• প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result
No Result
View All Result
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
No Result
View All Result

মহান রবের অপার নেয়ামতে তাঁর বক্ষ ছিল সুপ্রসারিত

আবুল হাসেম মোল্লা

skalyanad by skalyanad
নভেম্বর ৮, ২০২৩
in আর্কাইভ, কুরআনের শিক্ষা, গ্যালারি, ছবি
0
মহান রবের অপার নেয়ামতে তাঁর বক্ষ ছিল সুপ্রসারিত
0
SHARES
0
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

রাসুল মুহাম্মদ (সা.) নবুয়ত পূর্ববর্তী যুগে মক্কার লোকদের নিকট অত্যন্ত বিশ্বস্ত, আমানতদার ও সচ্চরিত্রবান হিসেবে গণ্য ছিলেন। যখন তিনি জাহেলিয়াতের অমানিশার বুক চিরে মহান রবের পক্ষ থেকে মহা সত্যের প্রচারক তথা সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল হিসেবে মনোনীত হলেন, ঠিক তখনই কায়েমী স্বার্থবাদীরা রাতারাতি চির শত্রু আখ্যা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র, মিথ্যাচার, গালাগালি করে তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে। আকস্মিক এহেন পরিস্থিতিতে বিশ্বনবি মুহাম্মদকে (সা.) আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে মহান রাব্বুল আলামিন একটি সুরা নাজিল করেন। কী মহা নেয়ামতে রব তাকে ভূষিত করেছেন, অতি সংক্ষিপ্ত বাক্যে অথচ হৃদয়গ্রাহী ভঙ্গিতে তা তুলে ধরেছেন। যদিও সুরাটি সরাসরি বিশ্বনবি মুহাম্মদকে (সা.) কেন্দ্র করেই অবতীর্ণ হয়েছে, তথাপি কেয়ামত পর্যন্ত সত্য পথের সকল ঝাণ্ডাবাহীদের জন্য এতে রয়েছে অনবদ্য প্রেরণা ও চিরন্তন নির্দেশনা।

“হে নবি! আমি কী তোমার বক্ষদেশ তোমার জন্য উন্মুক্ত করে দেইনি?”
আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মদ (সা.) কে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল হিসেবে মনোনীত করে পরম নেয়ামতে ধন্য করেছেন। তাঁর অগণিত নেয়ামতের মাঝে অত্র সুরায় এমন তিনটি বিশাল নেয়ামতের বর্ণনা দিয়েছেন যা অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক, তৃপ্তিদায়ক ও মর্যাদাবাহক। সেগুলো হলো- ক. বক্ষ উন্মুক্তকরণ খ. বোঝা দূরীকরণ গ. মর্যাদা সমন্নুত করণ। প্রথম আয়াতে আল্লাহ তায়ালা প্রশ্নের স্বরে বলেছেন, “আমি কী তোমার জন্যে তোমার বক্ষ প্রশস্ত করিনি?” বস্তুত মহান রব মুহাম্মদ (সা.) এর বক্ষ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। আর এটা যে কোনো ব্যক্তির জন্য মহান রবের পক্ষ থেকে বিশাল দান। যেমন কুরআনের অন্যত্র এসেছে, “আল্লাহ ইসলামের জন্য যার বক্ষ উন্মুক্ত করে দিয়েছেন ফলে সে তার রবের দেওয়া নূরের উপর রয়েছে, সে কী তার সমান যে এরূপ নয়?” (সুরা যুমার: ২২)

কুরআনের অন্যান্য স্থানে বর্ণিত ‘শারহে সাদর’ তথা বক্ষ উন্মুক্তকরণ দ্বারা সাধারণত দুটি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে,
১.ইসলামই একমাত্র নির্ভুল জীবন ব্যবস্থা; এ ব্যাপারে মানসিকভাবে সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত হওয়া।
যেমন, কুরআনের বাণী, “প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ যাকে সত্যপথ দেখানোর সংকল্প করেন, তার বক্ষদেশ ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দেন” (সুরা আনআম: ১২৫)। উক্ত আয়াতের মাধ্যমে এ অর্থ প্রমাণিত হয়।
২.ন্যায় ও সত্যের পথে অবিচল থাকার হিম্মত লাভ করা। যেমন, কুরআনের বাণী, “হে আমার রব! আমার বক্ষদেশ আমার জন্যে খুলে দাও এবং আমার জন্যে সহজ করে দাও।” (সুরা ত্বহা: ২৫-২৬)

