পল্লী কবি জসিম উদ্দিন বলেছেন,
“সবার সুখে হাসব আমি, কাঁদব সবার দুঃখে
নিজের খাবার বিলিয়ে দিব অনাহারীর মুখে।”
এ যেন পূর্ণাঙ্গ ও ভারসাম্যপূর্ণ ইসলামেরই মূলকথা বিবৃত হয়েছে কবির ভাষায়। বাস্তবিক-ই ইসলাম মানব কল্যাণজনিত ধর্ম তথা জীবনব্যবস্থা। প্রকৃতিগতভাবেই মহান আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে নানা বৈশিষ্ট্যে নানা ভিন্নতায় পরিচালিত করছেন। এখানে যেমন রয়েছে পারস্পরিক স্থান কালের ভিন্নতা, তেমনই রয়েছে সহায় সম্বলের স্বচ্ছলতা বনাম সীমাবদ্ধতা। যারা নিজেদের দৈনন্দিন কর্ম ও শ্রম তৎপরতার বিনিময়ে এমন সাবলম্বীতা লাভ করেন যাতে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার মতো সক্ষমতা অর্জিত হয়, তাদেরকে আমরা সহায় স্বচ্ছল হিসেবেই জানি; বিপরীতে যারা নিজেদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার মতো সক্ষমতা অর্জন করেন না, আমরা তাদেরকে অসহায় হিসেবে অভিহিত করে থাকি। সে সকল অসহায়ের প্রতি সাবলম্বীদের কী দায়িত্ব রয়েছে, ইসলাম এ ব্যাপারে কেমন তাগিদ প্রদান করেছে-নিম্মোক্ত আলোচনায় আমরা তা তুলে ধরার প্রয়াস পাব।
কল্যাণকামী দীন : ইসলামী জীবন ব্যবস্থা সম্পূর্ণই একটা কল্যাণকামী দীন। রাসুল (সা.) বলেছেন, দীন হলো কল্যাণকামী। এ ব্যবস্থায় সবাই সবার মঙ্গল কামনা করবে, এটাই প্রত্যাশা। প্রচণ্ড শত্রুর মঙ্গল কামনা করার জন্য এ দীনে উৎসাহিত করা হয়েছে। তাহলে যে সকল ব্যক্তি নিজেদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার মতো সক্ষমতা অর্জন করতে পারেন না, তাদের প্রতি সহানুভ‚তিশীল হওয়া, উপকারের মনোভাব নিয়ে সহযোগিতা করা যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তা আলাদা বলার অপেক্ষা রাখে না। আল্লাহ বলেন, “আর তারা আল্লাহকে ভালোবেসে খাদ্য দান করে মিসকিন, এতিম ও বন্দিদের। তারা বলে, শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমরা তোমাদের খাদ্য দান করেছি, তোমাদের কাছে আমরা এর জন্য কোনো বিনিময় চাই না এবং কোনো কৃতজ্ঞতাও না” (সুরা দাহর: ৮-৯)। রাসুল (সা.) বলেছেন, “ঐ ব্যক্তি (প্রকৃত) মুমিন নয় যে তৃপ্তিসহ উদরপূর্তি করে অথচ তার পাশেই তার প্রতিবেশী অভুক্ত থাকে” (আল আদাবুল মুফরাদ : ১১১)।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার “ঈদ মোবারক” কবিতায় তেমনই সুর তুলে ধরেছেন,
“কারো আঁখি-জলে, কারো ঝাড়ে কি রে জ্বলিবে দীপ?
দু’জনার হবে বুলন্দ-নসীব, লাখে লাখে হবে বদ-নসীব?
