বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, শ্রমিকের আইনগত অধিকার আদায়ের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন স্বীকৃত সংগঠন। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে নানা ধরনের সমস্যা পড়ে। ফলে এ খাতের বিপুল সংখ্যক শ্রমিকরা ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারে না। ট্রেড ইউনিয়ন করতে না পারার কারণে তারা শ্রম আইনের সুবিধা পায় না।
তিনি আজ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ট্রেড ইউনিয়ন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মহানগরী সভাপতি মোঃ মুহিব্বুল্লাহ-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগরের সহ-সাধারণ সম্পাদক জামিল মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক হোসাইন আহমেদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথি বলেন, ইনসাফ ও কল্যাণমুখী সমাজ ব্যবস্থা আমাদের সমাজে অনুপস্থিত। ফলে এই সমাজে গরিব-দুঃখী মানুষদের ঠকানো সবচেয়ে সহজ। আর সমাজে গরিব দুঃখী মানুষ হলো শ্রমজীবী মানুষরা। তারা সমাজের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কর্মস্থলে তাঁদের সম্মান নেই। ন্যায্য মজুরি নেই। অল্প কিছু টাকায় তারা সারা মাস অসহনীয় কষ্ট সহ্য করে অতিবাহিত করে। যে শ্রমিকরা লাখো মানুষের জন্য কাপড় তৈরি করে, সে শ্রমিকের নিজের ভালো কাপড় নেই। যে শ্রমিক মানুষের জন্য ঔষুধ তৈরি করে, তাঁর চিকিৎসার জন্য সে ঔষুধ পায় না। সারাটা জীবন শ্রমিকরা অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগ করে।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দেশে বহু ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শ্রমিকরা অধিকার বুঝে পায়নি। কারণ এসব ট্রেড ইউনিয়ন রাজনৈতিক ও ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার হচ্ছে। ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা শ্রমিকদের চিন্তা করার সময় পায় না। শ্রমিকদের এই দুর্দিনে ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি যোগ্য ও শ্রমিক দরদি নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
এডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, আজ দেশে দেশপ্রেম, সততা ও মূল্যবোধের বড্ড অভাব। শ্রমজীবী মানুষের রক্ত ঘামে অর্জিত সম্পদ একশ্রেণির মানুষরা লুটপাট ও দুর্নীতি করে বিলাসী জীবনযাপন করছে। আজকে দেশের টাকা বাহিরে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের অবাধ লুটপাটের কারণে দেশের শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে না। এদেশে শ্রমজীবী মানুষের সম্মান ও ন্যায্য অধিকারের গ্যারান্টি ইসলাম ছাড়া কেউ দিতে পারবে না। আমাদের ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে ইসলামী আদর্শে গড়ে তুলতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নের সকল সদস্যদের সাথে নিয়ে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মোঃ মুহিব্বুল্লাহ বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন হবে সক্রিয়। নিস্ক্রিয় ট্রেড ইউনিয়নের কোনো মূল্য নেই। নতুন ও পুরাতন সকল ট্রেড ইউনিয়ন একযোগে স্ব স্ব পেশার মানুষদের পক্ষে সর্বাত্মকভাবে কাজ করতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নের যত দায়িত্ব আছে তা ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে পালন করতে হবে।