আলোচ্য সুরায় রাসুল (সা.) এর বক্ষ উন্মুক্তকরণ বলতে দুটোই বুঝানো হয়েছে। বাস্তবিকই রাসুল (সা.) আল্লাহর নেয়ামতে ধন্য হয়ে তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অকুণ্ঠচিত্তে। তিনি নিজেই স্বীকৃতি দিয়েছেন যে, মহান রব তাকে রহমতের চাদরে আবৃত করেছেন। খন্দকের যুদ্ধের দিনে তিনি স্বয়ং সাহাবিগণের সাথে একাকার হয়ে মাটি কাটছিলেন আর অশ্রæসজল নয়নে আবৃত্তি করছিলেন, “হে আল্লাহ! আপনি না হলে আমরা হেদায়াত পেতাম না, সদাকাহ দিতাম না, এবং সালাত আদায় করতাম না। তাই আমাদের উপর শান্তি নাজিল করুন। যখন আমরা শত্রæর সম্মুখীন হই তখন আমাদের পা সুদৃঢ় করুন। ওরা আমাদের বিরুদ্ধাচারণ করেছে। তারা যখনই কোনো ফিতনা সৃষ্টি করতে চায় তখনই আমরা তা থেকে বিরত থাকি। (বুখারি, ই.ফা : ২৬৩৮)

মুহাম্মদ (সা.) এর সুপ্রসারিত বক্ষের অনন্য নজির হলো, তিনি শতভাগ সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে ছিলেন। কোনো ধরনের গোঁজামিলের আশ্রয় গ্রহণ কিংবা চির শত্রুকেও কাপুরুষতার সাথে শায়েস্তা করা ছিল তাঁর স্বভাব বিরুদ্ধ। হাদিসে এসেছে, “মক্কা বিজয়ের দিন রাসুল (সা.) চার জন পুরুষ ও দুইজন নারীর নাম ধরে ধরে তাদেরকে ক্ষমার অযোগ্য ঘোষণা করেছিলেন। তার মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে আবু সারহ আত্মগোপনে রাসুল (সা.) এর সামনে উপস্থিত হয়ে তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণের ইচ্ছা পোষণ করেছিল। তিনি তাতে সম্মতি দিতে চাননি। তিন বার অনুরোধ করায় অবশেষে রাসুল (সা.) তার বাইয়াত গ্রহণ করলেন। সে চলে যাওয়ার পর রাসুল (সা.) বললেন, “আমি ভেবেছিলাম তোমাদের কেউ তাকে হত্যা করে ফেলবে? সাহাবিগণ (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার মনের ইচ্ছা আমরা উপলদ্ধি করতে পারিনি। আপনি আমাদেরকে চোখ দিয়ে ইশারা করলেন না কেন? নবি (সা.) বললেন, কোনো নবির জন্য চোখের খেয়ানতকারী হওয়া শোভা পায় না।” (আবু দাউদ: ২৬৮৩)।

সত্য ও ন্যায়ের জন্য জীবন বাজি রাখার হিম্মত দিয়ে মহান রব তার বক্ষকে প্রসারিত করেছেন। চর্তুমুখী আক্রমণ, অকল্পনীয় ষড়যন্ত্রের পাহাড় ডিঙ্গিয়েছেন; তারপরও তিনি তাঁর লক্ষ্য ও আদর্শ থেকে একচুলও নড়েননি। কাফেরদের বিভিন্নমুখী চাপের মুখোমুখি হওয়া ও লোভের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে তিনি প্রকাশ্যে জানিয়ে দিলেন, “তোমাদের প্রস্তাব তো সীমিত! আকাশের ঐ সূর্য যদি আমার ডান হাতে দেওয়া হয়, এবং চাঁদ যদি বাম হাতে দেওয়া হয় তারপরও আমি আমার দায়িত্ব ছেড়ে দিব না, হয়তো বিজয়ী হবো অন্যথায় জীবন দেব।” (সীরাতে ইবনে হিশাম)