এ নহে বিধান ইসলামের।”
বঞ্চিত অসহায়ের সহায়তা করা ছিল স্বয়ং রাসুল (সা.) বৈশিষ্ট্য : তৎকালীন আরব জাহেলী সমাজের চতুর্মুখী অপরাধের চিত্র দেখে রাসুল (সা.) যার পর নাই ব্যথিত ছিলেন। ভয়ংকর গর্তের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা পতন্মোখ জাতির অধ্বঃপতনের আশু ভবিষ্যত দেখে তিনি শিহরিত হচ্ছিলেন। এমন এক প্রেক্ষাপটে হঠাৎ বিশালাকৃতির জিবরাইল (আ.) এর ওহি নিয়ে আগমন দেখে তিনি কিছুটা ভীত হয়ে পড়েছিলেন। হেরা গুহা থেকে তৎক্ষণাৎ ফিরে গিয়ে জীবন সঙ্গীনী খাদিজাকে (রা.) তাঁর শঙ্কার কথা ব্যক্ত করলেন। এমনাবস্থায় উম্মুল মুমিনিন খাদিজা (রা.) তাঁর যে গুণের কথা উল্লেখ করে তাকে সাহস যুগিয়েছিলেন তা খুবই প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছিলেন, “আল্লাহর কসম, কখনই নয়। আল্লাহ্ আপনাকে কখনও লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায় দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন” (বুখারি : ০৩)। স্বয়ং বিশ্বনবি মুহাম্মদ (সা.) যেহেতু অসহায়ের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন, তাতেই অনুমিত হয় ইসলামে এর মহান গুরুত্ব রয়েছে। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক জায়গায় সমাজের সব অসহায় দু:স্থ, এতিম ও মজুলম মানুষের প্রতি সদয় হওয়ার তথা যথাযথ দায়িত্ব কর্তব্য পালনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। অসহায় এতিমদের হক আদায় না করা এবং মিসকিনদের খাবার না দেওয়া লোকদেরকে অভিশাপ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, “তুমি কি এমন লোককে দেখেছ, যে দ্বীনকে অস্বীকার করে? সে তো ওই ব্যক্তি যে এতিমের প্রতি রূঢ় আচরণ করে তাড়িয়ে দেয় আর মিসকিনদের খাবার প্রদানে মানুষকে নিরুৎসাহিত করে” (সুরা মাউন: আয়াত ১-৩)।
সমতল ভূমিতে সবাই চলতে সাচ্ছন্দ বোধ করে। কিন্ত কণ্টকাকীর্ণ, দুর্গম, চ্যালেঞ্জিং পথ পাড়ি দিতে অনেকেই সাহস করে না। এটা এক সংগ্রামী অভিযাত্রা। মহান রবের ভালোবাসায় যারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তারাই এমন ঝুঁকি বহন করার দুঃসাহসিকতা প্রদর্শন করতে পারে।
মানবতার কল্যাণে আবির্ভূত জাতি : আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে সাহাবায়ে কেরামগণকে লক্ষ্য করে গোটা মুসলিম জাতিকে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে ভূষিত করেছেন। তাদেরকে বলা হয়েছে “উখরিজাত লিননাস” অর্থ্যাৎ মানবতার কল্যাণে সৃষ্টি করা হয়েছে। সুতরাং শ্রেষ্ঠ জাতির মর্যাদায় যাদেরকে অভিষিক্ত করা হয়েছে, তারা দল, মত, গোষ্ঠী, স্থান কালের ঊর্ধ্বে উঠে অসহায় বঞ্চিত মানুষের সহায়তা করে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখবে, এটাই স্বাভাবিক, আর ইসলাম সেটাই তার অনুসারীদের কাছে দাবি করে।
ধনীদের সম্পদে রয়েছে অসহায়ের অধিকার : আল্লাহ তায়ালা হলেন রাজাধিরাজ, পৃথিবীর একচ্ছত্র মালিকানা তাঁর। বিস্তৃত আকাশ জমিনের ত্রি-সীমানার ন্যূনতম একটা সুঁইয়ের মালিকও কোনো মানুষ নয়। তথাপি মহান মালিক, তাঁর অসীম জ্ঞানের হেকমতে কাউকে অঢেল সম্পদ দিয়ে থাকেন, আবার কাউকে পার্থিব জীবনের অস্বচ্ছলতায় রেখে বিশ্ব পরিচালনা করেন। এই যে সম্পদ কম দেওয়া-বেশি দেওয়ার এ মানবণ্টন; এটা কোনোভাবেই ব্যক্তির প্রতি তাঁর সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির চূড়ান্ত মানদণ্ড নয়। এটা শুধুই একটা পরীক্ষা, এটা তাঁর অনবদ্য হেকমতের দৃষ্টান্ত। কখনও চরম পাপিষ্ঠ ব্যক্তিকেও তিনি এ দুনিয়ার প্রচুর সহায় সম্পদ দান করেন, আবার তাঁর চরম অনুগত বান্দাকেও কখনও কখনও অসহায় অবস্থায় রেখে দেন। সেজন্য সহায় স্বচ্ছল ব্যক্তির অর্জিত সম্পদে গর্বিত হওয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই, চরম কার্পণ্যতার দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে অসহায়ের প্রতি অবহেলা প্রদর্শনের অনুমতিও তাকে মহান রব দেননি। অভাবীকে দান করা, সেবা করা, এটা অসহায়ের প্রতি করুণা প্রদর্শন নয় বরং আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত নেয়ামত প্রাপ্তির শুকরিয়া হিসেবে অসহায়কে সহায়তা করা এটা তাদের প্রাপ্য অধিকার। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আর তাদের (ধনীদের) সম্পদে রয়েছে যাচনাকারী এবং বঞ্চিতদের অধিকার” (সুরা যারিয়াত : ১৯)।
দুর্গম গিরিপথ পাড়ি দেওয়া দুঃসাহসিকতা : সমতল ভূমিতে সবাই চলতে সাচ্ছন্দ বোধ করে। কিন্ত কণ্টকাকীর্ণ, দুর্গম, চ্যালেঞ্জিং পথ পাড়ি দিতে অনেকেই সাহস করে না। এটা এক সংগ্রামী অভিযাত্রা। মহান রবের ভালোবাসায় যারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তারাই এমন ঝুঁকি বহন করার দুঃসাহসিকতা প্রদর্শন করতে পারে। অসহায়ের মুক্তি ও নিঃস্বকে খাবার দানের আন্দোলনে অদম্য ভ‚মিকা রাখার মতো এমন কাজকে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এভাবেই চিত্রিত করেছেন। “কিন্তু সে দুর্গম গিরিপথ অতিক্রম করার সাহস করেনি। তুমি কি জানো সেই দুর্গম গিরিপথটি কী? কোন গলাকে দাসত্বমুক্ত করা অথবা খাবার খাওয়ানো। অনাহারের দিনে কোন নিকটবর্তী এতিম বা ধূলি মলিন মিসকিনকে খাবার খাওয়ানো” (সুরা বালাদ : ১১-১৬)।
অসহায়ের প্রতিনিধিত্ব করবেন আল্লাহ তায়ালা : হাশরের দিন খুবই ভীতিকর এক পরিবেশ কায়েম হবে। পৃথিবীর সকল মানুষ সেদিন ভয়ে তটস্থ হয়ে নিজের চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়বে। মা, বাবা, স্ত্রী, স্বামী, সন্তান, ভাই, বোন কেউই কারো জন্য আফসোস করার মতো ফুরসতও পাবে না। সে চূড়ান্ত পরিবেশে রাজাধিরাজ আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার অসহায়ের পক্ষ হয়ে দুনিয়ার সাবলম্বীদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত করবেন। যার বর্ণনা জেনে হৃদয় প্রকম্পিত হওয়ার কথা। হাদিসে এসেছে, “আল্লাহ তা’আলা কেয়ামতের দিনে বলবেন, হে আদম সন্তান আমি অসুস্থ হয়েছিলাম; কিন্তু তুমি আমার সেবা-শুশ্রুষা করনি। সে বলবে, হে পরওয়ারদিগার! আমি কী করে তোমার সেবা শুশ্রুষা করব, অথচ তুমি সারা জাহানের প্রতিপালক। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল, আর তুমি তার সেবা করনি, তুমি কি জানতে না যে, তুমি তার সেবা-শুশ্রুষা করলে আমাকে তার কাছেই পেতে। হে আদম সন্তান আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম; কিন্তু তুমি আমাকে খেতে দাওনি। সে (বান্দা) বলবে, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমি কী করে তোমাকে আহার করাতে পারি? তুমি তো সারা জাহানের প্রতিপালক। তিনি (আল্লাহ) বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে আহার চেয়েছিল? তুমি তাকে খেতে দাওনি। তুমি কি জানতে না যে, যদি তুমি তাকে আহার করাতে তাহলে তা অবশ্যই আমার কাছে পেতে। হে আদম সন্তান আমি তোমার কাছে পানীয় চেয়েছিলাম; কিন্তু তুমি আমাকে পানি পান করাওনি। সে (বান্দা) বলবে, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমি কী করে তোমাকে পান করাব, অথচ তুমি সারা জাহানের প্রতিপালক। তিনি (আল্লাহ) বলবেন, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানীয় চেয়েছিল, তুমি তাকে পান করাওনি। যদি তুমি তাকে পান করাতে, তবে তা আমার কাছে পেয়ে যেতে” (মুসলিম, ইফা : ৬৩২২)।
কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা : অনেকের শারীরিক সক্ষমতা থাকলেও উপযুক্ত কর্মসংস্থানের পরিবেশ না পাওয়ায় অসহায় হয়ে থাকতে হয়। সেজন্য ইসলাম উপযুক্ত ব্যক্তির প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছে, যেন অসহায়ের যথাযথ অবলম্বন তৈরি করে দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে রাসুল (সা.) একটি ঘটনা সর্বজন বিদিত যা গোটা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর প্রতিটি সদস্যের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি নিজে তাঁর পবিত্র হাতে কুড়ালের হাতল লাগিয়ে দিয়ে একজন অসহায় ব্যক্তিকে উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এতে অনুমিত হয় এ ব্যাপারে ইসলামের বিধান খুবই উপযোগী ও কার্যকর।
মিসকিনকে না খাওয়ানো জাহান্নামিদের বৈশিষ্ট্য : নশ্বর এ পৃথিবী থেকে বিদায়ের পর প্রতিটি মানুষকে অনন্তকালে জান্নাত অথবা জাহান্নামের অধিবাসী হতে হবে। বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষ জাহান্নামের ভয়ংকর আজাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে ফরিয়াদ করে থাকে। এর কলিজা ভেদ করা আগুনের তীব্রতা, কাঁটাযুক্ত গরম পানি, রক্তপুঁজের নিকৃষ্টতা, যাক্কুম গাছের রসের বিষাক্ততা কল্পনা করতেই শরীর শিহরিত হয়ে উঠে। যারা মিসকিনকে খাবার দেয় না তাদেরকে সে ভয়ংকর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। কুরআনের বাণী, “যারা জান্নাতে অবস্থান করবে। সেখানে তারা জিজ্ঞেস করতে থাকবে অপরাধীদের, কিসে তোমাদের দোজখে নিক্ষেপ করলো? তারা বলবে, আমরা নামাজ পড়তাম না। অভাবীদের খাবার দিতাম না” (সুরা মুদ্দাসিসর : ৪০-৪৪)। রাসুল (সা.) বলেছেন, “মানুষের কল্যাণ-সংশ্লিষ্ট যত কাজ আছে, তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম হচ্ছে দরিদ্র ও ক্ষুধার্তকে খাবার দান করা” (বুখারি : ১২)।
মুজাহিদের সমান মর্যাদা লাভ : আল্লাহ তায়ালা মুজাহিদদেরকে অনেক বেশি সম্মানিত করেছেন। কারণ তারা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে দীনের জন্য সংগ্রাম করে থাকেন। মহামহিম আল্লাহ তায়ালার নিকট মিসকিন অসহায়ের সহায়তাকারীর মর্যাদা এত বেশি যে, তিনি তাদেরকে মুজাহিদের সমান গণ্য করেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, “বিধবা ও মিসকিন এর জন্য (খাদ্য যোগাতে) সচেষ্ট ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের ন্যায় অথবা রাত জেগে ইবাদতকারী ও দিনভর সিয়াম পালনকারীর মত” (বুখারি, ইফা : ৪৯৬২)।
রাষ্ট্রের দায়িত্ব : দুর্বল, অসহায়, মিসকিন, বঞ্চিত, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির সাবলম্বীতার জন্য চেষ্টা করা এটা শুধু ব্যক্তির দায়িত্ব নয়। ব্যক্তির সাথে সাথে ইসলাম এ ব্যাপারে এতটাই গুরাত্বরোপ করেছে যে, এসব বিষয়ের পরিপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা রাষ্ট্রের-ই দায়িত্ব। রাসুল (সা.) বলেছেন, “তাই যখন কোন মু’মিন মারা যায় এবং মাল রেখে যায়, তা হলে তার যে আত্মীয়-স্বজন থাকে তারা তার ওয়ারিস হবে; আর যদি সে ঋণ কিংবা অসহায় পরিজন রেখে যায় তবে তারা যেন আমার নিকট আসে; আমি (রাষ্ট্র প্রধান) তাদের অভিভাবক” (বুখারি, ইফা : ২২৪১)।
ভারসাম্যপূর্ণ অর্থব্যবস্থার দৃষ্টান্ত স্থাপন, সহায় অসহায়ের সমন্বয়ে সুখ দুঃখের ভাগাভাগি করে একটা কাঙ্ক্ষিত সমাজ ও পরিবেশ প্রতিষ্ঠায় ইসলামের চেয়ে উত্তম কোন মোটিভেশন আর হতে পারে না। অতএব পার্থিব সুখ, সমৃদ্ধি, শান্তি লাভ ও পরকালীন মুক্তির আশায় ইসলামী আদর্শের সৈনিক হওয়া ছাড়া আমাদের কোন বিকল্প নেই।
লেখক: ইসলামী চিন্তাবিদ