• প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result
No Result
View All Result
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result

মানবসেবার গুরুত্ব ও ইসলামের অনুপ্রেরণা

মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান

skalyanad by skalyanad
অক্টোবর ১৭, ২০২৩
in আর্কাইভ, গ্যালারি, ছবি, প্রবন্ধ/নিবন্ধ
0
মানবসেবার গুরুত্ব ও ইসলামের অনুপ্রেরণা
0
SHARES
0
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব মানবিকতায়। আল্লাহ মানবজাতিকে সম্মানিত করেছেন তার মর্যাদা ও অধিকার রক্ষার মাধ্যমে। মানুষ হলো মহান সৃষ্টিকর্তার সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন সৃষ্টি। সৃষ্টিলোকে মানুষকে অন্যান্য সৃষ্টির তুলনায় অধিক উত্তম কাঠামোতে সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের এই রহস্য মানুষের বিবেক, বুদ্ধি, জ্ঞান। আল্লাহর ঘোষণা, “যেসব লোক ঈমান এনেছে ও নেক আমল করেছে, তারা নিঃসন্দেহে অতীব উত্তম সৃষ্টি।” আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির পরিচয় এভাবে তুলে ধরেছেন, “তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানুষের কল্যাণের জন্য তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। অভুক্ত ব্যক্তিকে আহার্য দেওয়ার ফজিলত বলতে গিয়ে রাসুল (সা.) বলেছেন, মানুষের কল্যাণ-সংশ্লিষ্ট যত কাজ আছে, তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম হচ্ছে দরিদ্র ও ক্ষুধার্তকে খাবার দান করা। সুরা বাকারাতে ইরশাদ হচ্ছে, “পুণ্যবান তারা যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর ওপরে, আখেরাত, ফেরেশতা ও সকল কিতাবের ওপরে; যারা সম্পদের প্রতি ভালোবাসা সত্ত্বেও অর্থ দান করে আত্মীয় স্বজন, ইয়াতিম, মিসকিন, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থী ও দাস মুক্তির জন্য এবং সালাত কায়েম করে স্বীয় অঙ্গীকার পূর্ণ করে। বিপদে-অনটনে ও হক-বাতিলের সংগ্রামে ধৈর্য ধারণ করে তারাই সৎ ও সত্যাশ্রয়ী এবং তারাই মুত্তাকি।” রাসুল (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি বিধবা ও মিসকিনদের সমস্যা নিয়ে ছুটাছুটি করে সে যেন আল্লাহর রাহে জিহাদে লিপ্ত। রাসুল (সা.) আরও এরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করে, দরিদ্রকে খাদ্য দান করে এবং উচ্চ শব্দে সালাম দেয়। সে নিরাপত্তা সহকারে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”

ইসলামে মানবসেবা:
ইসলাম শুধু একটি ধর্মেরই নাম নয়। জীবনের পরিধি যেমন ব্যাপক, তেমনি ইসলাম ধর্মের শাখা-প্রশাখাও ব্যাপক ও বিস্তৃত। বহু শাখাবিশিষ্ট কোনো জিনিসের যেকোনো একটি শাখা নিয়েই ব্যস্ত থাকলে যেমন সেটা পূর্ণ হয় না, তেমনি ইসলাম ধর্মের কোনো একটি শাখা নিয়েই ব্যস্ত থাকলে এতে পরিপূর্ণতা আসবে না। বরং সামর্থ্য অনুযায়ী সব কয়টি শাখায়ই অংশ নিতে হবে। ইসলামই মানুষের প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছে। মানবসেবা হযরত মুহাম্মদ (সা.) সহ সব রাসুল ও নবীর সুন্নাত। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করিম সা. ইরশাদ করেছেন, “ঈমানের ৭২টি শাখা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি হলো রাস্তা থেকে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেওয়া” (মুসলিম শরিফ)।

মানবসেবা ইসলামের একটি শাখা। আল্লাহকে কাছে পাওয়ার আরেকটি অন্যতম মাধ্যম। মানুষের সঙ্গে মানুষের ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের জন্যে অনুপ্রেরণা দেয়। মানুষের সেবা করতে এবং তার কষ্ট, অসুবিধা দূর করার জন্যে রাসুল (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব কষ্টসমূহ থেকে কোনো কষ্ট দূর করবে; কেয়ামতের কষ্টসমূহ থেকে আল্লাহ তার একটি কষ্ট দূর করবেন” (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি)। অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি নিজে অন্য কোনো মুসলমান ভাইয়ের কোনো প্রয়োজনে চলাফেরা করবে এবং তার জন্য চেষ্টা করবে, উহা তার জন্য ১০ বছর ইতেকাফ করার চেয়েও উত্তম হবে।”