“আমি তোমার ওপর থেকে ভারী বোঝা নামিয়ে দিয়েছি, যা তোমার কোমর ভেঙে দিচ্ছিল।”
দ্বিতীয় নেয়ামতের কথা আল্লাহ তায়ালা উল্লেখ করেছেন যে, তিনি তার থেকে এমন বোঝা নামিয়ে দিলেন যা তার কোমর ভেঙে দিচ্ছিল তথা তাকে মানসিকভাবে অস্থির করে তুলেছিল। আয়াতে ব্যবহৃত শব্দ হলো ‘বিজর’। যার শাব্দিক অর্থ হলো-বোঝা। এর দ্বারা পাপও বুঝানো হয়ে থাকে। শাব্দিক দৃষ্টিকোণ থেকে এ অর্থ গ্রহণ করার অবকাশ থাকলেও বাস্তবিক অর্থে মুহাম্মদ (সা.) এ ব্যাপারে শতভাগ নিষ্কলুষ ও নির্মল ছিলেন। মূলত স্বজাতির অনাচার, অত্যাচার, নিজেদেরই হাতে বানানো মূর্তিকে নিজেরাই সমীহ করে শ্রদ্ধা করছে; এমন চিত্র দেখে রাসুল (সা.) যারপর নাই অস্থির ছিলেন। জাহেলি সমাজের নানা অসঙ্গতি তিনি কোনোভাবেই সহ্য করতে পারছিলেন না। কন্যা শিশুদের জীবন্ত কবর দান, বাবার মৃত্যুর পর সৎ মাকে বিয়ে করণ, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বছরের পর বছর যুদ্ধ লেগে থাকা, মদ-জুয়ার সয়লাব, সমাজ বিধ্বংসী ইত্যকার অপকর্মগুলো থেকে কিভাবে মানবতাকে মুক্ত করা যায়, এর জন্য তিনি প্রচুর পেরেশান ছিলেন। সমমনা কিছু যুবকদের নিয়ে হিলফুল ফুজুল সংঘ তৈরি করে এর মাধ্যমেও চেষ্টা চালিয়েছেন সাধ্যানুযায়ী। কিন্তু, না! এত কিছুর পরও তিনি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছিলেন না; এসব মর্ম যাতনা তার কোমর ভেঙে দেওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। এমন প্রেক্ষাপটে মহান রব তাকে আলোকের সন্ধান দিয়েছেন, মহা সত্যের দিশারী বানিয়ে তার মানসিক অস্থিরতা দূরীভূত করেছেন।

মানবতাকে সুস্থ, সুন্দর ও প্রকৃত পথের পথিক হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি কতটা উদগ্রীব ছিলেন তা নিম্মোক্ত আয়াত থেকেই প্রমাণিত হয়। কুরআনের বাণী, “হে মুহাম্মদ! এ লোকেরা ঈমান আনছে না বলে তুমি যেন দুঃখে নিজের প্রাণ বিনষ্ট করে দিতে বসেছ। আমি চাইলে আকাশ থেকে এমন নিদর্শন অবতীর্ণ করতে পারতাম যার ফলে তাদের ঘাড় তার সামনে নত হয়ে যেত।” (সুরা শুয়ারা: ৩-৪)

