দেশে-প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আজহার আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।
আজ এক শুভেচ্ছা বাণীতে ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, ঈদুল আজহা আমাদেরকে ইব্রাহিম (আ.) ত্যাগ ও কুরবানির দৃষ্টান্ত স্মরণ করে দেয়। ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র ইসমাঈল (আ.) আল্লাহর কাছে নিজেদের যেভাবে আত্মসমর্পণ করেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁদের আদর্শকে ধারণ করে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য লক্ষ লক্ষ মুসলমান জিলহজ মাসে ত্যাগ ও কুরবানির নজরানা পেশ করে। পবিত্র কুরবানির মাধ্যমে মুমিন বান্দাহদের অন্তরে আল্লাহর রাহে জীবন উৎসর্গের জযবা সৃষ্টি হয়। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সান্নিধ্য পাওয়ার এই চেষ্টাই কুরবানির বড়ো তাৎপর্য।
নেতৃদ্বয় বলেন, ঈদের শিক্ষা হলো ভ্রাতৃত্ব ও একাত্মাবোধের মাধ্যমে ধনী-গরিবের বিভেদ ভুলে গিয়ে পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া। তথাকথিত সস্তা আনন্দ উল্লাস নয়; বরং ইসলামের আদর্শের আলোকে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের সাথে সামাজিকতা ও মানবতাবোধকে সম্মুন্নত করাই ঈদের উদ্দেশ্য। আমাদের দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ শ্রমজীবী। যাঁদের ঘরে ঈদের দিন ছাড়া কোনো উৎসবের উপলক্ষ্য আসে না। এসব মেহনতি মানুষদের সাথে নিয়ে আমাদেরকে পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করতে হবে। ঈদুল আজহার দিন শুধু পশু কুরবানি করে ও আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে আনন্দ প্রমোদ করলে হবে না। এইদিন আমাদের চারপাশে বসবাসরত অসহায় গরিব-দুঃখি মানুষের ঘরে ঈদের আনন্দ পৌঁছে দিতে হবে। আমাদের মনের পশুত্ব ও অমানবিক মন-মানসিকতা বিসর্জন দিয়ে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।
নেতৃদ্বয় বলেন, খুব দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, ঈদের এই আনন্দঘন মুহূর্তে শ্রমজীবী মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আ ন ম শামসুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ অসংখ্য রাজবন্দি কারাগারে আছেন। আমরা তাঁদের মুক্তি দাবি করছি। তাঁদেরকে মুক্ত করে দিয়ে স্বজনদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি বিশেষ দাবি জানাচ্ছি।
পরিশেষে নেতৃদ্বয় বলেন, ঈদুল আজহার ত্যাগ ও কুরবানির শিক্ষা আমাদেরকে আগামী একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যে সমাজের ভিত্তি হবে ন্যায় ও ইনসাফ। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জুলুম, নির্যাতন-নিপীড়ন ও সকল ধরনের বৈষম্যের অবসান হোক। ঈদুল আজহা পৃথিবীর সকল মুসলমানের জীবনে অনাবিল সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে; আজকের দিনে আমাদের এটাই প্রত্যাশা।