আল্লাহ মুসলমানের রক্ত ও সম্পদের বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন। তবে নিরাপদ জীবনযাপন ও বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েছেন সব মানুষকেই। মানুষের সেবা করা, দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানো একটি উত্তম ইবাদত। যুগে যুগে ইসলামী মনীষীগণ মানবসেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনবিধান। ইসলামের সঙ্গে চলতে হলে ইসলামে দেখানো প্রতিটি বিষয় মেনে চলতে হয় তাই কেউ যদি মানুষের সেবা অথবা সাহায্য সহযোগিতা করার ব্যাপারে উদাসীন থাকে তবে সে ক্ষেত্রে তার আমল পরিপূর্ণ হবে না।

কুরআন মজিদে ইরশাদ হয়েছে, “আর যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভার্থে ও নিজেদের আত্মা বলিষ্ঠ করার খাতিরে ধন-শস্য ব্যয় করে তাদের উপমা কোন উচ্চভূমিতে অবস্থিত একটি উদ্যান, যাতে মুষলধারে বৃষ্টি হয়, ফলে তাতে দ্বিগুণ ফলমূল জন্মায়, যদি মুষলধারে বৃষ্টি না হয় তাহলে অল্পবৃষ্টিই যথেষ্ট। তোমরা যা করো আল্লাহ্ তার সম্যক দ্রষ্টা।” হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। প্রিয় নবি (সা.) বলেছেন, “দানশীল ব্যক্তি আল্লাহর সন্নিকটে জান্নাতের কাছাকাছি এবং মানুষের নিকটবর্তী, আর বখিল (কৃপণ) আল্লাহ থেকে দূরে, মানুষ থেকে দূরে এবং দোজখের কাছে।” অপর এক হাদিসে আছে, “যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে না আল্লাহ্ও তার প্রতি রহমত করেন না!”

মানুষ সামাজিক জীব হওয়ায় একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। মানুষের এই নির্ভরশীলতাই মানুষকে জানিয়ে দিতে চায় যে তুমি অন্যের সেবার ওপর নির্ভরশীল। ধনী-গরিব, নারী-পুরুষ সবাইকে কারো না কারো সেবা গ্রহণ করতেই হবে। জন্মের সূচনায়ই মানুষ অন্যের সেবায় নির্ভর করে বেড়ে ওঠে। অনুরূপভাবে জীবনের শেষ বেলায় কাফন-দাফনের সময়ও মানুষ পুরোপুরি অন্যের ওপর নির্ভরশীল। মানুষের এই পারস্পরিক নির্ভরশীলতা মানুষকে একে অপরের সেবা করার শিক্ষা দিতে চায়। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, “ঐ ব্যক্তি পরিপূর্ণ মুমিন নয়, যে তৃপ্তি সহকারে আহার করে আর তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে” (মুসতাদরাকে হাকেম, আদাবুল মুফরাদ)। শুধু তা-ই নয়, এ সমাজসেবা হচ্ছে ইসলামী দাওয়াতের ভূমিকাস্বরূপ। হযরত রাসুলে আকরাম (সা.) সমাজসেবার মাধ্যমে আরবের জনমানুষের হৃদয় ও মন জয় করেছিলেন, যা নবুয়তপ্রাপ্তির পর দাওয়াতি কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।

সেবার মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি:
মানুষের সেবার মাধ্যমে অতি সহজে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, “‘কেয়ামত দিবসে নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা বলবেন, ‘হে আদম সন্তান, আমি অসুস্থ হয়েছিলাম, কিন্তু তুমি আমার শুশ্রূষা করোনি।’ বান্দা বলবে, ‘হে আমার প্রতিপালক। আপনিতো বিশ্বপালনকর্তা কীভাবে আমি আপনার শুশ্রূষা করব?’” তিনি বলবেন, “তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল, অথচ তাকে তুমি দেখতে যাওনি। তুমি কী জান না, যদি তুমি তার শুশ্রূষা করতে তবে তুমি তার কাছেই আমাকে পেতে। হে আদম সন্তান, আমি তোমার কাছে আহার চেয়েছিলাম, কিন্তু তুমি আমাকে আহার করাওনি?” বান্দা বলবে, “হে আমার রব, তুমি হলে বিশ্ব পালনকর্তা, তোমাকে আমি কিভাবে আহার করাব?” তিনি বলবেন, “তুমি কী জান না যে, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে খাদ্য চেয়েছিল, কিন্তু তাকে তুমি খাদ্য দাওনি। তুমি কি জান না যে, তুমি যদি তাকে আহার করাতে তবে আজ তা প্রাপ্ত হতে।” “হে আদম সন্তান, তোমার কাছে আমি পানীয় চেয়েছিলাম, অথচ তুমি আমাকে পানীয় দাওনি।” বান্দা বলবে, “হে আমার প্রভু, তুমি তো রাব্বুল আলামিন তোমাকে আমি কিভাবে পান করাব?” তিনি বলবেন, “তোমার কাছে আমার অমুক বান্দা পানি চেয়েছিল কিন্তু তাকে তুমি পান করাওনি। তাকে যদি পান করাতে তবে নিশ্চয় আজ তা প্রাপ্ত হতে।”