দ্বীনের একজন দাঈ মানুষের জন্য কতটা শুভাকাক্সক্ষীতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করতে হয়, মুহাম্মদ (সা.) এর পেরেশানি দেখে তা কিছুটা অনুমান করা যায়। রাসুল (সা.) আত্মভোলা মানুষদের মুক্তির জন্য কতটা ব্যথিত ছিলেন! নিম্মোক্ত হাদিসটি লক্ষনীয়। “আমার ও লোকদের উদাহরণ এমন লোকের মত, যে আগুন জ্বালালো আর যখন তার চারদিক আলোকিত হয়ে গেল, তখন প্রতঙ্গ ও ঐ সকল প্রাণী যেগুলো আগুনে পুড়ে, তারা তাতে পুড়তে লাগলো। তখন সে সেগুলোকে আগুন থেকে ফিরানোর চেষ্টা করল। কিন্তু সেগুলো তাকে পরাজিত করল এবং আগুনে পতিত হল। তদ্রæপ আমিও তোমাদের কোমর ধরে আগুন থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু তোমরা তাতেই পতিত হচ্ছ। (বুখারি, ই.ফা : ৬০৩৯)।

“আর তোমার জন্য তোমার খ্যাতির কথা বুলন্দ করে দিয়েছি।”

আল্লাহ তায়ালা রাসুল (সা.) এর মর্যাদা অত্যধিক বুলন্দ করেছেন। নবুয়তের মহান দায়িত্ব নিয়ে মুহাম্মদ (সা.) যখন নিজ গোত্রের নিকটই বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছিলেন, সে জটিল পরিস্থিতিতে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য এমন মর্যাদাপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছিলেন যা আপাতত দৃষ্টিতে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। যার সাথে হাতে গোনা মাত্র ১০/২০ জন লোক একাতœতা পোষণ করেছেন, তাও তারা নির্যাতনের মুখোমুখি হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা অসম্ভব মনে হচ্ছিল; এমন ব্যক্তিত্ব কীভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে! তা ছিল কাফেরদের নিকট রীতিমতো তাচ্ছিল্য ও হাস্যরসের ব্যাপার। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা ছিল ভিন্ন। সত্যিই মহান রব তাঁর মর্যাদা এতটা উন্নত করেছেন, কেয়ামত পর্যন্ত কোনো সৃষ্টির পক্ষেই সে উচ্চতায় পৌঁছানো অসম্ভব।

বাস্তবিকই, সময়ের আবর্তনে এমন একটি মুহূর্তও কি পৃথিবীতে অতিবাহিত হচ্ছে যখন মুহাম্মদ (সা.) এর উপর দুরুদ ও সালাম প্রেরিত হচ্ছে না? সম্মানিত পাঠক! ঠিক এই ক্ষণেও আপনি যখন বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.) এর মর্যাদা সংক্রান্ত আলোচনা পাঠ করছেন, আপনিও কিন্তু রাসুলের প্রতি দুরুদ পাঠ করছেন। (সুবহানাল্লাহ)। শুধু তাই নয়, সময়ের গতির প্রেক্ষিতে মহাবিশ্বের কোথাও এখন ফজরের সময় অতিক্রান্ত হচ্ছে, কোথাও যোহর, আবার কোথাও আসর, মাগরিব, এশা। কোথাও এখন আজানের মধ্যে আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণার সাথে সাথে উচ্চারিত হচ্ছে মুহাম্মদ (সা.) এর রিসালাতের স্বীকৃতি। কেউ বা এখন তাশাহুদের মধ্যে রাসুলের প্রতি দুরুদ ও সালাম পেশ করছেন, আবার কেউ দোয়া করতে গিয়ে আদবের অংশ হিসেবে রাসুলের প্রতি দুরুদ পাঠ করছেন।

এক কথায়, আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মদ (সা.) এর মর্যাদা এতটাই সমুন্নত করেছেন যে, যা স্বাভাবিক চিন্তায় মানব কল্পনারও ঊর্ধ্বে। যারা রাসুল (সা.) এর শিশু পুত্র সন্তানের একের পর একের মৃত্যুর সংবাদে অবজ্ঞার হাসি হেসেছিল, যারা হিংসায় বলেছিল, মুহাম্মদ নির্বংশ হয়ে যাচ্ছে (নাউজুবিল্লাহ), ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে তারা এবং তাদের উত্তরসূরিরাই নির্লজ্জ অভিশাপের শিকার হচ্ছে। আর বিপরীতে রাসূলের মর্যাদা হলো চির সমুন্নত। আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা কতই না বাস্তব! “ইন্না শানিয়াকা হুয়াল আবতার।” অর্থাৎ “নিশ্চয়ই আপনার শত্রুরাই নির্বংশ।”

