পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত ৮ নভেম্বর গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত জালাল উদ্দিন (৪০) গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তার ইন্তেকালে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান।
আজ এক যৌথ বিবৃতিতে, নেতৃদ্বয় মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। তারা প্রত্যাশা করেন শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আন্দোলনে শহীদ মরহুম জালাল উদ্দিন কে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করবেন। নেতৃদ্বয় মরহুমের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনকে ধৈর্য ধরার শক্তি দান করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
নেতৃদ্বয় বলেন, জালাল উদ্দিন, আঞ্জুয়ারা খাতুন ও রাসেল হাওলাদার রাষ্ট্রীয় হত্যার শিকার। রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের হত্যা করা হয়েছে। অবিলম্বে জালাল-আঞ্জুয়ারাসহ সকল পোশাক শ্রমিক হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। খুনিদের কোনো ক্ষমা নেই। তাদের অবশ্যই শাস্তি দিতে হবে।
তারা বলেন, শ্রমিকরা তো কোনো অন্যায় আবদার করেনি। তারা তাদের ন্যায্য মজুরি মালিকদের কাছে দাবি করেছে। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে মালিকরা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার পরিবর্তে পুলিশ দিয়ে শুধুমাত্র গাজীপুরের মাটিতে ৩জন শ্রমিককে দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত শ্রমিক হত্যার সাথে জড়িত কাউকে গ্রেফতারের ন্যূনতম উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আমরা পুলিশের এই অপকর্মের নিন্দা জানাই।
তারা বলেন, প্রধামন্ত্রীর আহ্বান শ্রমিকরা প্রত্যাখান করে রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্নস্থানে শ্রমিক আন্দোলন অব্যাহত আছে। আজকের বাজারে ১২৫০০ টাকায় সংসার কোনোভাবেই চালানো সম্ভব নয়। তা জানা সত্ত্বেও কাঁচের গ্লাসের আড়ালে বসে শ্রমিকদের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে একদল সরকার সমর্থক মানুষ অবাস্তব বেতন-ভাতার প্রস্তাব দিয়েছে।
আমরা আন্দোলন শুরুর আগেই থেকে বলে আসছি, শ্রমিকরা মালিক হতে চায় না। তারা দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পরে বাচঁতে চায়। এটি তাদের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার। কিন্তু রাষ্ট্র শ্রমিকদের সাংবিধানিক অধিকার বাস্তবায়নের থেকে শ্রমিকের বুকে গুলি চালাতে বেশি পারঙ্গম।
আমরা সরকার ও মালিকদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, নিহত শ্রমিকদের রক্তের দাগ মুছে যাওয়ার আগেই তাদের খুনিদের বিচার করুন। শ্রমিকদের সকল ন্যায্য দাবি মেনে নিন। সদ্য বন্ধকৃত সকল কারাখানা খুলে দিন। শ্রমিকদের আপন ভাবুন, তারা তো আপনাদেরই ভাই-বোন।