বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, লাখো মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। এদেশের মানুষরা ১৯৭১ সালে রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অত্যাচার-নির্যাতনে বাঁচতে ও অথনৈতিক মুক্তির জন্য জানবাজি রেখে মুক্তি সংগ্রামে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু তেপ্পান্ন বছর পেরিয়ে গেলেও গণমানুষ যে আশা নিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছিল সেই লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ফেডারেশনের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, কবির আহমেদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, মো. মুহিব্বুল্লাহ।
আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, অসহায় মানুষদের উপর এখনো চলছে শোষণ-নির্যাতন নিপীড়ন। ঘুস, দুর্নীতি ও অবাধে বিদেশে টাকা পাচার করে দেশকে গরিব বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজকে ব্যাংকে গিয়ে নিজেদের আমানতের টাকা মানুষ তুলতে পারছে না। ব্যাংকগুলো দেওলিয়া হয়ে গেছে। মেহনতি মানুষ রাতদিন কাজ করেও অর্থনৈতিক মুক্তির পথ খুঁজে পাচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতিতে আজকে শ্রমজীবী মানুষরা অসহায় জীবনযাপন করছে। তারা একবেলা খেয়ে অপরবেলা না খেয়ে থাকছে। এই স্বাধীনতার মূল্য কী? এভাবে তো একটি দেশ চলতে পারে না। একটি দল স্বাধীনতার কথা বলে স্বাধীনতাকে লুণ্ঠন করেছে।
তিনি বলেন, আজকে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। পরপর ৩টি নির্বাচনে মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। ২০১৪ সালে বিনা ভোটের নির্বাচন করেছে। ২০১৮ সালে রাতের আঁধারে ভোট বাক্স ভরে ক্ষমতা দখল করেছে। ২০২৪ সালে আবারও ভোটার বিহীন নির্বাচন করে স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তারা মানুষের সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে।
আজকে তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে দেশের মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘবের বদলে মানুষের ওপর আরও শোষণ নির্যাতন চাপিয়ে দিচ্ছে। দফায় দফায় বিভিন্ন সেবার মূল্য বৃদ্ধি করছে মানুষকে না জানিয়ে। আজকে সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেছে। তারা চায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সকল জুলুমের অবসান করতে। সাধারণ মানুষের জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জুলুম নির্যাতন ও শোষণ-বঞ্চনার অবসানের জন্য রাজপথে কঠিন সংগ্রাম করতে হবে। যে দিন সাধারণ মানুষের জীবনে হাসি ফুটবে সেই দিনই স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জিত হবে।