“প্রকৃত কথা এই যে, সংকীর্ণতার সাথে প্রশস্ততাও রয়েছে। আসলে সংকীর্ণতার সাথে আছে প্রশস্ততাও।”

আল্লাহ তায়ালা যে সান্ত¡না মুহাম্মদকে (সা.) দিয়েছেন “সুতরাং কষ্টের সাথেই রয়েছে সুখ।” তা শুধু তার জন্যই নয় বরং কেয়ামত পর্যন্ত সত্য পথের সকল অনুসারীর জন্য রয়েছে তাতে অত্যন্ত চমৎকার ও নিশ্চিত সু-সংবাদ। এ পৃথিবী শুধুই একটা পরীক্ষা কেন্দ্র। এর সুখ যেমন স্থায়ী নয় এর দুঃখও তেমন স্থায়ী নয়। আর প্রকৃত মুমিনের জন্য তো সুখ-দুঃখ দুটোই মহাকল্যাণের বাহক মাত্র। হাদিসের বাণী, “মুমিনের অবস্থা বিস্ময়কর। সকল কাজই তার জন্য কল্যাণকর। মুমিন ছাড়া অন্য কেউ এ বৈশিষ্ট্য লাভ করতে পারে না। তারা সুখ শান্তি লাভ করলে শুকর গুজার করে আর অসচ্ছলতা বা দুঃখ-মুসিবতে আক্রান্ত হলে ধৈর্য ধারণ করে, প্রত্যেকটাই তার জন্য কল্যাণকর” (মুসলিম, ই.ফা : ৭২২৯)। অপর হাদিসে এসেছে, “মুসলিম ব্যক্তির উপর যে সকল বিপদ-আপদ আসে এর দ্বারা আল্লাহ তায়ালা তার পাপ দূর করে দেন, এমনকি যে কাঁটা তার শরীরে বিঁধে এর বিনিময়েও গুনাহ মাফ করে দেন।” (বুখারী, ই.ফা : ৫১২৫)।

মাঝখানে কিছুদিনের জন্য যখন মুহাম্মদ (সা.) এর উপর ওহি আগমন বন্ধ ছিল, তখন তিনি মানসিকভাবে ব্যথিত ছিলেন। এ সুযোগে কুরাইশদের মধ্য থেকে কুৎসা রটনাকারীরা বলতে লাগলো, “এতদিন যে শয়তান মুহাম্মদের কাছে আসত এখন সে তাকে পরিত্যাগ করেছে” (নাউজুবিল্লাহ)। এমন সময়ে আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় হাবিবকে সু-সংবাদ দিয়ে আশ্বস্ত করে বলেন, “আর অবশ্যই আপনার জন্য পরবর্তী সময় পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে উত্তম হবে। আর অচিরেই আপনার রব আপনাকে এমন কিছু দিবেন, যাতে আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন।” (সুরা দুহা : ৪-৫)

