বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, হোটেল শ্রমিকদের বেতন ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা করতে হবে। তিনি বলেন, প্রচলিত মজুরি দিয়ে একজন শ্রমিকের জীবন অতিবাহিত করা কষ্টসাধ্য। দেশের অন্যান্য সেক্টরের ন্যায় হোটেল শ্রমিকদের জন্য মজুরি কাঠামো গঠন করা সময়ের দাবি। এটি যথা সম্ভব দ্রæত বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত হোটেল সেক্টরের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় কালে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহমাদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর হোসাইন, হোটেল সেক্টরের সভাপতি আব্দুস সালাম, হোটেল শ্রমিক নেতা কাজী নজির আহমদ, মাইনউদ্দীন, জিয়াউল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, নুরুন্নবী, রেজাউল করিম, সালাহউদ্দিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের হোটেল শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, সারাদেশে ৩০ লাখের অধিক হোটেল শ্রমিক রয়েছে। এদের অধিকাংশ দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কাজ করে। দেশে দৈনিক হাজিরা খুবই সামান্য। এই সামান্য আয় দিয়ে হোটেল শ্রমিকরা কোনমতে দিনাতিপাত করছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে হোটেল শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে হবে। তাদের মজুরি কাঠামোর আলোকে বেতন-ভাতা প্রদান করতে হবে। শ্রম আইনে শ্রমিকদের যে সুযোগ-সুবিধার কথা বলা হয়েছে তা হোটেল শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শ্রম আইনের আলোকে শ্রমিকদের বাসস্থান, চিকিৎসা ও সন্তানদের শিক্ষার ব্যয় মালিকদের বহন করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সকল ধরনের উৎসবভাতা প্রদান করতে হবে। অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার জন্য মজুরি প্রদান করতে হবে। শ্রমিকদের নিয়োগপত্র প্রদান করতে হবে। শ্রমিকদের প্রাপ্য ছুটি দিতে হবে। যখন-তখন শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত করা যাবে না।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, হোটেল শ্রমিকরা মানুষের সেবায় নিয়োজিত। তারা দিন-রাত অবিশ্রান্ত পরিশ্রম করে মানুষের সেবা করে যাচ্ছে। অথচ দিনশেষে এই শ্রমিকের মুখে হাসি থাকে না। সামান্য কিছু টাকা নিয়ে যখন বাড়ি ফিরে তখন তাকে স্বজনের আঁধার করা মুখ দেখতে হয়। হোটেল শ্রমিকদের এই অবস্থা পরিবর্তন করতে হলে আমাদেরকে সর্বস্তরে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। ইসলামী শ্রমনীতি ছাড়া মেহনতি শ্রমিকদের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তিত হবে না। হোটেল শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে হবে।