩
in আর্কাইভ, গ্যালারি, ছবি, প্রবন্ধ/নিবন্ধ
0
শ্রমজীবী নারীর বিড়ম্বনা
0
SHARES
0
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

কাক ডাকা ভোরে রাস্তায় বের হলে প্রতিদিন যে দৃশ্যটি প্রায় সকলের চোখে পড়ে, দীর্ঘ পথ জুড়ে বিশাল সংখ্যক নারী শ্রমিকদের মিছিলের মত ছুটে চলা! কোথায় ছুটছে সবাই এই ভোর সকালে? প্রায় প্রত্যেকের হাতে একটি খাবারের ব্যাগ ঝুলিয়ে ছুটছে কোন এক গন্তব্যের দিকে! কোন দিকে তাকিয়ে সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই তাদের। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছাতে না পারলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটক!

তারা কারা? তারা আমাদের সমাজেরই অবহেলিত বাসিন্দা! শ্রমজীবী নারী! যে নারীই কারও মা, কারও বোন, কারও বা প্রিয়তমা স্ত্রী!

হাজারো সমস্যার মুখোমুখি হয়ে চাকরি সামাল দিতে হচ্ছে একসব নারীকে। সংসারে সামান্য স্বচ্ছলতার সুখ এনে দিতে তাদের হাড়ভাঙা খাটুনির তুলনা হয় না। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বাজারে সংসার চালাতে গিয়ে ভোররাত থেকে শুরু করে একনাগাড়ে প্রায় চৌদ্দ ঘণ্টা নিরলস শ্রম দিয়ে অভাবের সংসারকে নির্ভরযোগ্য শান্তির আবাস করে তোলার প্রানান্তকর প্রচেষ্টায়রত থাকলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের সেই কর্মের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না। অধিকন্তু অস্বাস্থ্যকর-অমানবিক কর্ম পরিবেশ, অপ্রতুল বেতন-ভাতা এবং কর্মক্ষেত্রের নানাধরনের বাধা-বিঘ্ন ও জটিলতার কারণে অনেকেরই মন উঠে যায় চাকুরি থেকে। দেশের শ্রমবাজারের প্রায় অর্ধেকই নারী! অথচ সবচেয়ে বেশি অধিকার বঞ্চিত এই নারী শ্রমিকরা। এ দেশের প্রেক্ষাপটে শ্রম আইন প্রণীত হলেও কার্যত এর তেমন প্রয়োগ নেই।

কেস স্টাডি: ১
নদী ভাঙনে ভিটা হারিয়ে স্বামীর সঙ্গে ৮ বছর আগে সিরাজগঞ্জ থেকে রাজধানীতে আসেন সেফালী বেগম (৩০)। বছর দুয়েক পর মিরপুর এলাকায় এক পোশাক কারখানায় কাজ নেন। ২০২০ সালে করোনার প্রথম ধাক্কায় পোশাকশিল্পে ব্যাপক ছাঁটাইয়ের সময় অনেকের সঙ্গে তিনিও কাজ হারান। অন্যত্র চাকুরির আশায় এক বছর বেকার কাটিয়ে দেন। রিকশাচালক স্বামীর আয়েই সংসার চলত। গত বছর তাঁর স্বামী মারা যান। বাধ্য হয়ে খণ্ডকালীন গৃহকর্মীর কাজ নেন।

কেস স্টাডি: ২
রাহেলা আকিতার রেনু (৩২)। পরিবারের সদস্যদের মুখে দুবেলা ভাত তুলে দিতে শ্রম বিক্রি করেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ বিভিন্ন প্রতিক‚লতার কারণে বেসরকারি সংস্থাগুলোর ঋণের জালে অবদ্ধ হয়ে পড়েছে পরিবার। ঋণের দায় থেকে মুক্তি পেতে কম মজুরিতে শ্রম বিক্রি করছেন। টাকার অঙ্কটা বলতে চাননি। স্বামী নেশা করে টাকা উড়ায়। বৃদ্ধ মায়ের কাছে ২ বছর ও ৪ বছরের সন্তান দুটোকে রেখে জীবীকার তাগিদে ছুটে চলছেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ের স্বার্থে এখনও নিরলস খেটে চলেছেন তিনি।

কেস স্টাডি: ৩
মাজেদা (২৭), টঙ্গী সোয়েটার ফ্যাক্টরিতে কাজ করে দেড় বছর ধরে কাজ করছিলেন। মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন, গত মাসে পোশাক কারখানায় লোক লাগবে জানিয়ে এলাকায় মাইকিং হয়েছে। কিন্তু তিনি আর যেতে চান না। কারখানার কাজে মন উঠে গেছে। সংসারে স্বামী ও এক শিশুসন্তান আছে। জানালেন, করোনার শুরুতে বিধিনিষেধে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। কাজ যোগ দিতে দুই দিন দেরি হওয়ায় তাঁর চাকরি চলে যায়। এখন ছোট সন্তানকে কার কাছে রেখে চাকুরি করবেন! সবজি বিক্রেতা স্বামীর একক আয়ে ঘর ভাড়া দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। বাসা-বাড়িতে খÐকালীন সময়ে কাজ নেওয়ার কথা ভাবছে।

কেস স্টাডি: ৪
জলি বেগম (২২) পোশাক কারখানার কাজ করতেন তিনি বলেন, ‘অপারেটর মাসে ৯ হাজার ৩০০ টাকা বেতন পাইতাম। কিন্তু ডিউটি অফিসারের অপ্রীতিকর আচরণে কাজ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। আপাতত এখন গৃহকর্মীর কাজ নিয়েছেন। এ কাজে আয় কম। কোনো সম্মানও নাই।’ নতুন কোন চাকুরির চেষ্টায় আছেন। তাঁর পরিবারে মা-বাবা, ভাইবোন আছেন। পারিবারিক টানপোড়েনের মধ্যে অবিবাহিত জীবনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ গড়ার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। রাস্তাঘাটে প্রতিনিয়ত ইভটিজিংয়ের এর শিকার হতে হয় বলে জানালেন।

কেস স্টাডি: ৫
করোনায় চাকরি হারানো আশুলিয়ার নারী শ্রমিক নিলুফার (২৭) জানালেন, করোনাকালের শুরুর দিকে কিডনি সমস্যার কারণে কয়েক দিন ছুটি নিতে হয়েছিল। কাজে ফেরার কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁকে চাকরি ছাড়তে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ। চাকরি ছাড়লেও কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি। অপারেটর পদে কাজ করে মাসে বেতন পেতেন সাড়ে ৯ হাজার টাকা। বললেন, সংসারে পাঁচ বছরের ছেলে রয়েছে। স্বামী মাছের খামারে কাজ করেন। সংসারে এত টানাটানি যে শিগগিরই তাঁকে কোনো কাজে যুক্ত হতে হবে।

কর্মজীবনের এমন কষ্টকর পথচলার বাস্তব গল্প অনেক নারী শ্রমিকের! নিভৃত কান্নার নোনা জলে ভেসে পার করছে বছরের পর বছর। বৈরিতার সাথে লড়তে লড়তে শ্রমের বাজারে টিকে আছে কোন রকমে।

▪ বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম প্রধান কারিগর নারী :
শুধু পোশাকশিল্পেই নয়, কৃষি ও অকৃষি খাতে ক্রমবর্ধমান হারে নারীর কর্মে নিযুক্তি বাংলাদেশে এ উন্নয়ন এনে দিয়েছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির পট পরিবর্তনে একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ।

১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ ও দারিদ্র্যের চাপে প্রান্তিক নারীরা শ্রমবাজারে উপস্থিত হয়েছিলেন অপরাপর বছরের তুলনায় অধিক। তারপর থেকে শ্রমবাজারে নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েই চলছে। এই হতদরিদ্র ও প্রান্তিক নারীদের সংগঠিত করে ১৯৭৮ সালে এদেশে পোশাক শিল্প যাত্রা শুরু করে। অর্থাৎ পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে শতকরা ৯০ শতাংশই নারী।

বাংলাদেশে বেশিরভাগ অঞ্চলে নারী শিক্ষার হার আনুপাতিক হারে কম হওয়ায় বিভিন্নভাবে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ অধিক মাত্রায় বিস্তৃত ও স্বীকৃত হয়েছে মূলত শ্রমিক হিসেবে। এই পাঁচ দশকে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের সফলতায় বড় অবদান রেখেছেন এসব নারীরা। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের হার ৩৮ শতাংশ, সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৪ সালে দেশে কর্মক্ষেত্রে নারী ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। এই হার ১৯৮০ সালের দিকে ৮ শতাংশ ও ২০০০ সালে ২৩ দশমিক ৯ শতাংশে ওঠে। তবে শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হার ২০১০ সালে বেড়ে ৩৬ শতাংশ হয়। ২০১৩ সালে অবশ্য কিছু কমে ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশে নামে। বিবিএসের সর্বশেষ ২০১৬-১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপে নারী হিস্যা ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশের কথা বলা হয়েছে। ওই জরিপ অনুযায়ী, দেশে শ্রমশক্তির আকার ৬ কোটি ৩৫ লাখ। এর মধ্যে ৬ কোটি ৮ লাখ মজুরির বিনিময়ে কাজ করেন। মোট শ্রমশক্তিতে ৪ কোটি ২২ লাখ পুরুষ আর নারী ১ কোটি ৮৭ লাখ।

▪ শ্রম বাজারে নারী:
পরিবর্তনশীল বিশ্বে অনেক কিছুই আর আগের অবস্থায় নেই। একইভাবে কঠিন হচ্ছে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের শ্রমজীবীদের জীবনধারণ। সময়ের প্রয়োজনে দেশের শ্রমবাজারে ধীরে ধীরে বেড়েছে নারীর অংশগ্রহণ। তবে শ্রমবাজারে নারীর একটা বড়ো অংশই অনানুষ্ঠানিক বা নিম্ন আয়ের ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। গত ৫০ বছরে নারীরা দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গত বছরের এক গবেষণায় বলা হয়, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) নারীর অবদান প্রায় ২০ শতাংশ। তবে সংসারের ভেতর ও বাইরের কাজের মূল্য ধরা হলে নারীর অবদান বেড়ে দাঁড়াবে ৪৮ শতাংশ। এর অর্থ হলো, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারী-পুরুষের অবদান বলা যায় সমান সমান। বিবিএসের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ১ কোটি ৮৭ লাখ নারী কৃষি, শিল্প ও সেবার অর্থনীতির বৃহত্তর এই তিন খাতে কাজ করছেন।

▪ নারী শ্রমিকের বিড়ম্বনা:
তবে উৎপাদনব্যবস্থায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও নারী কর্মীদের সিংহভাগই শ্রমজীবী। নারী শ্রমিকরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে কর্মক্ষেত্রে তাদের শ্রম ও মেধার সর্বোচ্চ বিলিয়ে দিলেও তারা সর্বক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হন। নারী শ্রমিকদের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে কিছু দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়নের কোন কার্যকর পদক্ষেপই গ্রহণ করা হয়নি।

অপ্রাতিষ্ঠানিক বা অসংগঠিত খাতেই নারীদের অংশগ্রহণ বেশি:
সাধারণত দেখা যায় অপ্রাতিষ্ঠানিক বা অসংগঠিত খাতেই নারীদের অংশগ্রহণ বেশি। কৃষিকাজে বাংলাদেশের নারীদের অংশগ্রহণ ব্যাপক। কিন্তু তার কোন স্বীকৃতি নেই। অন্যদিকে গৃহকর্মে নিয়োজিত নারীরাও সব ধরনের অধিকারবঞ্চিত। এদের কোন সার্ভিস রুল নেই কিংবা নেই অন্য কোন বিধিবিধান। ফলে শ্রম আইনের সুবিধা থেকে এরা বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে।

নারী শ্রমিকের একটি বৃহৎ অংশ কাজ করে তৈরি পোশাকশিল্পে:
পোশাক শিল্পের অন্যতম উপকরণ সস্তা শ্রম। এ শিল্পের ৮০ শতাংশ কর্মীই নারী। তৈরি পোশাকশিল্পে বাংলাদেশে কর্মরত মোট নারী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। অথচ শ্রমবাজারে নারী শ্রমিকের অবদান তাৎপর্যপূর্ণ হলেও কখনই তাদের ন্যায্য অধিকারের কথা বিবেচনায় নেওয়া হয় না। কর্মক্ষেত্রে তাদের এগিয়ে যাওয়ার এ পথ কিন্তু সহজ নয়। স্বামী, সন্তান ও পরিবারকে সামাল দিয়ে রাস্তাঘাট, যানবাহন ও কর্মস্থলের বহুবিধ প্রতিকূলতাকে তুচ্ছজ্ঞান করেই তাদের কর্মবাজারে টিকে থাকতে হচ্ছে।

কর্মক্ষেত্রের প্রায় সবস্তরেই নারীরা শিকার হচ্ছে তীব্র মজুরি বৈষম্যের:
বেতন কাঠামো, প্রমোশন, ইনক্রিমেন্ট ইত্যাদির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হন নারীরা। শ্রমিকদের ক্ষেত্রেও নারীকে পুরুষের তুলনায় কম মজুরি দেওয়া হয়। একই ধরনের কাজে নারী শ্রমিক পুরুষ শ্রমিকদের তুলনায় ৫৬ শতাংশ বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারও কম মজুরি পান। অথচ বিআইডিএসের গবেষণায় পাওয়া তথ্যমতে, কর্মক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারীর মনোযোগ ও আন্তরিকতা বেশি।

গত ২০১৬ সালের অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপের একটি ফলাফল হচ্ছে, কর্মজীবী পুরুষের তুলনায় কর্মজীবী নারী তিন গুণ বেশি কাজ করে থাকেন। কাজের সময় নারী শ্রমিক ছলচাতুরির আশ্রয়ে কাজে ফাঁকি দেন না। অধিকন্তু শ্রমঘণ্টার হেরফের নিয়েও কোন অভিযোগ নেই তাদের। সেই হিসেবে জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী শ্রমঘণ্টার দুই-তৃতীয়াংশ নারীদের দ্বারা সম্পন্ন হলেও মজুরির ক্ষেত্রে মাত্র দশ শতাংশ জোটে নারীর ভাগ্যে।

শহর এবং গ্রামভেদে নারী ও পুরুষ শ্রমিকদের এ বৈষম্য আরও প্রকট। বিভিন্ন জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে পোশাকশিল্প খাতে ৯০ ভাগ, নির্মাণ কাজসহ বিভিন্ন সেক্টরে ৮৪ ভাগ নারী শ্রমিক নিজেদের শ্রম বিনিয়োগ করে চলেছে।

শ্রম আইনে প্রাপ্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত:
পোশাকশিল্প ও কৃষিকাজ ছাড়াও নির্মাণ, চাতাল, চিংড়ি চাষসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ক্রমাগত বাড়ছে। এসব ক্ষেত্রেও নারী শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি, কাজের সময়সীমাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার কোনো নির্দিষ্ট বিধিবিধান নেই। চাকরির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা নেই। মালিকপক্ষ যেভাবে নির্ধারণ করেন, সেভাবেই হয়।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারী শ্রমিকদের কাজের কোন সময়সীমা নির্দিষ্ট না থাকায় ক্ষেত্রবিশেষে তাদের ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে হয় নামমাত্র মজুরিতে। অথচ বাংলাদেশের সংবিধান, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা, আইএলওর নীতিমালায় নারীদের অধিকার ও দাবি-দাওয়ার বিষয়ে বৈষম্যহীন অবস্থানের পক্ষে সুস্পষ্ট বক্তব্য থাকা সত্ত্বেও বাস্তবে তারা বৈষম্যের শিকার। প্রধানত মালিক বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অবহেলা বা বৈরী মনোভাব, প্রচলিত শ্রম আইনের দুর্বলতা এবং ট্রেড ইউনিয়নের অনুপস্থিতি অথবা দৃঢ় অবস্থান নিতে না পারার কারণেই শ্রম আইনের সব সুযোগ-সুবিধা থেকে নারী শ্রমিকরা অধিকার বঞ্চিত হন। মজুরির ক্ষেত্রে মাত্র দশ শতাংশ জোটে নারীর ভাগ্যে। এমন মজুরি বৈষম্য থাকলেও অভাবের সংসারে পরিবার-পরিজনদের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দিতে ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে তারা এভাবে শ্রম বিক্রি করছেন।

▪ সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের সমস্যা:
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের জন্য সরকার ঘোষিত কোটা পদ্ধতিও অনেক ক্ষেত্রেই কার্যকর হয়নি এতদিন। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোয় কোটা সংরক্ষণ ব্যবস্থা বেশি উপেক্ষিত হয়েছে বলে মনে হয়। এমনও দেখা যায়, একটি প্রতিষ্ঠানে ছয় শতাধিক কর্মজীবীর মধ্যে নারীর সংখ্যা মাত্র ২০ থেকে ৩০ জন। হাতেগোনা এই নারীদেরও প্রায়ই সহকর্মীদের কটাক্ষ, বঞ্চনাসহ নানা অসৌজন্যমূলক আচরণের সম্মুখীন হতে হয়।

দেশের অধিকাংশ কর্মক্ষেত্র নারীবান্ধব নয়:
অনেক কারখানায় নারীদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে হয়; পাওয়া যায় না মাতৃত্বকালীন ছুটি কিংবা চিকিৎসা সুবিধা। আবার যথাযথ আইন এবং মানসিকতার অভাবে বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনা কবলিত নারী শ্রমিকেরা ঠিকভাবে ক্ষতিপূরণ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। যৌন হয়রানির ঘটনা ছাড়াও পুরুষ সহকর্মীদের মনমানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির কারণে শ্রমজীবী নারীদের নানা ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে হয়।

কর্মস্থল, রাস্তাঘাট, দোকানপাট, বাস-টেম্পো, ক্ষেত্রবিশেষে রিকশাতেও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী নারীদের প্রতি কুরুচিপূর্ণ-অশ্লীল মন্তব্যসহ নানা অপ্রীতিকর অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়। কয়েকজন গার্মেন্টকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের নারী-পুরুষের মধ্যে বেতনের ক্ষেত্রে তেমন কোনো বৈষম্য না থাকলেও পরিবেশগত বৈষম্য এখানে প্রকট। সেখানে উচ্চপদে নারীকর্মী নেই বললেই চলে। বিশ্রী কথা, অশ্লীল গালিগালাজ, অশোভন ইঙ্গিত এককথায় প্রতিনিয়ত ইভ টিজিংয়ের শিকার হন নারী কর্মীরা। কর্মক্ষেত্রে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন নারী এমন বহু নজির রয়েছে গার্মেন্টশিল্পে। একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী শ্রমিক জানান “কুদৃষ্টি, গায়ে ধাক্কা, অশ্লীল ইশারা, কুপ্রস্তাব, অশ্লীল কথাবার্তা এ ধরনের অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে হয় নারীকে। এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে অফিসের বড় কর্মকর্তারা নানা অজুহাতে তাদের কক্ষে ডেকে পাঠান। আকার-ইঙ্গিতে নানা কিছু বুঝানোর চেষ্টা করেন। বুঝলে বিপদ, না বুঝলেও বিপদ। পুরুষ সহকর্মীদের দ্বারা নানা ধরনের গসিপ, কানাকানি, কথা লাগানো তো নিত্য ঘটনা। বস ও সহকর্মী দ্বারা হয়রানির শিকার হতে হয় অনেক শ্রমজীবী নারীকে।” কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পথে, এমনকি অফিসে তত বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছে নারীরা। গার্মেন্টস কারখানা থেকে শুরু করে অভিজাত এলাকার আধুনিক অফিসেও এমনটি হচ্ছে।

ঘরে-বাইরে অত্যধিক চাপের মুখে একজন নারী শ্রমিক:
নারী শ্রমিকরা বাইরের কাজ বাদে, সাংসারিক ও গৃহস্থালির কাজে প্রতিদিন গড়ে প্রায় আট ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন। অর্থমূল্যে পরিমাপ না হওয়ায় মজুরিহীন এ কাজের কোনো মূল্যায়ন করা হয় না। স্বীকৃতিহীন এ কাজের অর্থমূল্য পরিমাপ করলে তা পুরুষের আয়ের তিনগুণ হত। পরিবারের জন্য এত উদারতা থাকার পরেও নারীদেরকে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় অবলীলায়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মতে-যেসব কাজের জন্য কোনো ধরনের পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না, সে রকম কাজের তিন চতুর্থাংশ এখনো নারীরা হাসিমুখে করে থাকে।

শ্রমজীবী নারীদের কর্মক্ষেত্র ছাড়া গৃহস্থালি কাজেও অনেক সময় দিতে হয়। খাবার তৈরি, সন্তান লালন-পালন, ঘরদোর পরিষ্কার করা, কাপড় ধোয়া- এসব কাজ থেকে শ্রমজীবী নারীদের রেহাই পাওয়ার সুযোগ থাকে না। অথচ অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের জন্য এত শ্রম দেবার পরও তারা পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয় কারণ বেকার /দিনমজুর স্বামীরা তাদের উপার্জন বসে বসে খায়। এটা আসলেই অধিকাংশ নারী শ্রমিকের চরম বাস্তবতা।

দেশের অনেক শিল্প-কারখানায় কর্মপরিবেশ এমন যে, টানা কয়েক বছর কাজ করলে নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভালো না থাকায় কিডনিসহ নানা দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে দেখা যায় নারী শ্রমিকদের। কিছু কিছু কারখানায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা থাকে না।

মাতৃত্বকালীন ছুটি বঞ্চিত:
সরকার নির্ধারিত ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি এখনোও সকল প্রসূতি নারী শ্রমিকের জন্য নিশ্চিত করা যায়নি। অনেক প্রতিষ্ঠানে সন্তানসম্ভবা নারী শ্রমিককে উল্টো চাকরিচ্যুত করা হয়। তাছাড়া মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় বেতন-ভাতা-বোনাস ইত্যাদির সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করা হয়।

ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত:
নারী শ্রমিকদের, বিশেষত যারা ইটভাঙা, মাটিকাটা বা মালামাল বহনের কাজ করে তাদের অনেককে সন্তান সঙ্গে নিয়েই কাজ করতে হয়। তীব্র রোদ ও প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে খোয়ার (ভাঙা ইটের টুকরার স্তূপ) ওপরে বা পাশে দুগ্ধ পোষ্য শিশুকে বসিয়ে মাথার ওপর ভাঙা ছাতা ধরে কাজ করা এবং ওড়না, গামছা বা শাড়ির আঁচল দিয়ে সন্তানকে বুকে, পিঠে বেঁধে মাথায় ইট বা মাটির ডালি বহন করা অত্যন্ত কষ্টকর। এতে শুধু তারই নয়, তার সন্তানেরও আহত বা জখম হওয়ার আশঙ্কা থাকে; এ ঝুঁকি নিয়েই সে কাজ করছে। চলতে-ফিরতে অনেক এলাকায় ও পত্রিকার পাতায় এ ধরনের চিত্র মনকে শুধু ভারাক্রান্তই করতে থাকে। সন্তান নিয়ে কাজ করার কারণে তাদের নীরবে গালমন্দও হজম করতে হচ্ছে।

এ ধরনের সংকটে অনেকেই সন্তানকে অনিরাপদ অবস্থায় ঘরেই রেখে আসে। এ কারণে ম্যানহোলে পড়ে সন্তানের মৃত্যু, যথাযথ পরিচর্যার অভাবে অসুখ-বিসুখ সারাক্ষণ লেগেই থাকছে। অনেক দফতর, মিল-ফ্যাক্টরিতে তাদের কর্মী বা চাকুরের সন্তান রাখার জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার চালু হয়েছে। এতে কর্মজীবী মায়েরা কিছুটা হলেও স্বস্তিতে কাজ করতে পারছে।

খোলা আকাশের নিচে কর্মরত নারীর বাস্তবতা:
ছাদহীন খোলা আকাশের নীচে কাজ করা নারী, বিস্ময়কর ব্যাপার হলো এসব শ্রর্মজীবী নারী, যারা নরম হাতে ইট বালি সিমেন্ট নিয়ে কাজ করে আর কাজের বাইরে যাওয়ার আগে নিজের ইচ্ছেমতো খেতেও পারে না। এর কারণ বাহিরে টয়লেট খোঁজার বিড়ম্বনা। একটা পরিসংখ্যান মতে প্রায় ৭৫ শতাংশ নারীরা নিতান্তই অসচেতনতার কারণে ব্যক্তিগত ইনফেকশন নিয়ে চলে। শ্রমিককে অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা এবং সন্তান সঙ্গে নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। মানুষের বাসা-বাড়িতে খণ্ডকালীন গৃহকর্মীদেরও একই সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে অনেক নারী ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কাজ করতে পারে না।

স্থায়ী-অস্থায়ী ডে-কেয়ার সেন্টার এমন দূরত্বে স্থাপন করতে হবে যেন একজন নারী শ্রমিক হেঁটে সেখানে সন্তান রেখে আসতে পারে। ফলে নারী শ্রমজীবীর সংখ্যা আরও বাড়বে। মনে রাখতে হবে, নারী শ্রমিকদের শোষণ-নিপীড়ন ও বৈষম্যের মধ্যে রেখে দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়ন সম্ভব নয়।

ফোন, এসএমএস, ই-মেইলের মাধ্যমে হয়রানি:
ঢাকার কয়েকজন নারী শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টেলিফোন, এসএমএস, ই-মেইলের মাধ্যমেও হয়রানি করেন অনেক পুরুষ সহকর্মী ও বখাটে।

মানসিক উদ্বেগ-উৎকন্ঠা:
প্রায় সব ক্ষেত্রেই নারীর জন্য এখনোও নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ তৈরি হয়নি। বাড়িতে ফেলে আসা পরিবারের শিশু সন্তানদের জন্য অথবা পরিবারে বৃদ্ধ সদস্যদের জন্য কর্মক্ষেত্রে এসেও নারী এক ধরনের মানসিক প্রেসার অনুভব করে উৎকন্ঠিত থাকেন।

পরিবহনের সমস্যা:
ঢাকার একজন কর্মজীবী নারীকে প্রতিদিন অফিসে যেতে হয় পথের ঝক্কি-ঝামেলা সামলিয়ে। অনেকে অভিযোগ করেন, প্রতিটি গাড়িতেই নারী যাত্রীদের আসন সংখ্যা সীমিত, মেয়েদের সিট খালি নেই বলে বেশির ভাগ বাসের চালক ও হেলপার মেয়েদের নিতেই চান না। অনেক সময় দেখা যায়, মেয়েদের সিটে ছেলেদের বসিয়ে রেখে বলেন সিট খালি নেই। অনেকে কয়েক মাইল হেঁটে পর্যন্ত কর্মস্থলে আসেন।

এ রকম কত শত প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে নারী শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছে প্রতিকূলতাকে মাড়িয়ে। সমাজের উন্নতি-অগ্রগতিতে এদের অবদান কোনভাবেই কম নয়। তাদের জন্য কর্মপরিবেশ স্বস্তিকর ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে আমাদের অর্জন টেকসই হবে না। এসব ব্যাপারে চিন্তা করার সময় অনেক আগেই পার হয়ে গেছে। এখন আর কালক্ষেপন না করে সারা দেশের শ্রমঘন উন্মুক্ত প্রান্তরগুলোকে চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে ওইসব এলাকায় শ্রমিকের আবাসন ব্যবস্থাসহ ডে-কেয়ার সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে।

স্থায়ী-অস্থায়ী ডে-কেয়ার সেন্টার এমন দূরত্বে স্থাপন করতে হবে যেন একজন নারী শ্রমিক হেঁটে সেখানে সন্তান রেখে আসতে পারে। ফলে নারী শ্রমজীবীর সংখ্যা আরও বাড়বে। মনে রাখতে হবে, নারী শ্রমিকদের শোষণ-নিপীড়ন ও বৈষম্যের মধ্যে রেখে দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়ন সম্ভব নয়।

এ দেশের নারীরা কাজ করতে ও স্বাবলম্বী হতে চায়, যাদের সুযোগ আছে তারা সংসারে আর্থিকভাবেও অবদান রাখতে চায়; কিন্তু তাদের এখনও পুরোপুরি সে সুযোগ ও পরিবেশ করে দেওয়া যায়নি। এই অবদানগুলো সব সময় আমরা টাকার মূল্যে দেখতে পাই না। পোশাক শিল্পে নারী অবদান রাখছেন, সেটা স্পষ্ট দেখা যায়, কিন্তু নারী তার মজুরিহীন শ্রম দিয়ে যে প্রতিমুহূর্তে অবদান রেখে চলেছেন গৃহস্থালিতে, কৃষিতে বা সন্তান প্রতিপালনে এটা আমরা কয়জন ভেবেছি বা মূল্যায়ন করছি!

শ্রমজীবী নারীদেরও সচেতন হতে হবে। কর্মক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নিয়ে চুপ করে বসে থাকলে চলবে না। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। নারী যেখানে কাজ করছেন, সেই প্রতিষ্ঠান না চাইলে এসব সমস্যার সমাধান হবে না। প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন পলিসির মাধ্যমে নারীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিষয় যেমন: কর্ম পরিবেশ, প্রশিক্ষণ, বেতন-ভাতা ও পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারী নির্যাতন বা নিপীড়ন বন্ধে আইন আছে, এর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। নিপীড়নের বিষয়ে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে পলিসি থাকতে হবে, নারীরা যাতে অভিযোগ করতে পারেন ও তাকে যেন এ আশঙ্কা না করতে হয়, অভিযোগ করলে চাকরি চলে যাবে। মিডিয়ারও একটি জোরালো ভূমিকা আছে। মিডিয়া নারীদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরতে পারে সর্বোপরি তাদের সার্বিক জীবন মানউন্নয়নে সমাজের সচেতন প্রতিটি মানুষকে তার সাধ্যমত এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে-

শ্রমজীবী মানুষের উন্নয়ন,
গোটা দেশের উন্নয়ন!!

লেখক: মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী।

Previous Post

শ্রমিক সংগঠনে ট্রেড ইউনিয়নের গুরুত্ব ও করণীয়

Next Post

শ্রমিক বার্তা | ষষ্ঠ বর্ষ | সংখ্যা ২২

Next Post
শ্রমিক বার্তা | ষষ্ঠ বর্ষ | সংখ্যা ২২

শ্রমিক বার্তা | ষষ্ঠ বর্ষ | সংখ্যা ২২

সর্বশেষ সংযোজন

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

by skalyanad
এপ্রিল ১৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমজীবী ভাইবোনদের মাঝে ইসলামের সুমহান আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে। আসন্ন...

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

by skalyanad
এপ্রিল ৮, ২০২৪
0

দেশে ও প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ, দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।...

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

by skalyanad
মার্চ ২৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষরা সর্বক্ষেত্রে অধিকার বঞ্চিত। তাদের অধিকার আদায়ের...

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৭, ২০২৪
0

আসন্ন ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধে যে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে তা নিরসনের জন্য রাষ্ট্র ও মালিকদের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করার...

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৬, ২০২৪
0

এদেশের শ্রমজীবী মানুষের সস্ত্রশ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনেছে। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ শ্রমজীবী মানুষরা পায়নি। রাজনৈতিক বিভেদ স্বাধীনতাকে...

  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
  • সাংগঠনিক কাঠামো
  • শাখা সংগঠন
  • ট্রেড ইউনিয়ন
  • সংবাদ
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
  • প্রকাশনা
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
  • যোগাযোগ

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.

Design and Developed by Bijoylab IT| Contact:+01818 650864
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.