“কাজেই যখনই অবসর পাও ইবাদাতের কঠোর শ্রমে লেগে যাও (৭) এবং নিজের রবেরই প্রতি মনোযোগ দাও।”
“অতএব যখনই তুমি অবসর পাবে, তখনই কঠোর ইবাদাতে রত হও। আর তোমার রবের প্রতি আকৃষ্ট হও।” মানবজাতিকে আল্লাহ তায়ালা একমাত্র তাঁরই ইবাদাত করার লক্ষ্যে সৃষ্টি করেছেন। কুরআনের বাণী, “আর আমি সৃষ্টি করেছি জিন এবং মানুষকে এ জন্যেই যে, তারা কেবল আমার ইবাদাত করবে” (সুরা যারিয়াত: ৫৬)। বস্তুত কোনো মানুষের পক্ষেই আল্লাহ তায়ালার প্রকৃত শান অনুযায়ী ইবাদাত করে তাঁর হক আদায় করা সম্ভব নয়। তবে তাঁর নির্দেশিত পথে ইবাদাত করার চেষ্টা অব্যাহত রাখা বাঞ্চনীয়। এ জন্যই আল্লাহ তায়ালা গোটা সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্বকেও এমন আহ্বান করছেন যে, তোমার আনুষঙ্গিক ব্যস্ততা শেষ হলেই কঠোর ইবাদাতে মগ্ন হয়ে যাও। রবের প্রতি পূর্ণ একচ্ছত্র মনোনিবেশ কর। মূলত শুধু ইবাদাতের বাহ্যিক বিধান পালনের মাধ্যমেই বান্দা আল্লাহ তায়ালার হক আদায়ের সামর্থ্য রাখে না, বরং সে চেষ্টার মাধ্যমে আল্লাহর রহমতে আচ্ছাদিত হওয়ার প্রত্যাশা লালন করে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “কস্মিনকালেও তোমাদের কাউকে তার নিজের আমল কখনো নাজাত দিবে না। তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনাকেও না? তিনি বললেন, আমাকেও না। তবে আল্লাহ আমাকে তাঁর রহমত দিয়ে আবৃত করে রেখেছেন। তোমরা যথারীতি আমল করে নৈকট্য লাভ কর। তোমরা সকালে, বিকালে এবং রাতের শেষভাগে আল্লাহর ইবাদাত কর। মধ্যপন্থা অবলম্বন কর। মধ্য পন্থা তোমাদেরকে লক্ষ্যে পৌঁছাবে।” (বুখারি, ই.ফা : ৬০১৯)

আল্লাহ তায়ালার এ নির্দেশনার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন আমরা দেখতে পাই রাসুল (সা.) এর জীবনে। মুগীরাহ (রা.) বর্ণনা করেন, “নবি (সা.) রাত্রি জাগরণ করতেন (রাবী বলেছেন) অথবা সালাত আদায় করতেন; এমনকি তাঁর দু পায়ের গোছা ফুলে যেত। তখন এ ব্যাপারে তাঁকে বলা হলে তিনি বলতেন, আমি কী একজন শুকরিয়া আদায়কারী বান্দাহ হবো না?” (বুখারি, ই.ফা : ১০৬৩)। যিনি ছিলেন মা’সুম, নিষ্পাপ; তিনি যদি এভাবে নিবিড় ইবাদাতে নিবিষ্ট থাকেন, তাহলে আমাদের জন্য কী পরিমাণে ইবাদাতে মনোযোগী হওয়া উচিত, তা বিশেষভাবে উল্লেখ করার অবকাশ থাকে না। এছাড়াও অন্য সকল ব্যস্ততা, চাপ থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ মনোনিবেশ করা ইবাদাতের আদবও বটে। অস্থিরতামুক্ত হয়ে পূর্ণ তৃপ্তি সহকারে সালাত আদায় নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই; দৌড়ে জামাআতে শামিল হওয়াকেও হাদিসে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্য হাদিসে আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, “আমি রাসুলকে (সা.) বলতে শুনেছি, খাবার উপস্থিত হলে কোনো সালাত আদায় চলবে না। কিংবা পায়খানা-পেশাবের বেগ নিয়ে সালাত আদায় চলবে না।” (মুসলিম, ই.ফা : ১১২৬)। অর্থাৎ কোনো ধরনের পিছু টান ছাড়াই পূর্ণাঙ্গ স্থিতি সহকারে ইবাদাত আদায় করা বাঞ্চনীয়।

শিক্ষা:
১। সুপ্রসারিত বক্ষ আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নেয়ামত, যা তিনি মুহাম্মদকে (সা.) দিয়ে ধন্য করেছেন। আমরাও যেন এমন নেয়ামতে ধন্য হতে পারি; সে জন্য অনবরত চেষ্টার পাশাপাশি তাঁর কাছে দোয়া করা উচিত।
২। বিপথগামী মানুষকে হেদায়াতের দিশা দেওয়ার লক্ষ্যে পেরেশানি থাকা উচিত।
৩। ইজ্জত দেওয়া নেওয়ার মালিক আল্লাহ তায়ালাই। তিনি কারো ইজ্জত সমুন্নত করতে চাইলে তা কারো দ্বারা ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
৪। পৃথিবীর সুখ-দুঃখ কোনোটিই চ‚ড়ান্ত ফলাফল নয়, তাই হতাশ না হয়ে সু-পরিণতি আল্লাহর কাছেই চাওয়া উচিত।
৫। শত-হাজার ব্যস্ততার ভিতরেও নিবিষ্ট মনে ইবাদাতের জন্য কিছু সময় বের করা অবশ্যই কর্তব্য।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ঐশী আলোতে উদ্ভাসিত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক: ইসলামী চিন্তাবিদ