বিভিন্নভাবে মানুষ একে অন্যের পাশে দাঁড়াতে পারে। যেমন, বিশেষ তহবিল গঠন করে দেশের দানবীর ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে যাকাত, ওশর, ফেতরা, কোরবানির চামড়া ও ত্রাণসামগ্রী বা আপৎকালীন ব্যয় বাবদ অর্থ আদায় করে বিশেষ তহবিলে গঠন করে সহায়তা করা। ব্যক্তিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিরক্ষর লোকদের অক্ষরজ্ঞান ও সহিহ-শুদ্ধভাবে কুরআন তেলাওয়াত, জরুরি মাসায়েল শেখার ব্যবস্থা করা যায়। গ্রামগঞ্জের মানুষের সব সময় কাজ থাকে না। তাই এ রকম একটি মাস বেছে নিয়ে কোনো মসজিদে মাসব্যাপী এ ধরনের বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা যায়।

সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহ তায়ালার সাহায্য প্রাপ্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হলো মানবসেবা। রাসুল (সা.) বলেছেন, “বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের সাহায্যরত থাকে ততক্ষণ আল্লাহ তাকে সাহায্য করতে থাকেন” (সহিহ মুসলিম)। অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, “যারা পৃথিবীতে আছে তাদের দয়া করো, তাহলে যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাকে দয়া করবেন।”

মানবসেবা সর্বোত্তম আদর্শ ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত:
সর্বপ্রকার সেবাকাজের সর্বোত্তম আদর্শ ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্তের অধিকারী হলেন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.)। যে বৃদ্ধা নবীজিকে গালিগালাজ করেছে, তার বোঝা রাহমাতুল্লিল আলামিন বহন করে গন্তব্যে পৌঁছে দেন। ফারুকে আযম হযরত ওমর বিন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে দেখা যায় গমের বস্তা কাঁধে বহন করে অভাবীর ঘরে পৌঁছিয়ে দিচ্ছেন। এরকম অসংখ্য নজির মুসলমানের মধ্যে বিরাজমান। ইসলামে বলা হয়েছে আর্ত, দুঃখিনীর সেবায় যথাসম্ভব নিজেকে নিয়োজিত করতে। মহানবী (সা.) আমাদের জানিয়ে দিয়ে গেছেন কীভাবে জীবনে চলতে হবে।

হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেছেন, রাসুল (সা.) জীবনে কখনো কোনো সাহায্যপ্রার্থীকে না বলেননি। মানবসেবাকে তিনি নিজের জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। নবীজি (সা.) তাঁর মহৎ কার্যক্রমের মাধ্যমে সেই সময় আরব সমাজের সর্বস্তরের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন। মক্কার জনসাধারণ তাকে উপাধি দিয়েছিল আল-আমিন যার অর্থ হলো বিশ্বাসী। নবিজি (সা.) ‘হিলফুল ফুজুল’ নামে একটি সংগঠন করে আর্তমানবতার সেবা, অসহায়দের সাহায্য-সহযোগিতা করে আরবের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন। রাসুলের এই মানবসেবামূলক কাজ বিধর্মীদের কাছেও প্রশংসনীয় ছিল। রাসুল (সা.) ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিজে না খেয়ে গরিব-দুঃখীকে খাবার দিয়েছেন। অন্যকে সাহায্য করার জন্য নিজের প্রয়োজনকে ত্যাগ করে ছিলেন। জনসেবা ও খেদমতের মূর্ত প্রতীক ছিলেন রাসুলুল্লাহ (সা.)।

সেবার এ গুণটি তাঁর মধ্যে নবুয়তপ্রাপ্তির আগেও বিদ্যমান ছিল। প্রথম ওহিপ্রাপ্ত হয়ে তিনি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়লেন এবং ঘটনা হযরত খাদিজাতুল কুবরা (রা.)-এর কাছে বর্ণনা করলেন। তখন তিনি নিম্নোক্ত বাণী দ্বারা নবী করিম (সা.) কে সান্ত্বনা দিলেন। “আল্লাহর শপথ! আল্লাহ কখনো আপনাকে লাঞ্ছিত করবেন না। কেননা আপনি আত্মীয়ের প্রতি সদাচরণ করেন, অসহায় ব্যক্তির বোঝা বহন করেন, নিঃস্ব ব্যক্তির অন্ন-বস্ত্রের ব্যবস্থা করে দেন। মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং বিপদগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করেন।”

মানবসেবার পদ্ধতি:
বিভিন্নভাবে মানুষ একে অন্যের পাশে দাঁড়াতে পারে। যেমন, বিশেষ তহবিল গঠন করে দেশের দানবীর ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে যাকাত, ওশর, ফেতরা, কোরবানির চামড়া ও ত্রাণসামগ্রী বা আপৎকালীন ব্যয় বাবদ অর্থ আদায় করে বিশেষ তহবিলে গঠন করে সহায়তা করা। ব্যক্তিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিরক্ষর লোকদের অক্ষরজ্ঞান ও সহিহ-শুদ্ধভাবে কুরআন তেলাওয়াত, জরুরি মাসায়েল শেখার ব্যবস্থা করা যায়। গ্রামগঞ্জের মানুষের সব সময় কাজ থাকে না। তাই এ রকম একটি মাস বেছে নিয়ে কোনো মসজিদে মাসব্যাপী এ ধরনের বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা যায়। নিজেদের মধ্য থেকে অভিজ্ঞ কোনো দায়িত্বশীল ক্লাস নেবেন অথবা অন্য কোনো উপযুক্ত ব্যক্তিকে দিয়েও ক্লাস নেওয়া যেতে পারে। দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করে অসহায় রোগীদের মধ্যে ফ্রি চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা করা যেতে পারে। তাছাড়া রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানোসহ চিকিৎসকরা ফ্রি-ফ্রাইডে ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সহজেই এ কাজ করতে পারেন। এমনকি বৃক্ষরোপণও একটি উত্তম সেবা ও সওয়াবের কাজ। রাস্তার পাশে ও পতিত জমিতে গাছ লাগিয়ে সৃষ্টিকুলের খেদমত করা যায়। আল্লাহর রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, “যদি কোনো মুসলমান একটি বৃক্ষ রোপণ করে অথবা শস্য জন্মায় অতঃপর তা থেকে কোনো মানুষ, পাখি বা পশু (ফল-ফসল) ভক্ষণ করে তাহলে সেটি তার জন্য সদকাস্বরূপ গণ্য হবে।”

চলমান পরিস্থিতিতে মানবতার সেবায় করণীয় প্রাণঘাতী বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিপর্যস্ত মানবতা। অধিকাংশ মানুষই অসহায় দারিদ্র্যপীড়িত। করোনার কারণে এ অসহায়ত্ব বেড়ে গেছে অনেকগুণ। কর্ম বন্ধ হওয়ায় সাধারণ মানুষের অভাবও বেড়ে গেছে। অভাবের তাড়নায় চিন্তিত অস্থির মানুষ স্বাভাবিক কাজ তথা জীবন-যাপনে গতি হারিয়ে ফেলেছে। মানবতার উপকারে আসে এমন চিন্তাভাবনাও লোপ পেয়েছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনায় দুস্থ মানবতার সেবায় মানুষের রয়েছে অনেক করণীয়। প্রাণঘাতী মহামারী করোনায় এ মানবতাবোধের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। কারো প্রতিবেশী যদি পেটে ক্ষুধা নিয়ে রাত যাপন করে, কেউ যদি কোনো পথশিশুকে ক্ষুধার তাড়নায় কাতরাতে দেখে আর সে যদি ক্ষুধার্ত প্রতিবেশী কিংবা ক্ষুধার্ত পথশিশুর পাশে এসে না দাঁড়ায়, তাহলে বুঝতে হবে তার মাঝে মানবতার লেশমাত্রও নেই। যার মাঝে মানবতাবোধ আছে সে অবশ্যই অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে এসে দাঁড়াবে। তার সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসবে সহযোগিতা করবে। আর এটাই মানবতার সেবা। আল্লাহ তায়ালা দুস্থ মানবতার সেবায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে নসিহত পেশ করে বলেন, তারা আল্লাহর প্রেমে অভাবগ্রস্ত, ইয়াতিম ও বন্দীকে আহার্য দান করে। তারা বলে, কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমরা তোমাদেরকে আহার্য দান করি এবং তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা করি না। এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা অসহায় ইয়াতিম মিসকিন এবং বন্দীদের খাবার দান করাকে মুমিনের অন্যতম গুণ বা বৈশিষ্ট্য হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। অসহায়দের পাশে না দাঁড়ানো, তাদের খোঁজ-খবর না রাখা, তাদের বিপদে এগিয়ে না আসা; এগুলো কোনো মুমিনের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। বরং মুমিনগণ দুস্থ মানবতার সেবায় সদা তৎপর। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের উদ্দেশে বলেন, মুমিন তারাই যারা অসাড় কাজ-কর্ম বা কথা-বার্তা থেকে বিরত থাকে এবং যারা জাকাত প্রদানে সক্রিয় হয়। এ আয়াতের সমর্থনে অন্য আয়াত দ্বারা দুস্থ মানবতার সেবায় সহযোগিতার খাত বিস্তারিত বর্ণনা করেন। তাতে উঠে এসেছে কারা পাবে এ সহযোগিতা। বর্তমান মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবের এ সময়ে যারা কাজ-কর্মহীন হয়ে বেকার জীবন-যাপন করছেন, জীবন-যাপনে নেই কোনো সহায় সম্বল তারাও দুস্থ ও অসহায়। তাদের সহযোগিতার জন্যই কুরআনের আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের জন্য বিধান জারি করেছেন।

কুরআন-সুন্নাহর আলোকেও এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, ইসলাম দুস্থ মানবতার সেবায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে জোর নির্দেশনা দেয়। শুধু তাই নয়, ধনীর ব্যক্তির জন্য গরিব-অসহায় দুস্থ ব্যক্তিদের সহযোগিতা করা কিংবা জাকাত দেয়াকে আবশ্যক করে দিয়েছে ইসলাম। করোনার এ দুঃসময়ে সমাজের বিত্তবানদের জন্য দুস্থ মানবতার সেবায় এগিয়ে আসা একান্ত আবশ্যক। নিজ প্রতিবেশী থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে সমাজের সর্বস্তরের দুস্থ মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া ঈমানের একান্ত দাবি। মুসলিম উম্মাহকে করোনার এই প্রাদুর্ভাবের সময় নিজ নিজ উদ্যোগে দুস্থ ও অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করতে হবে। ইসলাম মানুষের সেবা ও খিদমতের জন্য, সমাজের উপকারের জন্য নিজের যথাসর্বস্ব বিলিয়ে দিতে উদ্বুদ্ধ করে। মানুষকে সর্বোচ্চ মানবিকতা, পরহিতৈষণা, সহমর্মিতা ও মহানুভবতার শিক্ষা দিয়েছে ইসলাম। এ উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাঁর নবীকে প্রেরণ করেছেন দয়া ও সহমর্মিতার প্রতীক হিসেবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, “আর আমি আপনাকে সৃষ্টিকুলের জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি।” বিশ্ব জাহানের অধিপতি আল্লাহকে কাছে পাওয়ার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো মানবসেবা। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে মানবতার সেবা বা কল্যাণ এবং অসহায় মানুষের সহযোগিতার তাওফিক দান করেন। আমিন।

লেখক: গবেষক, কলামিস্ট

Previous Post

মহানবী (সা.) প্রণীত শ্রমনীতিতে শ্রমিকের মুক্তি নিহিত : অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান

Next Post

জালেম সরকারকে উৎখাত করতে শ্রমিকদের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

Next Post
জালেম সরকারকে উৎখাত করতে শ্রমিকদের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

জালেম সরকারকে উৎখাত করতে শ্রমিকদের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

সর্বশেষ সংযোজন

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

by skalyanad
এপ্রিল ১৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমজীবী ভাইবোনদের মাঝে ইসলামের সুমহান আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে। আসন্ন...

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

by skalyanad
এপ্রিল ৮, ২০২৪
0

দেশে ও প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ, দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।...

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

by skalyanad
মার্চ ২৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষরা সর্বক্ষেত্রে অধিকার বঞ্চিত। তাদের অধিকার আদায়ের...

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৭, ২০২৪
0

আসন্ন ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধে যে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে তা নিরসনের জন্য রাষ্ট্র ও মালিকদের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করার...

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৬, ২০২৪
0

এদেশের শ্রমজীবী মানুষের সস্ত্রশ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনেছে। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ শ্রমজীবী মানুষরা পায়নি। রাজনৈতিক বিভেদ স্বাধীনতাকে...

  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
  • সাংগঠনিক কাঠামো
  • শাখা সংগঠন
  • ট্রেড ইউনিয়ন
  • সংবাদ
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
  • প্রকাশনা
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
  • যোগাযোগ

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.

Design and Developed by Bijoylab IT| Contact:+01818 650864
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.