Previous Post

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার জন্য শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : আ ন ম শামসুল ইসলাম

Next Post

শ্রমিক আন্দোলন গতিশীল করতে কল্যাণ প্রকাশনী ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে : আ ন ম শামসুল ইসলাম

Next Post
শ্রমিক আন্দোলন গতিশীল করতে কল্যাণ প্রকাশনী ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে : আ ন ম শামসুল ইসলাম

শ্রমিক আন্দোলন গতিশীল করতে কল্যাণ প্রকাশনী ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে : আ ন ম শামসুল ইসলাম

সর্বশেষ সংযোজন

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

by skalyanad
এপ্রিল ১৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমজীবী ভাইবোনদের মাঝে ইসলামের সুমহান আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে। আসন্ন...

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

by skalyanad
এপ্রিল ৮, ২০২৪
0

দেশে ও প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ, দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।...

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

by skalyanad
মার্চ ২৮, ২০২৪
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষরা সর্বক্ষেত্রে অধিকার বঞ্চিত। তাদের অধিকার আদায়ের...

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করুন : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৭, ২০২৪
0

আসন্ন ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধে যে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে তা নিরসনের জন্য রাষ্ট্র ও মালিকদের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করার...

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

by skalyanad
মার্চ ২৬, ২০২৪
0

এদেশের শ্রমজীবী মানুষের সস্ত্রশ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনেছে। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ শ্রমজীবী মানুষরা পায়নি। রাজনৈতিক বিভেদ স্বাধীনতাকে...

  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
  • সাংগঠনিক কাঠামো
  • শাখা সংগঠন
  • ট্রেড ইউনিয়ন
  • সংবাদ
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
  • প্রকাশনা
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
  • যোগাযোগ

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.

Design and Developed by Bijoylab IT| Contact:+01818 650864
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • সংগঠন
    • পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সাংগঠনিক কাঠামো
    • কেন্দ্রীয় সংগঠন
    • কেন্দ্রীয় সভাপতি
    • সাধারণ সম্পাদক
    • কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • কার্যকরী পরিষদ
  • শাখা সংগঠন
    • মহানগর
    • জেলা
    • উপজেলা
    • সাংগঠনিক স্তর
    • অঞ্চল
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • সংবাদ
    • সকল সংবাদ
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • অন্যান্য
  • ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম
    • পরিবহন
    • গার্মেন্টস
    • রিকশা
    • কৃষি ও মৎস্য
    • নৌ পরিবহন
    • রেলওয়ে
    • দর্জি
    • ইমারত/নির্মাণ
    • চাতাল
    • স্থল বন্দর
    • দোকান কর্মচারী
    • হকার্স
    • হোটেল কর্মচারী
    • হাসপাতাল শ্রমিক
    • পাটকল শ্রমিক
    • ফার্নিচার
    • তাঁত শ্রমিক
    • বিটিসিএল
    • ব্যাংক কর্মচারী
    • স্টিল এন্ড রি-রোলিং শ্রমিক
    • লোড আনলোড/কুলি
    • অন্যান্য
  • প্রকাশনা
    • নববর্ষ
    • বই
    • পোস্টার
    • বিজ্ঞাপন
    • ক্যালেন্ডার
    • দাওয়াতি স্টিকার
    • লিফলেট
    • স্মারক/স্মরণিকা
    • অন্যান্য
  • দ্বি-মাসিক শ্রমিক বার্তা
  • আর্কাইভ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
  • যোগাযোগ
English

কপিরাইট © 2024 বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন.